শুভশ্রী মৈত্র, কলকাতাঃ
তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতোর গ্রেপ্তারে প্রধান ভূমিকা শুভেন্দু অধিকারীরই— সরাসরি অভিযোগ করলেন ছত্রধরের স্ত্রী নিয়তি মাহাতো। নিয়তির দাবি, এর আগে জেরার নামে গোটা পর্বে এনআইএ তাঁর স্বামীর উপরে রাজনৈতিক চাপ বজায় রেখেছিল। একই সঙ্গে ছত্রধরের গ্রেপ্তারের পরে তৃণমূলের ভূমিকা নিয়েও অসন্তুষ্ট নিয়তি।
সংবাদ মাধ্যমকে নিয়তি বলেন, ‘‘জঙ্গলমহলের ভোট শেষে আমার স্বামীর নন্দীগ্রামে প্রচারে যাওয়ার কথা ছিল। উনি যাতে না যেতে পারেন, সে জন্য শুভেন্দু অধিকারীর পরিকল্পনায় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহার করে আমার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’শনিবার রাত তিনটে নাগাদ ছত্রধরের আমলিয়ার বাড়িতে যায় এনআইএ-র ৪০ জনের দল। অভিযোগ, গামছা ও স্যান্ডো গেঞ্জি পরা অবস্থায় ছত্রধরকে চ্যাংদোলা করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় তারা।
ছত্রধরের স্ত্রী বলেন, ‘‘লালগড় থানার পুলিশকে না জানিয়ে এনআইএ-র দিল্লি থেকে আসা অফিসারেরা কোবরা বাহিনীকে নিয়ে চড়াও হন। আমাকে অ্যারেস্ট মেমো দেখাননি। কী কারণে স্বামীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেটাও বলেননি। উল্টে আমাদের গালিগালাজ করা হয়।’’
আরও পড়ুনঃ সিবিআই দপ্তরে হাজিরা কয়লাপাচার কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালার
ছত্রধরের আইনজীবী কৌশিক সিংহ জানিয়েছেন, এনআইএ-র বিরুদ্ধে লালগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন নিয়তি।নিয়তির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির সভাপতি তুফান মাহাতো বলেন, ‘‘এনআইএ একটি স্বাধীন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। তারা কী করবে সেটা তাদের বিষয়। ছত্রধরের স্ত্রী ভয় পেয়ে বিজেপিকে জড়িয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন।’’
পুরনো খুনের মামলায় পাঁচ বার এনআইএ-র জেরার মুখোমুখি হয়েছেন ছত্রধর। নিয়তির দাবি, প্রতিবার জেরার পরে ফিরে ছত্রধর বলতেন, তদন্তকারীরা শুধু রাজনৈতিক বিষয়েই প্রশ্ন করতেন। বলতেন, তৃণমূল করা চলবে না, বিজেপি করতে হবে। লালগড়ে নড্ডার সভায় লোক হয়নি, অথচ তৃণমূলের সভায় ভাল জমায়েত হচ্ছে, এ জন্যও ছত্রধরকে দায়ী করেন এনআইএ-র অফিসাররা।
আরও পড়ুনঃ নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল প্রার্থীর কনভয়ের সামনে ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি বিজেপি কর্মীদের
তবে ছত্রধর গ্রেপ্তার হওয়ার পরে তৃণমূলের জেলা ও ব্লক স্তরের নেতারা কোন যোগাযোগ না করায় ব্যথিত নিয়তি। তিনি বলেন, ‘‘শ্যামলকে (লালগড় ব্লক তৃণমূল সভাপতি শ্যামল মাহাতো) উনি এত স্নেহ করেন, সেও খোঁজ নিতে এল না। জেলা সভাপতিও খোঁজ নেননি। শুধু জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাহাতো রবিবার বাড়িতে এসেছিলেন।’’
এ প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র সুব্রত সাহা বলেন, ‘‘সদ্য ভোট মিটেছে। তাই হয়তো সবাই নিয়তিদেবীর বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিতে পারেননি। তবে দল ওঁর পাশে রয়েছে।’’ শ্যামল বলছেন, ‘‘সময় করে উঠতে পারিনি। দু’-একদিনের মধ্যেই যাব।’’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584