শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
একদিকে শুক্রবারই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, চিন স্বৈরতান্ত্রিক, তাদের ভারতের বাজার থেকে বার করে দিতে হবে। আবার অন্যদিকে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, ওই দিনই নবান্ন থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নতুন বেশ কয়েকটি সংস্থাকে পশ্চিমবঙ্গে মদের হোম ডেলিভারির অনুমতি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। চিনা নিয়ন্ত্রিত সংস্থাকে শুক্রবারই পশ্চিমবঙ্গে মদের হোম ডেলিভারির অনুমতি দিয়েছে নবান্ন। প্রশাসনের এই দ্বিচারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খোদ প্রশাসনের অন্দরেই। যদিও সরাসরি কেউ সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে চাননি।
প্রসঙ্গত, লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনার আগ্রাসনে ভারতের ২০ জন জওয়ান শহিদ হওয়ার পর দেশ জুড়ে চিন বিরোধিতার ঝড় উঠেছে। ইতিমধ্যে রাস্তায় নেমে চিনা পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন অনেকে। বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিজেপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বিক্ষোভে সরাসরি সামিল হতে দেখা না গেলেও লাদাখে চিনা হামলার বিরোধিতা করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকেও।
আরও পড়ুনঃ দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার পথে জাহাজ থেকে উধাও বাঁশদ্রোণীর ইঞ্জিনিয়ার
লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের কূটনৈতিক নীতি নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রীর ডাকা সর্বদল বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলেন, স্বৈরতান্ত্রিক চিনকে ভারতের বাজারে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। ভারত জিতবে, হারবে চিন।’ কাকতালীয় ভাবে ওই দিনই আরও বেশ কয়েকটি সংস্থার সাথে চিনা নিয়ন্ত্রিত সংস্থাকে পশ্চিমবঙ্গে মদের হোম ডেলিভারির অনুমতি দিয়েছে নবান্ন।
সংবাদসংস্থা রয়েটার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, শুক্রবার নবান্ন থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নতুন বেশ কয়েকটি সংস্থাকে পশ্চিমবঙ্গে মদের হোম ডেলিভারির অনুমতি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এর মধ্যে রয়েছে মার্কিন সংস্থা ‘আমাজন’, অনলাইন রিটেল স্টোর ‘বিগ বাস্কেট’। প্রসঙ্গত, ‘বিগ বাস্কেট’ -এ প্রধান বিনিয়োগকারী চিনা সংস্থা ‘আলিবাবা।’
আরও পড়ুনঃ করোনা চিকিৎসায় রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতালের তথ্য প্রকাশ করে চালু সরকারি ওয়েবসাইট
তথ্য অনুসন্ধান করে দেখা গিয়েছে, ‘বিগ বাস্কেট’-এ রয়েছে একাধিক বহুজাতিক ও আর্থিক সংস্থার বিনিয়োগ। এদের মধ্যে সব থেকে বড় বিনিয়োগ রয়েছে ‘আলিবাবা’। কোম্পানিটির মোট বাজার মূল্য এখন প্রায় ১.৮ বিলিয়ন ডলার।
গত মাস থেকেই পশ্চিমবঙ্গে মদের হোম ডেলিভারির অনুমতি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই মর্মে নবান্নের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বিভিন্ন অনলাইন অ্যাপ কোম্পানির। জোম্যাটো, সুইগির মতো বেশ কিছু কোম্পানি খাদ্য সরবরাহের সঙ্গে সরবরাহ করে মদও। ছাড়পত্র পেয়েছে স্পেনসার্স, হিপবারও। সূত্রের খবর, সম্প্রতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে আমাজন ও বিগ বাস্কেটের সঙ্গেও। তারপর তা নবান্ন থেকে বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশও করা হয়েছে। এর মধ্যে আমাজন মার্কিন কোম্পানি।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভারতের অনলাইন রিটেল বাজারে আমাজনকে আটকাতে বিগ বাস্কেটে বিনিয়োগ করছে চিনা সংস্থা ‘আলিবাবা’। কিন্তু এ বিষয়ে কোনও তথ্য যাচাই না করেই দায়িত্ব দিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই নতুন কোম্পানিগুলিকে। এর ফলে উলটে মুখ পুড়েছে প্রশাসনের। যদিও নবান্নের তরফে দাবি, ওই সংস্থাগুলির সঙ্গে কোনও প্রত্যক্ষ চিনা যোগ নেই। সব দিক খতিয়ে দেখেই তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। একই কথা বলেছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পানীয় নিগমের কর্তারাও। চিনা সংস্থার সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগ মানতে নারাজ তাঁরাও।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584