সুদীপ পাল,বর্ধমানঃ
দীপাবলীর সময় বাঙালির ঘর মাটির প্রদীপের আলোয় আলোকিত হত।এখন সময় পাল্টেছে মানুষের ধ্যান ধারনাও পরিবর্তন হয়েছে।মাটির প্রদীপ ক্রমশই ব্রাত্য হয়ে যাচ্ছে সভ্য এই সমাজ থেকে।আজকের ডিজিটাল যুগের ডিজিটাল দীপাবলিতে তাই ভরসা ডিজিটাল এলইডি লাইট থেকে রকমারি আরও কত কি।
পূর্ব বর্ধমানের মৃৎশিল্পীদের সাথে কথা বলে জানা গেল, এক সময় দীপাবলীর তারিখের দিকে নজর দিয়ে থাকতেন মৃৎশিল্পীরা।কারণ বছরে ব্যবসার সবথেকে বড় সময় ছিল এটি।তবে বিগত কয়েক বছরে দেখা যাচ্ছে যে দীপাবলিতে আর আলাদা করে বেশি বিক্রির কোন ব্যাপার নেই।এমনিতেই সারা বছর মাটির প্রদীপ টুকটাক বিক্রি হলেও তা দিয়ে এমন বেশি কিছু আয় হয় না যে সংসারের ভরণপোষণ চলে।তবু যাঁরা ভালোবেসে এই পেশায় রয়েছেন তাদের বক্তব্য, প্রদীপ বিক্রি করে সংসার চালানো খুব কষ্টকর।একথাও ঠিক যে সাধারন প্রদীপের যে চাহিদা ক্রমশই নিম্নমুখী তবে নকশা করা রঙিন বাহারি প্রদীপ যেগুলি থাকে তার চাহিদা বাজারে তৈরি হচ্ছে।প্রদীপের দাম কিরকম থাকে? উত্তরে জানা যায় প্রদীপ এর নির্দিষ্ট কোনো দাম নেই।প্রত্যেকটি প্রদীপের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী তার দাম নির্ধারিত হয়।তবে সাধারণভাবে বলা যায় এক টাকা থেকে দেড়শ টাকার মধ্যেই প্রদীপ পাওয়া যায়।বর্ধমানের গৃহবধূ অনিন্দিতা তালুকদার বলেন, শুধু প্রদীপ কিনলে তো হল না তার সাথে রয়েছে তেল এবং সলতে পাকানোর ব্যাপার।এই বিষয়টি অনেকেই এড়িয়ে চলতে চান।তাই তাঁরা ঝুঁকছেন এলইডি লাইট অথবা মোমবাতির ওপর।মাটির প্রদীপ ক্রমশই ব্রাত্য হচ্ছে কিন্তু যদি কখনো সন্ধ্যা রবি প্রশ্ন করেন কে আমার কাজ করবে তখন কি হবে? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাই লিখেছেন,
‘কে লইবে মোর কার্য, কহে সন্ধ্যারবি।
শুনিয়া জগৎ রহে নিরুত্তর ছবি।
মাটির প্রদীপ ছিল, সে কহিল, স্বামী,
আমার যেটুকু সাধ্য করিব তা আমি।“
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584