কেন্দ্রীয় বাহিনীর উর্দি পরিয়ে বাইরের লোক ঢোকানোর ছক বিজেপি-র, নন্দীগ্রামে অভিযোগ মমতার

0
53

শুভশ্রী মৈত্র, ওয়েব ডেস্কঃ

১ এপ্রিল ভোট নন্দীগ্রামে। আজ শেষ দফার প্রচারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সম্মুখ সমরে মমতা। শেষ দফার প্রচার যুদ্ধে শুভেন্দু পুরোদমে লড়ছেন, এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ছেন না মমতা।

mamata banerjee | newsfront.co
ফাইল চিত্র

নন্দীগ্রাম ব্লক ২-এ সোমবার প্রথম সভা মমতার। বয়াল ২ নম্বর ব্লকে দ্বিতীয় সভা ও আমদাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে মমতার তৃতীয় সভা রয়েছে।শেষ দফার প্রচারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলেন,সকাল সকাল ভোট দিন। ওরা গুন্ডা নিয়ে ভয় দেখাবে। মনে রাখবেন, যাঁরা ভয় পায়, তাঁরাই ভয় দেখায়।

তিনি আরো বলেন,”আমিও দেখি মা বোনেদের শক্তি বড় না বিহার, উত্তরপ্রদেশের গুন্ডাদের শক্তি বেশি। বাংলার যে কোনও জায়গা থেকে দাঁড়াতে পারতাম। কিন্তু আমি নন্দীগ্রামে এলাম, কারণ এটি আন্দোলনের ভূমি। আমি আন্দোলনকে, লড়াইকে স্যালুট করতে চাই। এটা আমার প্রিয় জায়গা ও পবিত্র জায়গা। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আমি দাঁড়াব নন্দীগ্রামে। সবাই নাচতে শুরু করল। আমি তাই কথা রাখলাম। কারণ, আমি কথা দিলে কথা রাখি। আমার একটা, দুটো, তিনটে জায়গায় দাঁড়ানোর দরকার নেই। এখানেই দাঁড়াব, এখানেই জিতব, সরকার গড়ব এখানেই।”

আরও পড়ুনঃ নন্দীগ্রামে গুলি চালনার ঘটনায় অধিকারী পরিবারই ষড়যন্ত্রকারীঃ মমতা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন যে, তৃণমূল কংগ্রেস থাকলে সব কাজ হবে। খেলায় জিততে হবে। গুন্ডারা গুন্ডামি করলে হাতা খুন্তি, ঝাড়ু দিয়ে আদর করে দিতে হবে। আপনারা মা বোনেরা আন্দোলন করেছে, তা আমরা জানি। দিনের পর দিন নন্দীগ্রামে মানুষকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। রাতের বেলায় ঘুমনোর উপায় ছিল না।

২৬-২৭ জন মানুষ মারা গিয়েছেন। যারা মেরেছিল, তাদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে ভোট কেড়ে নিতে। নব সামন্ত চাইলে ভোট দেবেন? মা বোনেরা হাতা-খুন্তি নিয়ে বেরিয়ে আসবেন। কড়াইয়ে লুচি পড়বে, আর ফুলবে, আর বিজেপি জ্বলবে। নরেন্দ্র মোদীরা কৃষকদের সব অধিকার কেড়ে নিতে চায়, কিন্তু কেড়ে নিতে দেবেন না।

মমতা বলেন,”১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফার ভোটে তৃণমূলের এজেন্টরা সতর্ক থাকুন। টাকা দিলে খরচ করে দিন। সবাই মাস্ক পরে ভোট কেন্দ্রে যাবেন। মাস্ক না পরে গেলে দিল্লির কিছু পুলিশ ভোট দিতে দিচ্ছে না। মেশিন খারাপ করে দিচ্ছে। তখন ছায়ায় দাঁড়াবেন, অপেক্ষা করবেন, ভোট দেওয়ার জন্য।

ভিভিপ্যাট মেশিনে কোথায় ভোট পড়ছে খেয়াল রাখুন। গণনার দিন কারও থেকে কিছু খাবেন না। একমাস পাহারা দিতে হবে মেশিন। কোনও পরিচিত বন্ধু হলেও ছাড়বেন না।”তাঁর দাবি, বিজেপি ভিনরাজ্যের পুলিশের উর্দি কিনছে, বিজেপি-র গুন্ডারা মোটরবাইক নিয়ে গুন্ডামি করছে। কমিশনের অধীনে পুলিশ কাজ করছে। তৃণমূলেরও তিনজন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ ভোটের আগে নন্দীগ্রামে শেষ প্রচারে রোড শো শাহের

তিনি বলেছেন, “মে মাসের পর থেকে পড়ুয়াদের স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড করে দেওয়া হবে। বিনা পয়সায় স্বাস্থ্য, ৫ লক্ষ টাকার কার্ড। দুয়ারে সরকার প্রতি বছর হবে। দরখাস্ত করলে সরকারের আধিকারিকরা কাজ করে দেবেন না করলে প্রশাসন শাস্তি দেবে”। নন্দীগ্রামে তাঁর অফিস থাকবে, সেখানেই প্রয়জনীয় যাবতীয় সরকারি কাজ করতে পারবেন অধিবাসীরা, এমনটাই বলেছেন তিনি।

নন্দীগ্রামে ১৪ বছর আগেকার গুলি চালানোর ঘটনা নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করে মমতা বলেন, “ও সিপিএমকে ডেকে নিয়ে এসেছিল। সে দিন সিপিএমের কর্মীরা পুলিশে পোশাক পরে গুলি চালিয়েছিল নন্দীগ্রামে। আজকেও তাই করছে। পুলিশ সাজিয়ে গোলমাল পাকাবে। কেউ টাকা দিচ্ছে দেখলে খবর দিন, আমি পুরস্কার দেব।”

কাঁথিতে তৃণমূলের হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন অখিল গিরি, আর কেউ ভোটে দাঁড়ায়নি। ওঁরা ছিলে না তৃণমূলের জন্মের সময়ে। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে সব জিততে শুরু করল। একদিন কোথাও ঠাঁই হবে না। আমি গণতন্ত্রের মানুষ, গণতন্ত্রের হয়ে লড়াই করি। পাঁচ দিন নন্দীগ্রামে থেকে, ভোট মিটিয়ে যাবো। বাইরে থেকে গুণ্ডা নিয়ে আসছে। কাঁথিতে উত্তরপ্রদেশের ২০ জন গুণ্ডা ধরা পড়েছে।

আরও পড়ুনঃ ভোট-বাজারে ঘোড়া কেনাবেচা, বাংলার ইতিহাসে অচেনা ট্রেন্ড

পায়ে চোট লাগার পর থেকেই ডাক্তারের নির্দেশে হুইল চেয়ারে ঘুরতে হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এ নিয়ে তিনি বলেন, “আমার হাঁটতে ভাল লাগে। সেই মানুষটাকে হুইল চেয়ারে বসে যেতে হচ্ছে। মনের মধ্যে একটা চাপ পড়ে। কিন্তু আমি ভেবে দেখেছি, আমার মা বোনেরা যদি আসতে পারেন, আমিও আসতে পারব।”

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here