শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
গরু পাচার কাণ্ডে কিংপিন এনামুল হককে প্রথমে আসানসোল আদালতে আত্মসমর্পণ এবং তারপরে সিবিআই হেফাজতে নেওয়া সম্ভব হলেও কয়লা পাচার কান্ডের কিংপিন অনুপ মাঝি ওর ওরফে লালার এখনো নাগাল পাননি সিবিআই গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর, এই মুহুর্তে মুম্বাইয়ের ওরলিতে রয়েছেন অনুপ মাঝি ওরফে লালা। এরমধ্যে তাকে একবার ডেকে পাঠানো হলেও তিনি হাজিরা দেননি।
এদিকে অনুপ মাঝি ওরফে সম্বন্ধে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। একদিকে বড় বড় পুলিশ অফিসার থেকে বিএসএফ কমান্ড্যান্টদের ম্যানেজ করে গরু পাচার করত এনামুল হক, আর ঠিক তেমনই কয়লা পাচার করার জন্য অনুপ মাঝি ওরফে লালাকে মাসে ৪০ কোটি টাকারও বেশি খরচ করতে হত। এবং সেটা শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের খুশি রাখার জন্য। লালার বাড়ি ও অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া খাতা ও তার সাগরেদদের জেরা করে এমনই তথ্য পেয়েছেন সিবিআই গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুনঃ ধরা পড়ল মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে পলাতক দ্বিতীয় বন্দি
তদন্তের শুরুতেই লালার অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া খাতা, ডায়েরি ও নথি ঘেঁটে দেখে গোয়েন্দারা মাসের খরচ হওয়া ৪০ কোটি অঙ্কের কথা জানতে পেরেছেন। একই সঙ্গে কার মাধ্যমে কাদের কাছে সেই টাকা পৌঁছত, তাও জানতে পেরেছে সিবিআই। কয়লা পাচার কাণ্ডের তদন্তে ইতিমধ্যেই লালার এক ঘনিষ্ঠ সাগরেদ নীরজ সিংহকে জেরা করেছে সিবিআই।
আরও পড়ুনঃ দলের ভাঙন নিয়ে পিকে’কে সরাসরি জিজ্ঞাসা মুখ্যমন্ত্রীর, প্রশ্নের মুখে আইপ্যাক টিম
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, এই নীরজই নগদে সমস্ত টাকা পৌঁছে দিত প্রভাবশালীদের কাছে। যে এলাকায় পাচারে সমস্যা হত, তার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রী আধিকারিকদের টাকা পৌঁছে দিত নীরজ। ইতিমধ্যেই তাঁর বয়ান রেকর্ড করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই তারা সমস্ত নাম সামনে আনতে প্রস্তুত নন।
সিবিআই জানতে পেরেছে, এই সমস্ত টাকাই রাজনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যবহার হত। তবে একসঙ্গে অনেক টাকা আনা হলে সন্দেহ হতে পারে। তাই গোটা মাস জুড়ে দফায় দফায় ব্যাগভর্তি টাকা আসত। সেই টাকা পাওয়ার পর ব্যাগে ভরে বাইকে দক্ষিণ কলকাতার বেশ কয়েকটি ঠিকানায় পৌঁছে দিত নীরজ। প্রভাবশালীদের প্রত্যেক মাসে টাকা পৌঁছে দেওয়াই কাজ ছিল তাঁর। এবার সেই প্রভাবশালীদের সম্পর্কেও খোঁজ নিচ্ছে গোয়েন্দারা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584