শিবশঙ্কর চ্যাটার্জ্জী, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ
লকডাউনের জেরে ব্যাপক ফলন সত্বেও ক্ষতির মুখে মিষ্টি কুমড়া চাষিরা।মিষ্টি কুমড়ার মিষ্টি হাসি এখন ঠিক যেন তেতো। এতদিন মিষ্টি কুমড়ার চাষ করে সুদিনের স্বপ্ন দেখতো বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদার অঞ্চলের দুর্লভপুর, দেবীপুর ও শহীদপুর সহ অনান্য এলাকার চাষিরা।
বর্তমানে মিষ্টি কুমড়া চাষ হচ্ছে লাভজনক সবজি। অন্য ফসলে যত বেশি পরিশ্রম দিতে হয় এখানে তেমন শ্রম, সেচ বীজ কিংবা কীটনাশক স্প্রে করতে হয় না। যৎ সামান্য খরচেই এই কুমড়া চাষ করা যায় বলেই, চাষিরা লাভবানের আশায় এখন এই চাষের দিকে ঝুকছে। তা ছাড়াও মিষ্টি কুমড়ায় পটাশিয়াম ছাড়াও এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ ও বি পাওযা যায়।
এমনকি মিষ্টি কুমড়ায় রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে, চোখের জ্যোতি বাড়ায়। এ ছাড়া আঙ্গুলের নখ সুন্দর রাখে। তাই এই ফলনে এত বেশি গুনাগুন থাকার পাশাপাশি সারা বছর বাজারেতেও এর চাহিদা থাকে প্রচুর।
কিন্তু করোনা থাবা বসানোয় এবার সেই চাষের সাথে যুক্ত চাষিদের সামনে নেমে আসে অন্ধকার।
যদিও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিঘা প্রতি আট হাজার টাকা লগ্নি করে মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করেছেন প্রায় ৩০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে তিনি আয় করেছেন প্রায় ২০- ২২ হাজার টাকা। সে কারনেই বাম্পার ফলনে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় মিষ্টি কুমড়ার চাষে ঝুঁকছেন এলাকার চাষিরা। মোটামুটি এক বিঘা জমিতে প্রায় ১০০০ মিষ্টি কুমড়ার ফলন হয়ে থাকে। প্রতিটি কুমড়া প্রায় ১০ কেজি থেকে ১৫-১৬ কেজি মিষ্টি কুমড়ার ফলন হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ মালদহের মোথাবাড়ি এলাকা থেকে ধৃত কুখ্যাত দুষ্কৃতি
গত বছর প্রথম দিকে পাইকাররা এই কুমড়া হাজার ষোলোশো টাকা কুইন্টাল দরে ক্রয় করেন।পরে তা হাজার বা ৮০০ এবং ৯০০ টাকা দরে এসে ঠেকে।তাই মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করে চাষ আবাদ ও শ্রমের খরচ বাদ দিলে ভাল টাকার লাভের মুখ দেখতে পাওয়া যাওয়ায়, এখন অনেকেই এই চাষের দিকে ঝুকতে শুরু করছে এই অঞ্চলের চাষিরা।
তবে এখন সব চেয়ে বড় কথা মিষ্টি কুমড়া চাষ করে গ্রামের কৃষকদের হাটে হাটে নিয়ে ঘুরতে হয় না। শহরে ব্যবসায়ীরা গ্রামে গিয়ে মিষ্টি কুমড়া সংগ্রহ করে বাজারজাত করছে। যদিও অনান্য বার এই সময় গ্রাম গুলিতে কুমড়ো কিনতে জেলার তো বটেই, বাইরের বিভিন্ন রাজ্য থেকে পাইকাররা এসে ভিড় জমায়।কিন্তু এবার লকডাউনের জেরে সেই পাইকারদের ভিড় না জমায়, কোন মতে দিন কাটছে তাদের।
তাই এই চাষে যুক্ত চাষিরা লকডাউনের জেরে বেচা কেনা বন্ধ থাকায় জমির উৎপাদিত ফসল পচে নষ্ট হওয়ার আশংকা করেই, এই চাষের সাথে যুক্ত চাষিদের দিকে সরকারি সহয়তার হাত বাড়িয়ে দেবার আবেদন জানিয়েছেন।
যদিও তাদের দাবি সরকার তো লকডাউন নিয়ে সবাইকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে আমাদের দিকে কেন সাহায্যের হাত বাড়াবে না। আর না বাড়ালে লোকসানের মুখে পড়ে চাষিরা। এমনকি পরিবার নিয়ে অনাহারে দিন কাটাতে বাধ্য হবে বলে তাদের আশংকা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584