সিমা পুরকাইত,দক্ষিণ ২৪ পরগনাঃ
সমুদ্র-নদী থেকে আহরিত মৎস্য সম্পদে জীবিকা চলে লাখো মানুষের। শুঁটকি উৎপাদন, কাঁকড়া চাষ, চিংড়ি চাষ,মাছ চাষ করে বহু মানুষ বেঁচে আছে। দ্বীপের পলি মাটিতে কৃষি আবাদে বহু মানুষের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। বদলে দিয়েছে বুলবুল ও আমপান ঘূর্ণিঝড় এই সুন্দরবনকে।
দিশেহারা মানুষ, দিশেহারা জনজীবন। দক্ষিণ সুন্দরবনে পান অর্থকরী ফসল উৎপাদনেও বিপ্লব ঘটেছে বিগত সময়ে। সমুদ্র সৈকতের খনিজ বালি এই জনপদের অর্থ উৎপাদনের আরেক সম্ভাবনা। পর্যটন খাতেও উপকূল জুড়ে রয়েছে অফুরন্ত সম্ভাবনা।
আরও পড়ুনঃ পূর্বস্থলীতে জমি জটে অঙ্গনওয়াড়ি বিল্ডিং তৈরি না হওয়ায় সমস্যায় পড়ুয়ারা
উপকূলজুড়ে শুঁটকি উৎপাদনের বিরাট সম্ভাবনা থাকলেও পদে পদে রয়েছে বাধা। সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব আর বাজার জাতকরণে বহুমূখী সমস্যা রয়ে গিয়েছে। সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই শিল্পে আরও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ রয়েছে ঠিকই, কিন্তু করোনা মহামারিতে নিঃস্ব করে তুলছে শুঁটকি ভরসায়ি মৎসজীবীদের জীবন। দক্ষিণ সুন্দরবনের পূর্ব উপকূল,দক্ষিণ উপকূল ও পশ্চিম উপকূলের বিভিন্ন স্থানে শুঁটকি উৎপাদনের ক্ষেত্র রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ মেদিনীপুরে বিদ্যাসাগর সেন্ট্রাল কো -অপরেটিভ ব্যাংকে চুরি,চাঞ্চল্য
যাদের মধ্য অন্যতম বকখালির অম্রাবতী,কাকদ্বীপের লট নম্বর আট ঘাট,কে প্লট,জি প্লট,এল প্লট,রায়দিঘি,সাগরদ্বীপ,পাতিবুনিয়ার বিভিন্ন স্থানে ব্যবসায়ীরা সংঘবদ্ধভাবে সামুদ্রিক মাছ থেকে শুঁটকি তৈরির উদ্যোগ নেন। বিভিন্ন এলাকায় শীত মৌসুম আসার আগেই শুঁটকি উৎপাদনের ধুম পড়ে। শুঁটকি তৈরির জন্য মাছ ধরা, মাছ আনা, মাছ বাছাই, মাছ রৌদ্রে দেওয়া ও তার প্রয়োজনীয় পরিচর্যাসহ বিভিন্ন কাজে যুক্ত হয় হাজারো নারী-পুরুষ ও শিশু।
আরও পড়ুনঃ ফালাকাটায় একই পরিবারের ৩ সদস্য নিখোঁজ,চাঞ্চল্য
ব্যবসায়ীরা জেলেদের দাদন দিয়ে নেমে পড়েন মৌসুমী বাণিজ্যে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে উপকূলের বিভিন্ন স্থান থেকে জেলেরা যেতে শুরু করে। জীবীকার তাগিদ থাকলেও সেখানে তাদের সমস্যার অন্ত নেই। শুঁটকি মৌসুম সামনে রেখে প্রত্যেক জেলেকে মহাজনদের কাছ থেকে দাদন নিতে হয়। এই টাকা দিয়ে জাল কেনা, নৌকা মেরামত ইত্যাদি কাজ চলছে।
আরও পড়ুনঃ বহরমপুরে কালী মূর্তির চোখে জল, অলৌকিকতার দাবি উড়াল বিজ্ঞান মঞ্চ
আরও পড়ুনঃ জল্পনায় জল ঢেলে সুব্রত জানালেন করোনার জেরে স্থগিত মমতার নন্দীগ্রামের সভা
কিন্তু দিনে দিনে শুঁটকি উৎপাদনে যে বিপদ বাড়ছে, তাতে এই পেশায় টিকে থাকা নিয়েই শঙ্কা। শুঁটকি মৌসুমে সমুদ্র থেকে আহরিত লইট্টা, ফালিসা, হাঙ্গর, ছুরি মাছ বা চেলা মাছ, চান্দাকাটা, চিংড়ি, নোনা ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের শুঁটকি করা হয় বকখালির অম্রাবতীর সমুদ্র সৈকতে।
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে, জেলেদের দাদন মুক্ত করা গেলে, শুঁটকি বাজারজাতকরণের সমস্যাসমূহ দূর করতে পাড়লে উপকূলের শুঁটকি বিরাট সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে। করোনায় ত্রিপুরা, বাংলাদেশ,অাসামে প্রায় বন্ধ দক্ষিণ সুন্দরবনের শুঁটকি মাছ। ফলে ঘুরে দাঁড়াতে না পাড়লে বন্ধ হবে কারবার ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584