শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
দীর্ঘদিন হাসপাতালে সঙ্গে ফোনে কথা বলার পরেও অনেক ক্ষেত্রে যেমন হাসপাতালে গিয়ে পরিজনরা দেখতে পান, তিনি মারা গিয়েছেন কয়েকদিন আগেই। আবার অনেক ক্ষেত্রে উল্টো ঘটনা ঘটে। ঠিক যেমন হল খড়দহের বাসিন্দা শিবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে।
পরিবারের লোকজন হাসপাতাল থেকে তার মৃত্যুর খবর পেয়ে রীতিমতো শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ফেলেছিলেন। কিন্তু অনুষ্ঠানের একদিন আগেই অ্যাম্বুলেন্স এনে নামিয়ে দিলো সুস্থ রোগীকে। শোকের আবহ আনন্দের আবহে বদলে গেলেও হাসপাতালে গাফিলতি নিয়ে সরব হয়েছেন সকলেই।
করোনা কালে বিশেষ আত্মীয়স্বজন আসার সম্ভাবনা নেই। তাই বাড়ির ছাদে ছোট করে বাঁধা হয় প্যান্ডেল। ছেলে সবে প্রস্তুত হচ্ছেন স্থানীয় দোকান থেকে বাবার বাঁধাতে দেওয়া ছবি আনতে যাওয়ার। এমন সময় অজানা নম্বর থেকে এল ফোন। তা কানে দেওয়া মাত্রই হতভম্ব হয়ে বিছানায় কিছুক্ষণ বসেও পড়েন তিনি।
আরও পড়ুনঃ বিল বাকি, কোভিড আক্রান্তের দেহ আটকে রাখার অভিযোগ পরিবারের
বাড়ির বাইরের লোকজন তখন কিছু বুঝে উঠতে পারেননি।আচমকাই এসে দাঁড়াল একটি অ্যাম্বুল্যান্স। তারপরই দেখা গেল দরজা খুলে নেমে আসছেন শিবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। খড়দহের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের তিনিই কর্তা। তাঁরই শ্রাদ্ধের আয়োজন করে ফেলেছিলেন ছেলে। কিন্তু আচমকা ‘মৃত’ মানুষ ফিরে আসায় অবাক তাঁর শিবনাথবাবুর পরিজন ও প্রতিবেশীরা।
আরও পড়ুনঃ জেলা পরিষদ অফিসের সামনে রিকশা চালকের মৃতদেহ উদ্ধার, চাঞ্চল্য মেদিনীপুরে
জানা গিয়েছে, গত ১১ নভেম্বর করোনা আক্রান্ত শিবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। তার ঠিক দু’দিন পর অর্থাৎ ১৩ নভেম্বর হাসপাতাল থেকে রোগীর পরিবারের কাছে একটি ফোন আসে। তাতেই জানানো হয় শিবনাথবাবুর কোভিডের বলি হয়েছেন। দূর থেকে নাকি মৃতদেহও দেখানো হয় শিবনাথবাবুর পরিজনদের। তারপরই শ্রাদ্ধের আয়োজন করেন তাঁর ছেলে। কিন্তু এদিন জানা যায়, আদতে যিনি মারা গিয়েছেন তাঁর নাম মোহিনীমোহন গোস্বামী, বিরাটির বাসিন্দা।
আরও পড়ুনঃ সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে কেশপুরে মিছিল সিপিএমের
তার সঙ্গে শিবনাথবাবুকে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে। শিবনাথবাবু জানান, শুক্রবার সন্ধেয় তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে বিরাটির দিকেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তবে তিনি খড়দহের বাসিন্দা বলে জানান। তখনই বোঝা যায় কোথায় ভুল হয়েছে। এদিকে মোহিনী মোহন বাবু বাড়ির লোক এখনও জানেন যে তাদের রোগী বেঁচে রয়েছেন।
কিন্তু তিনি বাস্তবে মারা গিয়েছেন বেশ কয়েকদিন আগে। তবে এই ঘটনায় বিস্মিত স্বাস্থ্য দপ্তর উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে। তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584