ভাগরথীর ভাঙ্গন ঘিরে পঞ্চায়েতে তরজা

0
92

নিজস্ব সংবাদদাতা,বর্ধমানঃভোট আসে ভোট যায় কিন্তু ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা হয় না । অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের । প্রতিবছর ভাঙন অব্যাহত । এবছরেও  কিছুদিন পরপরই ফের ভাগীরথীর ভাঙনের ফলে পূর্বস্থলী 2 নম্বর ব্লকের পাটুলিতে ভাগীরথীর ভাঙন ঘিরে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দীর্ঘদিনের ভাঙন আতঙ্কে নতুন করে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
পাটুলী গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন দাসপাড়া এলাকায় নতুন করে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে নতুন করে ভাঙনের কবলে পড়ে ভাগীরথীর জলে তলিয়ে গেছে বিঘের পর বিঘে জমি ও কয়েকটি বসতবাড়ি। এর আগেও একাধিকবার ভাঙ্গন শুরু হয়ে গেছে পূর্ব স্থলী 2 নম্বর ব্লক জুড়ে। কিন্তু ভাঙনরোধে সেরকম একটা ব্যবস্থা হয়নি ঐ সমস্ত এলাকায়। ব্যাপকহারে ভাঙন শুরু হয়ে গেছে কুঠুরিয়া তামাঘাটা দেবনগর মাজিদা যজ্ঞেশ্বর পুর নয়াপাড়া দামপাল পাটুলি ঝাউডাঙ্গা এলাকায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ যে ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পূর্ব তম থেকে শুরু করে বর্তমান সরকার।
এই ভন্ডদের কাজ নিয়ে উঠেছে নানা রকম দুর্নীতির বিষয়। আসন্ন ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে এলাকার মানুষ জানিয়েছেন যে ভাঙনরোধে কাজ না হলে তারা ভোট বয়কট করবেন।
ভাঙন আতঙ্কে ভুগছেন এলাকার বাসিন্দা স্বপন দাস শংকর দাস অভয়দাস দিন উদাস প্রমূখ আর কিছুটা বলেই তাদের সব জমি এবং বসতভিটে নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে শেষ হয়ে যাবে তাই সরকার যদি তড়িঘড়ি দ্রুত ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করেন তাদের সর্বনাশ হয়ে যাবে বলে বৃহস্পতিবার অকপটে স্বীকার করলেন।
এলাকার মানুষের অভিযোগ যে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে এই এলাকার ভাঙ্গন অব্যাহত। পূর্বতন সরকারের কেন্দ্রের সরকার ও বামফ্রন্টের অসীম দাশগুপ্ত এলাকা ঘুরে ভাঙনরোধে ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও ভাঙ্গন রোধে কোন পাকাপোক্ত ব্যবস্থা হয়নি বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার ওই এলাকা ঘুরে দেখা গিয়েছে যে নোয়াপাড়া খেলার মাঠ ভাগীরথী থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে রয়েছে। দুই বছর আগে থেকেই ভাঙতে ভাঙতে এই জায়গায় এসে গিয়েছে আর কিছুদূর গেলেই তাদের গোটা গ্রামটাই চলে যাবে ভাগীরথীর কবলে। এই সব এলাকায় জানা গিয়েছে যে সেই দপ্তর থেকে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। অর্ধেক অসুখের নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে জমি এবং প্রচুর বাড়িঘর। ফের আবার ভাঙনের কবলে যে সমস্ত এলাকা পড়েছে তার জন্য বরাদ্দ হয়েছিল প্রায় ৪০ লাখ টাকা। গত কয়েক মাস ধরে ফেরাবার ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় এলাকার মানুষ আতঙ্কের মধ্যে পড়েছেন। এলাকার মানুষের অভিযোগ যে তাঁরা নদীর কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়লেও সরকার তাদের দিকে তাকায় নি এবং কোন সাহায্য কিছুই করেনি বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার পূর্বস্থলীর ভাঙন রোধ সম্পর্কে কালনা মহকুমা শাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন যে শেষ দফতরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তড়িঘড়ি করে ব্যবস্থা নেওয়ার। তিনি জানিয়েছেন যে বরষা শুরুর আগেই ভাঙন রোধে সমস্ত কাজ করা হবে।
অথচ ভোটের মুখে ভাঙ্গনকে ইস্যু করে বিজেপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারাও জোর দরজা শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক মঞ্চে। যেহেতু ভাঙন শুরু হয়েছে এই এলাকাটি সিপিএম পরিচালিত পাটুলী গ্রাম পঞ্চায়েত। তাই ভাঙ্গনরোধ কেন হয়নি একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের পরিচালিত বোর্ডের উপরেই দোষারোপ করছে বর্তমান শাসক দলের নেতারা। তৃণমূলের নেতাদের অভিযোগ যে পঞ্চায়েতে যেহেতু সিপিএম তাই ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এই নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে। অথচ ভাঙ্গন নতুন কিছু নয় দীর্ঘদিন ধরে ভয়াবহ ভাঙনে এলাকার প্রচুর কৃষিজমি থেকে শুরু করে ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে নদীর জলে।
কংগ্রেস সিপিএম সেই সাথে বর্তমান শাসক দল ভাঙন রোধে জোরালো কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারিনি বলে এলাকার বাসিন্দাদের একটা অংশের দাবি।
এখন বিস্তীর্ণ এলাকা ভাঙ্গনের কবলে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে তামাঘাটা ও ঝাউডাঙ্গা এলাকায়।
যদিও স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান সুভাষ দাস জানিয়েছেন যে একশো দিনের কাজের মাধ্যমে ভন্ডদের কিছুটা কাজ করা হয়েছিল সেটা আবার ভাঙ্গনে ধ্বসে গিয়েছে।
ভাঙনের ফলে এলাকার মানচিত্র বদলে যাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন যে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের। বাম আমলে ভাঙনরোধে ভাল কাজ হলেও বর্তমান শাসক দলের কাছে রোদে কোন উপকার পায়নি এলাকার মানুষ এমনটাই অভিযোগ পঞ্চায়েত প্রধানের।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ যে ইতিবাচক ভাঙ্গনের জেরে বিঘের পর বিঘে কৃষি জমি তলিয়ে যায় ফলে এর উৎস হারাতে হচ্ছে এলাকার সকলকে। কারণ আর মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া আরও জানিয়েছেন যে পাটুলির নওয়াপাড়া গ্রামে নদী ভাঙ্গন রোধে যাতে তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা করতে পারি তার উদ্যোগ আমি গ্রহণ করেছি বিষয়টি বর্ধমান সেচ দপ্তরকে জানিয়েছে।
স্থানীয় বিধায়ক তথা সিপিএম নেতা প্রদীপ সাহা জানিয়েছেন যে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে বারবার আবেদন নিবেদন করেও কোন কাজের কাজ হয়নি। প্রাক্তন বিধায়ক তৃণমূল নেতা তপন চট্টোপাধ্যায় ও জেলা পরিষদের সদস্য বিপুল দাস জানিয়েছেন যে সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েত এলাকায় ভাঙন রোধে আমরা বারবার সহযোগিতার কথা বলেছি কিন্তু সিপিএম নেতারা আমাদের কথা শুনেনি। ঐ পঞ্চায়েত ভোটে আমরা ক্ষমতায় এলে নিশ্চয়ই ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here