নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
অপরাধীদের খুঁজে পাওয়া যায়নি, অতএব সাংবাদিক রানা আয়ুবের ২০১৮ অভিযোগের কেস ফাইল বন্ধ করে দিতে চলেছে দিল্লি পুলিশ। রানা আয়ুব, প্রখর সমালোচক নরেন্দ্র মোদী সরকারের ; তাঁর লেখা বই ‘গুজরাট ফাইলস’ প্রকাশিত হওয়ার পর বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন রকমভাবে ভয় দেখানো হতে থাকে ওনাকে এবং ওনার ছবি মর্ফ করে একটি পর্নোগ্রাফিক কন্টেন্টের সাথে জুড়ে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। তিনি সাকেট পুলিশ স্টেশনে ২০১৮ এপ্রিলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এইসব কিছুর বিরুদ্ধে।
২০১৮ সালের মে মাসে, রাষ্ট্রপুঞ্জের পাঁচজন বিশেষ আধিকারিক দল মোদী সরকারকে জানান রানা আযুবের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে এবং ভারতের যে নতুন সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, মোদী সরকারের সমালোচনা করলেই বিশেষ করে সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে, তাঁদের ওপর আক্রমণ নেমে আসে; ,শারীরিকভাবে বা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে তাঁদের হেনস্থা করা হয় এই বিষয়ে সরকারের বিশেষ নজরদারি প্রয়োজন।
আরও পড়ুনঃ বিমান দুর্ঘটনায় আহত-নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা কেন্দ্রের
এই বছর জুলাই মাসে রানা আয়ুব তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলে একটি মেসেজ পোস্ট করেন যেখানে তাঁকে ধর্ষণ এবং খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। দিল্লি পুলিশ যদিও অপরাধীদের খুঁজে পায়নি তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম নিজেরা খুঁজতে গিয়ে দেখেছে যে ১৮টি টুইটার হ্যান্ডেলের বিরুদ্ধে আয়ুব অভিযোগ জানিয়েছিলেন সেগুলির মধ্যে ১৪ টি এখনো একটিভ, ১২ টি অসম্মানজনক মেসেজ এখনো অনলাইন এবং ১১ টি একাউন্ট এই বছর অর্থাৎ ২০২০ সালেও বিভিন্ন পোস্ট করেছে অর্থাৎ এখনো তারা যথেষ্টই একটিভ।
রানা আয়ুব জানিয়েছেন, সাকেট থানা প্রথমে এফআইআর নথিভুক্ত করতে না চাইলে, তাঁর উকিল বৃন্দা গ্রোভার এবং রত্না আপ্পনদার বলেন তাঁরা জিরো এফআইআর দায়ের করবেন।
তখন পুলিশ কিছুটা বাধ্য হয়েই কেস নথিভুক্ত করে। তিনি টুইটারে যোগাযোগ করেন টুইটার উত্তর দেয় এই ধরণের মেসেজ নাকি তাদের সাধারন বিধিনিষেধ ভঙ্গ করেনি। ২৬ এপ্রিল ২০১৮ তিনি জানতে পারেন একটি মর্ফড পর্ণোগ্রাফিক ভিডিওর কথা যেখানে অন্য এক মহিলার শরীরে তাঁর মুখ জুড়ে সেটি আন্তর্জালে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ উদ্ধার হল এয়ার ইন্ডিয়ায় দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির ব্ল্যাক বক্স
৬ জুলাই ২০১৮, রানা আয়ুব ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে নিজের জবানবন্দি দেন সমস্ত প্রামাণ্য নথি-সহ, যা ফৌজদারি ধারা ১৬৪ এ নথিভুক্ত। সেই বয়ান সাকেট থানায় ইমেলের মাধ্যমে পাঠালে তারা এফআইআর করতে বাধ্য হন।
২০ আগস্ট ২০১৮ দিল্লি পুলিশ তাঁকে ইমেলের মাধ্যমে জানায় যে তাঁর মামলা সাউথ ডিস্ট্রিক্ট সাইবার সেল থেকে স্থানান্তরিত হয়েছে মন্দির মার্গ সাইবার সেলে। বিগত দুই বছর এইসব টালবাহানা চলতেই থাকে, পুলিশ জানায় অভিযোগকারিণী যেসব মেসেজ বা হুমকির উল্লেখ করেছেন, সেইসব একাউন্ট ব্যবহারকারীদের ইউআরএল/ লিংক পাওয়া যাচ্ছে না।
অতঃপর, দিল্লি পুলিশ চিঠি দিয়ে রানা আয়ুবকে জানায় এইসব ভুয়ো ফেসবুক বা টুইটার ব্যবহারকারীদের যেহেতু কোনো অস্তিত্ব নেই তাই তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না এবং এই কারণে তারা মামলাটি বন্ধ করে দিচ্ছে। যদিও এইসব একাউন্ট থেকে রানা আয়ুব এখনো ক্রমাগত ধর্ষণ এবং খুনের হুমকি পাচ্ছেন। তার উত্তর প্রশাসনের কাছে নেই।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584