তপন চক্রবর্তী,উত্তর দিনাজপুরঃ
রাজ্য সরকার শিল্পপতিদের নিয়ে বার বার শিল্প সম্মেলন করলেও রাজ্যের কোথায় আদৌ কোন শিল্প স্থাপন দীর্ঘ আট বছরের মধ্যে হয়েছে কিনা সাধারণ মানুষ কেন সরকার নিজেই তার সঠিক জবাব দিতে পারবেনা।
অথচ ভাবতে অবাক হতে হয় আমাদের রাজ্যের প্রতিটি জেলায় যত শিল্প সম্পদ আছে আমাদের রাজ্য সরকার তথা সরকারের আমলারাও তার কোন খোঁজ খবর রাখেনা বলেই তাদের কাজকর্ম দেখলে সেটাই মনে হওয়া স্বাভাবিক।রাজ্যের প্রতিটি জেলায় যে পরিমান কৃষি পণ্য উৎপাদন হয় তা থেকে অতি সহজেই কৃষি ভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলা সম্ভব।অথচ রাজ্য সরকার সেদিকে কোন গুরুত্ব আজ অবধি দেয়নি পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের পদাঙ্ক অনুসরণ করে।
উত্তর দিনাজপুর জেলার যে পরিমান পাট হয়,একটি চটকল কারখানা তৈরী হতে কোন সমস্যা হবার কথা নয়।উত্তর দিনাজপুর জেলায় একটি বড় মাপের চটকল তৈরী হলে পাট চাষীরা তাদের পাট চটকলেই বিক্রি করে ন্যায্য দাম পেতে পারে,তেমনি এই এলাকার বেশ কিছু দক্ষ এবং অদক্ষ বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। জেলায় কৃষি ভিত্তি(পাট)শিল্প করা হলে পাট চাষীদের উৎপাদিত পাটের ন্যায্য দাম পেতেও কোন সমস্যা হবেনা।
অপরদিকে,উত্তর দিনাজপুর জেলার দক্ষ এবং অদক্ষ শ্রমিকদের কাজের খোঁজে ভিন রাজ্যে যাবার প্রবণতা ধীরে ধীরে কমে যাবে।উত্তর দিনাজপুর জেলার মানুষ এই জেলায় একটি পাট শিল্প স্থাপনের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই দরবার করে এলেও জেলা বাসীদের কথার কোন গুরুত্ব বামফ্রন্ট সরকার এবং বর্তমান মা মাটি মানুষের সরকার কেউ করেনি।
জানা যায়,উত্তর দিনাজপুর জেলাতেই পাট উৎপাদন হয় ৮০ হাজার মেট্রিক টন।যে পরিমান জেলাতে পাট উৎপাদন হয় তাতে উত্তর দিনাজপুর জেলায় রাজ্য সরকার সহজেই একটি পাট ভিত্তিক শিল্প গড়ে তুলতে পারে।এই শিল্প গড়া হলে দক্ষ এবং অদক্ষ কয়েক হাজার বেকারের কর্ম সংস্থান সম্ভব হতে পারে। উত্তর দিনাজপুর জেলা কোন মন্ত্রী,বিধায়ক অথবা সাংসদদের জেলার শিল্প প্রসারের জন্য কারো কোন রকম ভুমিকা নেই।মাথা ব্যাথা পাঁচবছর পর পর ঠিক নির্বাচন এলে তখন জেলায় শিল্প গড়বার প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিয়ে নির্বাচনের বাজার গরম করে দেন।
সাধারণ ভোটারদের সাথে একরকম অতি ভদ্রভাবে প্রতারণা করে থাকে।তার ফল যা হবার তাই হয়।উত্তর দিনাজপুর জেলার শ্রমিকরা পেটের তাগিদে ভিন রাজ্য বিহার,উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব,রাজস্থান,গুজরাট, মহারাষ্ট্র,দিল্লি প্রভৃতি রাজ্যে গিয়ে কাজ করে আসছে দিনের পর দিন বছরের পর বছর ধরে।আসলে অতি সহজেই যদি বাজিমাত করা যায় তাহলে রাজ্যে শিল্প স্থাপনের কি প্রয়োজন আছে?
কন্যাশ্রী,সবুজসাথী,যুবশ্রী দিয়েইতো রাজ্য উন্নয়নের বান এনে দিয়েছেন আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী।অথচ রাজ্য সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করছে রাজ্যে তথা দেশ বিদেশের শিল্পপতিদের এনে প্ৰতি বছর শিল্প সম্মেলন করে যাচ্ছেন।কিন্তু যার নিট ফল শুন্য।মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জেলার মানুষের একজন প্রতিনিধি হিসেবে এলাকার মানুষের আবেদন রাজ্যের প্রতিটি জেলায় সাথে যেখানে যে শিল্প হতে পারে সেইস্থানে সেই কৃষি ভিত্তিক শিল্প স্থাপনের প্ৰতি নজর দিয়ে দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকদের এই রাজ্যের বিভিন্ন কলকারখানাতে কাজের ব্যবস্থা করতে পারেন আপনিই।
আরও পড়ুনঃ ত্রিস্তর পঞ্চায়েতি ব্যবস্থা শিখতে বিহারের প্রতিনিধি দল পূর্ব বর্ধমানে
লোকসভা নির্বাচন প্রায় শেষ হবার পথে।আগামী ১৯শে মে শেষ পর্যায়ের নির্বাচন।২৩শে মে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা।এর পরেই আসছে ২০২১শে বিধান সভার ভোট।উত্তর দিনাজপুর জেলার একজন বাসিন্দারা সকলেই আবেদন করছে বিধান সভার নির্বাচনের আগে উত্তর দিনাজপুর জেলায় অন্তত একটি কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপন করে দেখাক যাতে করে মানুষ বুঝতে পারে শিল্প স্থাপন করার ক্ষেত্রে সরকারের সদিচ্ছার কোন অভাব নেই।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584