বল্লাল সেনের ঢিপি ঘিরে পর্যটন গড়ে তোলার দাবী

0
461

শ্যামল রায়,নদীয়াঃ

বল্লাল সেনের ঢিপি ঘিরে এলাকার কচিকাঁচাদের কাছে খেলার মাঠ হয়েছে। আর সন্ধ্যে নামলে ঢিপি ঘিরে প্রেমিক প্রেমিকাদের ভিড় চোখে পড়ে। কথিত এটি বল্লাল সেনের রাজধানী নামে পরিচিতি।
অথচ সেন বংশের রাজা বল্লাল সেনের নামাঙ্কিত এই ঢিপিতে খননকার্য চালিয়ে প্রায় এক হাজার বছরের পুরনো প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ মিলেছে  মায়াপুর বামুনপুকুরে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সরকারের তরফ থেকে বল্লাল সেনের ঢিপি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করতে সে রকম কোনো পরিকাঠামোর উন্নতি চোখে পড়ে না।

নিজস্ব চিত্র

অথচ আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া আজ থেকে তিন দশক আগে এখানে খননকার্য চালিয়েছিল। তখনই খননকার্য চালিয়ে পাওয়া গিয়েছিল হাজার বছরের প্রাচীন প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ, পঙকের মূর্তি পোড়া মাটির মানুষ ও জীবজন্তুর মূর্তি
তামা ও লোহার তৈরি নানান তৈজসপত্র ও নানান প্রত্নসামগ্রী।
ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ এর মতে অষ্টম ও নবম শতকের ধ্বংসপ্রাপ্ত পুরনো স্থাপত্যকৃতির উপর নির্মিত এই সৌধের উপরিভাগ আনুমানিক দ্বাদশ শতকের। এখন এই জায়গাটি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে বটে কিন্তু পর্যটকদের জন্য সে রকম কোন সুব্যবস্থা এখনো গড়ে ওঠেনি।
জনবসতি এলাকায় মুখ থুবড়ে পড়ে থাকার মত অবস্থায় রয়েছে বল্লালসেনের ঢিপি।পর্যটকদের জন্য দিনের কিছুটা সময় শুধু খোলা থাকে বলে জানা গিয়েছে আর বাদবাকি সময় বন্ধ করে রাখা হয় কিন্তু দুপুরের পর থেকেই এলাকার কচিকাঁচাদের খেলার মাঠ হয়ে দাঁড়ায় বল্লালসেনের ঢিপি আর প্রেমিক-প্রেমিকাদের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র রূপে পরিগণিত ।

নিজস্ব চিত্র

অথচ এই বল্লালসেনের ঢিপি ঘিরে কোন প্রচার নেই এবং আকর্ষণ করার মতো সেরকম কোনো উদ্যোগ নেই বিগত দিনের সরকারের সাথে বর্তমান সরকারের ও।
বহিরাগত যে সমস্ত পর্যটক এখানে দেখতে আসেন তাদের জন্য থাকা খাওয়ার মত ভাল ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।
ফলে এই ঐতিহাসিক পুরাকীর্তি আজও প্রায় পর্যটকহীন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অথচ মায়াপুর ইসকন মন্দিরের থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে এই বল্লালসেনের ঢিপিটি অবস্থিত।
ইসকন মন্দিরের যেভাবে প্রচার সারা বিশ্বজুড়ে হয় সেরকম প্রচার নেই বল্লাল সেন নামাঙ্কিত ঢিপি ।
নদীয়া জেলার ৩৫ নম্বর জাতীয় সরক থেকে মায়াপুর আসার পথে মায়াপুর বামন পুকুর সংলগ্ন এই বল্লালসেনের ঢিপিটি অবস্থিত।
প্রত্যেকদিন বহু ভ্রমণ পিপাসু পর্যটক এই রাস্তা দিয়ে সড়কপথে বল্লালসেনেরঢিপিটি দেখতে আসেন।

নিজস্ব চিত্র

কিন্তু এলাকার মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন মায়াপুর ইসকন দেখতে যত সংখ্যা পর্যটক আসেন তার কয়েকজন মাত্র এই বল্লাল সেনেরঢিপিতে আসেন।পরবর্তীকালে তার উপরেই আবার নতুন সৌধ নির্মিত হয়। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ এর মধ্যে বিভিন্ন সময়ের মেরামত পরিবর্তন ও সংযোজনের নির্দেশনা বাহি স্থাপত্য দ্বাদশ শতকে একটি বিশাল দেবালয় এর রূপ পরিগ্রহ করে।
তবে এলাকার মানুষের দাবি এই বল্লালসেনের ঢিপি ঘিরে সরকারের তরফ থেকে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা হোক। এত বড় ঐতিহাসিক একটা জায়গায় নেই কোন নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ নেই পরিকাঠামোর  উন্নয়ন নেই ।ধীরে ধীরে ধ্বংসাবশেষে পরিণত হচ্ছে বল্লাল সেনের রাজধানী বল্লাল ঢিপি।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here