শ্যামল রায়,মঙ্গলকোটঃ
বছরের পর বছর ঈদ চলে যায়,কিন্তু যেখানে ঈদ উপলক্ষে নামাজ পড়েন অসংখ্য মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ সেই মঙ্গলকোটের নতুনহাটের হোসেন শাহ নির্মিত মসজিদ আজ ধ্বংসের মুখে।
তাই এই ৫০০ বছরের অধিক সময় কাল অতিক্রান্ত হতে চলল হোসেন সহ নির্মিত মসজিদ সংস্কারের দাবিতে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার ওই হোসেনসহ নির্মিত মসজিদ সম্পর্কে আলোচনা হয় পঞ্চায়েত সমিতির কর্মদক্ষ ও সদস্যদের মধ্যে।সমিতির পূর্ত দপ্তরের কর্মদক্ষ মুন্সি রেজাউল হক জানিয়েছেন যে হোসেনসহ নির্মিত মসজিদ সংলগ্ন এলাকাকে হেরিটেজ ঘোষণার দাবিতে আমরা সরব হয়েছি এবং ইতিমধ্যে পর্যটন দপ্তরের কাছে চিঠিও পাঠিয়েছি।এছাড়াও মন্দির সংস্কার করে এলাকায় একটি অতিথি নিবাস গড়ে তোলার উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করেছি।এর ফলে এই মসজিদ ঘিরে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়বে এবং এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটবে।তবে জানা গিয়েছে যে এই মসজিদটি সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের পথে যেতে বসেছে।
৫০০ বছরের পুরনো স্থাপত্য কীর্তিকে ধ্বংসের মুখে বাঁচাতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে মঙ্গলকোট পঞ্চায়েত সমিতি।১৫১০ খ্রিস্টাব্দে এই স্থাপত্যকলার নিদর্শন মসজিদ নির্মিত হয়েছে বলে কথিত।
আরো জানা গিয়েছে যে বউর থেকে শ্রী ক্ষেত্র পর্যন্ত প্রশস্ত বাদশাহী সড়কটি পড়ে হোসেন শাহী সড়ক নামে পরিচিতি হয় শুধু নতুনহাট এই নয় বাদশাহী সড়কের ধারে কেতুগ্রামের রাইখা ও কুলুটেও মসজিদ নির্মাণ করেন হোসেন শাহ।মসজিদের অবস্থান নতুন হাটের ভূভাগ থেকে ২৫ ফুট উঁচুতে।দশ বিঘা জমির উপর ৯১ ফুট দীর্ঘ ও ৪১ ফুট প্রস্থ ও ৩৬ ফুট উঁচু চারকোনা মসজিদের উত্তর দক্ষিণ দিকের দেয়ালের অস্তিত্ব মুছে গেছে তবুও ৯ইঞ্চি লম্বা ২ইঞ্চি চওড়া ইঁটের তৈরি মসজিদের গঠন সৌকর্য নজরকাড়া মতো এখনো রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ অনাদরে অবহেলায় মেঘনাদ বধের স্রষ্টা
উত্তর দিকের তিনটি খেলার নষ্ট একটি খিলান পড়ে রয়েছে মাটিতে।পোড়ামাটির কারুকার্য নিখুঁত শিলা কলার সাক্ষী রয়েছে এখনও এই মসজিদের বিভিন্ন জায়গা জুড়ে।
এই দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য কে বাঁচাতে ১৯৮৭ সালে অধিগ্রহণ করে ভারতের প্রাকৃতিক বিভাগ।ওইটুকুই স্যার বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি এলাকার গবেষক সাংবাদিক বিশিষ্ট সমীক্ষক মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে হোসেন শাহ মসজিদটি নৃশংস হত্যাচারী।শাসক শামস উদদীন মজফরশাহকে কে পরাজিত করে গৌড়ের মসনদে বসে নিজের সাম্রাজ্য ২৪ পরগনার সত্যভোগ হুগলির ও মেদিনীপুরের নেড়াদেউল উত্তরাংশ পর্যন্ত বিস্তার করায় শুধু নয় প্রজাদের সাহায্য যোগাযোগ পানীয় জলের ব্যবস্থা সহ নানা কাজ করেছিলেন হোসেন শাহ।তাই হোসেনসহ নির্মিত মসজিদ ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে সংস্কার যেমন দরকার তেমনি এলাকাটিকে পর্যটন কেন্দ্রের আওতাভুক্ত করার দাবিও কাটোয়া মহকুমা শাসক সৌমেন পাল জানিয়েছেন যে এই মসজিদটিকে কাটোয়া মহকুমার সার্কিট ট্যুরিজমের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আগামী দিন ওই মসজিদকে ঘিরে আরও পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করার জন্য নানান ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।স্থানীয় সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক মোস্তাক আহমেদ জানিয়েছেন যে মসজিদ সংস্কারের পাশাপাশি এলাকার উন্নতি যেমন দরকার এবং পর্যটন কেন্দ্রের আওতাভুক্ত করারও একটা উদ্যোগ ইতিমধ্যেই আমরা গ্রহণ করেছি।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584