উমার ফারুক,নিউজ ফ্রন্ট,হরিশ্চন্দ্রপুর, মালদা,১আগস্টঃ
দল বদলের চিত্র রাজ্যের সর্বত্রই দেখা যাচ্ছে যার জেরে অনিবার্য হয়ে যাচ্ছে আস্থা ভোট।মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতিতে আবারও অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা জামিল ফিরদৌসের নেতৃত্বে বাম-কংগ্রেস জোট।
অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল ১৩ জুলাই। বিরোধী দলনেতা জামিল ফিরদৌস বলেন- আমরা বাম-কংগ্রেস মিলে পনেরো জন সদস্য একজোট হয়ে সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছি।আমরা সভাপতির উপর আস্থা হারিয়েছি।জয়শ্রী কর্মকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন।উনার নিজেরই উচিত ছিল পদত্যাগ করা কিন্তু তিনি তা করেননি। তাই আমরা অনাস্থা প্রস্তাব আনতে বাধ্য হয়েছি।আজ মঙ্গলবার আস্থা ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সোমবার এসডিও অফিস থেকে চিঠি আসে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নং বিডিও অফিসে।ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানানো হয় মঙ্গলবার আস্থা ভোট হবে না। তাই আমরা ব্লকে অবস্থান বিক্ষোভ সমাবেশে বসেছি।তিনি আরও জানান শাসক দলের ঘৃণ্য চক্রান্তের শিকার আমরা। ব্লকের উন্নয়ন মূলক কোনো কাজ হচ্ছেনা,সাধারণ মানুষ নাজেহাল হচ্ছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে হরিশ্চন্দ্রপুর ১নং পঞ্চায়েত সমিতির একুশটি আসনের মধ্যে ষোলোটি আসন দখল করে বামফ্রন্ট একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।পাঁচটি আসন পায় কংগ্রেস।পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হন সিপিআইএম এর জামিল ফিরদৌস।কিন্তু ২০১৫ সালে সিপিআইএম সদস্য জয়শ্রী কর্মকারের নেতৃত্বে ছয়জন নির্বাচিত সদস্য বামফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে যান।কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে সভাপতি হন জয়শ্রী কর্মকার।তবে জয়শ্রী কর্মকার বর্তমানে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য।
হরিশ্চন্দ্রপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মোস্তাক আলম জানান-শাসক দল প্রশাসনকে নিজ স্বার্থে সম্পূর্ণভাবে ব্যবহার করছে। এদিনের আস্থা ভোট বাতিল একেবারেই অনৈতিক এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত। যার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
জামিল ফিরদৌসের আনা অনাস্থাকে সম্পূর্ণ অনৈতিক বলেছেন পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান সভাপতি জয়শ্রী কর্মকার। তিনি বলেন-বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব একেবারেই ভিত্তিহীন।কারণ আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে আমরা তা প্রমাণ করতে সক্ষম।
এদিন বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি নেয় বাম- কংগ্রেস জোট।জোটের পক্ষ থেকে এক প্রতিনিধি দল বিডিও বিপ্লব কুমার রায় কে স্মারক লিপি জমা দেন।
বিডিও জানান ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ কে বিষয় টি সবিস্তারে জানানো হচ্ছে। জোটের পক্ষ থেকে জামিল ফিরদৌস জানান আমরা এই স্মারকলিপি চাঁচল মহকুমা শাসক,জেলা শাসক,জেলা পুলিশ সুপার সহ রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জির দপ্তরে ও প্রেরণ করেছি।আমাদের দাবি না মানা হলে আবার আগামীকাল বেলা এগারোটার থেকে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হবে।হরিশচন্দ্র পুর ১নং ব্লকের সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান আগামীকাল থেকে বিক্ষোভে সামিল হবেন।এদিন অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেন হরিশচন্দ্র পুরের বিধায়ক মোস্তাক আলম,মালতীপুরের বিধায়ক তথা সদ্য নির্বাচিত প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি আল বেরুনী জুলকারনাইন,সিপিএম এর আরজাউল হক প্রমূখ।
তবে হরিশ্চন্দ্রপুর ১নম্বর ব্লকে যে ভাবে বার বার অনাস্থা প্রস্তাব আসছে, এর ফলে প্রশাসনিক কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে।যার জেরে ব্যহত হচ্ছে উন্নয়ন,ক্ষতি হচ্ছে সাধারণ জনগণের।রাজনৈতিক নেতাদের এই অনৈতিক দল বদলের শেষ কোথায়, প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।জন প্রতিনিধি দের এই দল বদলের ফলে গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন আম জনতা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584