শ্যামল রায় পূর্বস্থলী
ভোট আসলেই বিরোধীদের মনে পড়ে ভোটারদের কাছে যাওয়ার। আর আমাদের কর্মী-সমর্থকরা প্রতিদিন ভোটারদের সাথে থাকেন। তাদের সুবিধা-অসুবিধার পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন লাগাতারভাবে । শুধু ভোটের মুখে এলাকার তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা মানুষের কাছে ছুটে যান তা নয়। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্যই ভোটারদের কাছে প্রচারে বেরোচ্ছেন। তাহলে ভোটারা ভোট দেবে কাকে? এই প্রশ্নই ছুড়ে দিয়েছেন পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি তথা প্রাক্তন প্রধান তৃণমূল নেতা দিলীপ মল্লিক।
বুধবার সকালে পূর্বস্থলী এক ব্লকের শ্রীরামপুর গ্রামে তৃণমূলের কার্যালয়ে বসে দিলীপ মল্লিক জোরালো ভাষায় জানিয়ে দিলেন শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এবার বিরোধীশূন্য হবেই।
গ্রামে এমন কোনো গলি বা রাস্তা নেই যে ঢালাই রাস্তা হয়নি। ৯০% ঢালাই রাস্তার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকি কাজ প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। পানীয় জল ১০০% বাসিন্দাদের মধ্যে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
দিলীপ মল্লিক আরও জানিয়েছেন যে তাদের পঞ্চায়েত এলাকায় বাংলার মধ্যে সবথেকে বড় উল্লেখযোগ্য কাজ হয়েছে মহিলাদের সংঘটিত করে স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করা। ইতিমধ্যে ৪২০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে এলাকায়। আনন্দধারা প্রকল্প ও নানান ধরনের প্রকল্প থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা ব্যাংক থেকে লোন পেয়েছে ২১ কোটি টাকা। বর্তমানে সদস্যদের মধ্যে লেনদেনের পরিমাণ ৩০ কোটি টাকার উপর।
দিলীপ মল্লিক জানিয়েছেন যে সমাজের একটা বড় অংশ মহিলারা যদি আর্থিক উপার্জনশীল হতে পারে তাহলে সংসারের অনেকটাই খরচা তারা বহন করলে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া থেকে শুরু করে সবকিছুতেই উপকৃত হতে পারেন। বাংলার বুকে আমাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা আশার আলো দেখছে এবং দিশা হয়ে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। মুড়ি ভাজা পানীয় জলের প্রকল্প সহ টেলারিং পশুপালন মুরগি পালন এর মধ্যে দিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা ক্রমেই জন্য স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে।
এছাড়াও এলাকায় প্রধান প্রধান রাস্তায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্যের অন্যতম মন্ত্রী স্থানীয় বিধায়ক স্বপন দেবনাথ এর প্রেরণায় বিভিন্ন দপ্তর থেকে আর্থিক বরাদ্দ করে একাধিক উন্নয়নমুখী কাজ হয়েছে এলাকায়।
এছাড়াও বাংলা আবাস যোজনায় বহু গরিব মানুষের মধ্যে ঘর দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। পাচ্ছেন বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ভাতা। এলাকার মৎস্যজীবীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমুখী কর্মসূচীর মধ্যে দিয়ে স্বাবলম্বী করা হয়েছে।
এছাড়াও এই পঞ্চায়েতের অন্তর্ভুক্ত বাশদহ চাঁদের বিল কে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করতে একাধিক উন্নয়নমুখী কাজ হয়েছে।
গ্রামীণ পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য নানান ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী স্থানীয় বিধায়ক স্বপন দেবনাথ। ইতিমধ্যে বিল সংস্কার করে তার দুধারে ঢালাই রাস্তা তৈরি হয়েছে এবং একটি পর্যটকদের থাকার জন্য আবাসস্থল ও তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে শীতে বোটে চেপে পরিযায়ী পাখি দেখার আনন্দ নিতে পারবেন পর্যটকরা। শুধু মাইথনে নয় বিভিন্ন পর্যটন স্থানের অনুকরণে অভিনব কায়দায় এই দুটি বিলকে সাজানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এই খাল-বিল গুলিকে সংস্কার করে মৎস্য চাষের মাধ্যমে আর্থিক উন্নতি ঘটানো প্রধান উদ্দেশ্য রয়েছে। তাই এলাকায় সর্বস্তরের মানুষের জন্য ব্যাপক উন্নয়নমুখী কাজ হয়েছে। তাই আমাদের দলের প্রার্থীরা সবকটি আসনে জয়লাভ করবেন এই আশায় প্রকাশ করেছেন বিদায়ী সভাপতি দিলীপ মল্লিক।
জানা গিয়েছে যে এই পঞ্চায়েতের অধীন আসন সংখ্যা রয়েছে ২৪টি। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ২০টি আসন। সিপিআইএম পেয়েছিল চারটি আসন।
এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ২৪ টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। এর মধ্যে তিনটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছে তৃণমূলের প্রার্থীরা। ভারতীয় জনতা পার্টি প্রার্থী দিয়েছে ১৮টিতে। সিপিআইএম প্রার্থী দিয়েছে ১৯টিতে।
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নবকুমার কর জানিয়েছেন যে বিরোধীরা যে সন্ত্রাসের কথা বলছে প্রার্থী দিতে দেয়নি যে কথা বলছে সবটাই মিথ্যা ও অপপ্রচার। তাই যদি না হয় তাহলে এই পঞ্চায়েতে সিপিআইএম ও ভারতীয় জনতা পার্টি কি করে প্রার্থী দিল?
মূলত সরকারের উন্নয়ন এর হেরে যাওয়ার ভয়ে কেউ প্রার্থী হতে চায়নি। প্রার্থী খুঁজে না পাওয়ার কারণেই বিরোধীরা মিথ্যা এবং অপপ্রচার করেছে।
অন্যদিকে বিরোধীদের অভিযোগ শাসকদলের সন্ত্রাসের জন্যই তারা মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারেনি।
তবে বুধবারও ভোট প্রচার জমজমাট। প্রচারে এগিয়ে শাসকদল।
এদিন দল গোবিন্দপুর মধ্য শ্রীরামপুর গ্রাম চৈতন্য কলোনিতে বড় কোবলায় তিনটি নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি উন্নয়নের জন্যই বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত গড়বে তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধীরা একটি আসনে জয়লাভ করতে পারবে না।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584