শ্যামল রায়,কাটোয়াঃ
মঙ্গলকোট ব্লক এর কুরুম্বা গ্রামের দূর্গা সারাবছর নিরামিষ খান শুধু পুজোর ক’দিন রুই মাছের ঝোল খেতে পছন্দ করেন বলে কথিত আছে।তাই মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির দূর্গা অভিযোগ ঘিরে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে আবহাওয়া খারাপ তবুও আনন্দ উৎসবের খামতি নেই বলে জানা গিয়েছে।
সারা বছর ধরে দু’বেলা নিরামিষ,তাই বলে কি পুজোর ক’দিন শুধু নিরামিষ খাওয়ানো যায়! বাড়ির সকলে ভালো মন্দ রান্না করে খাবেন আর ঘরের দুর্গা শুকনো মুখে থাকবে এটা মেনে নেওয়া যায় না তাই পুজোর ক’দিন রান্না হয় রুই মাছের ঝোল সঙ্গে যুক্ত ফুলকপির ডালনা ভাজা আর পায়েশ এই দিয়েই সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত পঞ্চ ব্যঞ্জন খেতে দেন ঘরের মেয়ে দুর্গা কে।
ওই গ্রামে আরো পাঁচটি সার্বজনীন দুর্গাপূজা হয় তবে গ্রামের বাসিন্দা চণ্ডীচরণ চক্রবর্তী জানিয়েছেন যে পাড়ায় পাড়ায় পুজো হলেও মুখোপাধ্যায় বাড়ির দেবীকে দেখতে পুজোর ক’দিন গ্রামের মানুষের ঢল নামে।জনশ্রুতি প্রায় ২০০ বছর আগে বাবু কৃষ্ণধন ভট্টাচার্য বাড়ির আট চালায় এই পুজো শুরু করেন।
ঘরের চাল ও বেত দিয়ে মুড়ে বড় ঘর তৈরি করা হতো সেই সময়।লোকশ্রুতি এক দুপুর বেলা ভট্টাচার্যের গৃহিণী ও তার ননদ ওই ঘরে শুয়ে গল্প করছিলেন তখন একটি ছোট মেয়ে এসে তাদের কাছে পয়সা চায়।মেয়েটির রাঙা হাত দেখে অবাক হয়ে যান তারা তাদের বিশ্বাস হয় কোন দেবী হয়তো এই মেয়েটি রূপ ধরে এসেছেন সেই রাতেই স্বপ্ন পান ভট্টাচার্য গৃহিণী।তারপর থেকেই শুরু হয়ে যায় দুর্গাপুজো।ভট্টাচার্য্য পরিবারের এই আদি পুজো বর্তমানে চালু রেখেছেন মুখোপাধ্যায়রা।কয়েক পুরুষ আগে নাতির সূত্রে পুজোর ভার পান বামন দাস মুখোপাধ্যায়।
পরিবারের প্রবীণ সদস্য প্রসন্ন কুমার মুখোপাধ্যায় জানিয়েছে যে আমাদের বাড়িতে দেবীকে ঢাকের সাজে সাজানো হয় তাই সবাই তাকে ঢাকেশ্বরী দূর্গা নামেই চেনেন।
মুখোপাধ্যায় বাড়ির একাংশের দাবি বছরভর দুবেলা দেবীকে নিরামিষ ভোগ দেয়া হলেও পুজোর ক’দিন রুই মাছের ঝোল দেয়া হয় উমাকে।পুকুর থেকে বড় মাছ ধরে দুর্গাকে খাওয়ানো হয়।আদা বাটা জিরেগুঁড়ো দিয়ে রুই মাছের ঝোল খেতে পছন্দ করে দুর্গা।পুজোর ক’দিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।গ্রামবাসীরা তাতে যোগ দেন প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় নাম যার নাম ঢাকেশ্বরী পুরস্কার।
তাই পুজো ঘিরে চলছে জোর কদমে প্রস্তুতি।
আরও পড়ুনঃ দিনহাটায় প্রকাশিত হলো পুজো গাইড ম্যাপ
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584