কার্ত্তিক গুহ,ঝাড়গ্রামঃ
দিল্লির তিন শিশুর মৃত্যু যে অনাহারে হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। তদন্ত রিপোর্টে বিষাক্ত কোনও কিছু খাওয়ানোর সঙ্কেত দিয়েছে। যাদের নিয়ে এত আলোচনা সেই পরিবার আমাদের জেলার লোক। কিন্তু সেই লোকটি ফেরার। তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি ফেরার। আমার মনে হয় এরমধ্যে কোনও রকম গন্ডগোল আছে। তার জন্য লোকটি পরিবার ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। কেউ তিনদিন বা পাঁচদিন না খাবার খেলে একসঙ্গে তিনজন একদিন মারা যায় না। পুরাটাই এখন তদন্ত সাপেক্ষ। এ রকম হয়ে থাকলে সেখানকার রাজ্য সরকারের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। যাঁরা এসব নিয়ে রাজনীতি না করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন ঝাড়গ্রামে দলের আগামী কার্যক্রম নির্ধারণ করার জন্য কর্মী সভা করতে এসে এমনই মন্তব্য করলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি আরো জানান বাংলা ছাড়ার পর তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। পরিবারের লোকজন এখানে আছেন। যেহেতু তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই তাই দায়দায়িত্ব নেই। সংসদ গেছেন ঠিক করেছেন, এটা ওনার দায়িত্ব। মিডিয়াকে বলব, তথ্য জেনে প্রচার করার। বিনা কারণে একটা ভয়ের পরিবেশ বা অপপ্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার দরকার নেই। এরকম ঘটনা হয়েই থাকে। প্রতিদিন প্রচুর লোক মারা যান বিভিন্ন কারণে। তার তদন্ত সাপেক্ষে তথ্য নিয়ে কথা বলা উচিত। না হলে বিভ্রান্তি বাড়ে।
সংসদের আশ্বাস ভালো কথা, এখানে কাজ নেই বলে বাংলা ছেড়ে বহু লোক পালিয়েছেন। উপার্জন নেই। কর্ম সংস্থান নেই এগুলো তার প্রমাণ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বড়ো বড়ো কথা বলেন এই করেছি তাই করেছি, কী করেছেন? উনি বলছেন বেকার সমস্যা নেই। সব বেকার তো বাংলা ছেড়ে দিল্লি, রাজস্থান, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, মধ্য প্রদেশে চলে গিয়েছেন। এখানে থাকলে অনাহারে মারা যেতে হবে। জঙ্গলমহলে নাকি তিনি হাসিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু জঙ্গলমহলের ভোটের ফল নিয়ে লোকে হাসাহাসি করছে। জঙ্গলমহলের মানুষকে এখনও উনি বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। জঙ্গলমহল মিথ্যাচারের ঠিক জবাব দিয়ে দিয়েছে। এরপর সারা বাংলা জবাব দেবে। মিথ্যাচার বন্ধ করে উন্নয়নের রাজনীতি করুন। যেটা আমরা করছি।
গতকাল মেদিনীপুরের সভার জমায়েত প্রসঙ্গে তৃনমুলকে কটাক্ষ করে বলেন, মঞ্চের ছবি দেখে মনে হল নেতার প্রদর্শনী হয়েছে। সমস্ত নেতারা নিজেদের ওজন, ভারী, হালকা নেতা ছিল। মঞ্চের ওজন ভালো ছিল। গাড়ির সংখ্যা ভালো ছিল। কিন্তু গাড়িতে লোক আসেনি। ওনারা অনেক বড় বড় আওয়াজ দিয়েছিলেন, যে মাঠে ও যে শহরে তিল ধরনের জায়গা ছিল না। সেই মাঠে ওরা বলেছিল আমাদের সভায় নাকি
ষাট হাজার লোক হয়েছিল। ষাট হাজার রের অর্ধেকও তো ভর্তি হয়নি। একটা ভাল সার্কাস হল। লোকজন ভাল মজা নিয়েছে। মুরগির মাংস ভাত ডাল ডিম পুরো আয়োজন ছিল মোড়ে মোড়ে। আমরা তো সবাইকে জলও খাওয়াতে পারিনি, খাওয়ানো তো দূরের কথা। কিন্তু খাইয়ে দাইয়েও ওরা লোক আনতে পারেনি। লোকে তো তৃণমূলকে সন্দেহ করছে, মুরগির মাংসটা সত্যি মাংস, নাকি মরা মুরগি। তৃণমূলের ডাকে লোক আর আসবে না। এটা জেনে গিয়েছে ওরা। ভাষণের তেজ খুব জোর ছিল। কিন্তু শোনার লোক ছিল না।
দলের নেতারা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গে দিলীপ বাবু বলেন, আমাদের একজনকেও ওরা ভাঙিয়ে নিয়ে যেতে পারেনি। আমাদের নির্বাচিত সদস্য দের ও কর্মীদের তৃণমূল চাপে রেখেছে, হুমকি দিচ্ছে। ভয় দেখাচ্ছে। ওরা নিয়ে গেলেও আমাদের কর্মীরা ছড়িয়ে নিয়ে এসেছেন। ওরাও বুঝে গিয়েছে, বিজেপিকে টলানো খুব মুস্কিল। কিছু ছিন্নমূল নেতা, যাদের পিছনে দু একটা লোকও নেই, তাঁরা নাকি পার্থ চট্টোপাধ্যায় এর সঙ্গে দেখা করে এসেছেন বলে শুনলাম। ফটো ও তুলেছে। এ রকম কিছু এক্সট্রা প্লেয়ার আছেন, তাঁরা যেতে পারেন। পার্টির যে অগ্রগতি তাতে তাঁরা অ্যাডজাস্ট করতে পারছেন না। সে বিষয়ে আমরা চিন্তিত নই। আমাদের দল বা অন্য পার্টির যাঁরা ছিন্ন মূল নেতা যাঁদের জন সমর্থন নেই তারা তৃণমূলে যাচ্ছেন। বরং তৃণমূল ও অন্য দলের জন নেতারা আমাদের দলে আসছেন, এটাই তৃণমূলের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584