স্টুডিও পাড়ার পথ সারমেয়দের পাশে বিনোদন দুনিয়ার দম্পতি

0
103

নবনীতা দত্তগুপ্ত, বিনোদন ডেস্কঃ

শুটিং বন্ধ আজ অনেকদিন। স্টুডিও পাড়া শুনশান। কেউ আসে না। ঘুরে বেড়ায় কেবল তারাই যাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। স্টুডিওয় যাতায়াতকারীদের সঙ্গেই বেঁধে আছে যাদের জীবন সেই সব লালি, কালি, হাচোরা। এরা আদপে স্টুডিও পাড়ার পথ কুকুর। স্টুডিওতে এদের নিত্য আনাগোনা।

helped dog | newsfront.co

অনেকে সারাটা দিন কাটিয়ে ফেলে স্টুডিও চত্বরেই। প্রজাতিতে সারমেয় হলেও অনুভূতিতে এরা অন্য সব জীবের থেকে অনেক বেশি সক্রিয়। স্টুডিওর চৌহদ্দি ছেড়ে অনেকেই সহজে নড়ে না। আজ আর স্টুডিওতে আসে না কেউ। তাই ওদেরকে ভাতটা, মাংসের হাড়টা, বিস্কুটটা দেবে কে? অনাহারেই কাটছে এক প্রকার দিন। কিন্তু কতদিন? আর কতদিন?

paramita and sudip | newsfront.co

eating dog | newsfront.co

ওদের কথা ভেবে এবার এগিয়ে এলেন পরিচালক-চিত্রনাট্যকার পারমিতা মুন্সি এবং তাঁর স্বামী তথা আর্ট ডিরেক্টর সুদীপ ভট্টাচার্য। বেশ কয়েকটি সিরিয়ালের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে স্টুডিও পাড়ায় এঁদের নিত্য যাতায়াত। স্টুডিও পাড়ার সেই সব কুকুরের রোজকার খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করলেন তাঁরা।

man helped path dogs | newsfront.co

১৪২৮-এ ‘বর্ষবরণে বিবিয়ানা’ শীর্ষক একটি ক্যালেন্ডার বানান পারমিতা। সেই ক্যালেন্ডার বিক্রির টাকার পুরোটাই ব্যয় করবেন স্টুডিও পাড়ার ওই সব পথ কুকুরদের জন্য। পাশে আছেন আর্ট ডিরেক্টর সুদীপ ভট্টাচার্য। পাশে পেয়েছেন অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী, পল্লবী চ্যাটার্জি, দেবলীনা দত্তদের৷

পারমিতা নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে লিখেছেন- “আজকের এই আসন্ন প্রলয়ঘূর্ণির দিনে রাস্তার যে সব সারমেয়দের আমরা নিয়মিত খাইয়ে থাকি, তাদের ঝড়-দূর্যোগ আসার আগে খাইয়ে দিতে হবে এই ভাবনা মাথায় ছিল। গোপাল, যে বাচ্চাদের ভাত পৌঁছে দিয়ে আসে সারামাস, সে বলল সকালে আসতে পারবেনা। ড্রাইভার বলল, আজ বাড়ি থেকে বেরোবো না।

আরও পড়ুনঃ সরকারে নেই, দরকারে আছেন হিরণ

মনে এল সৌমেন স্যানালের কথা। টালিগঞ্জ-গড়িয়া রুটের অটোচালক, যিনি লকডাউনে কর্মহীন অবস্থায় ফেসবুকে কাজ চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তাকে ফোন করে ডেকে নিলাম সকাল ১০ টায়। যা ভাত নিয়মিত দেওয়া হয়, তার প্রায় দ্বিগুণ ভাত-চিকেন আর কয়েকপ্যাকেট মারী বিস্কুট নিয়ে আমি আর আমার হাসবেন্ড Sudip Bhattacharjee রওনা দিলাম সৌমেনের অটোতে।

টালিগঞ্জ হরিদেবপুর ধারাপাড়া থেকে টেকনিশিয়ান স্টুডিও হয়ে নানুবাবুর বাজার, ওয়ারলেস পার্ক, অজয়সংহতি ক্লাবের পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় ৬৫-৭০ টি কুকুরকে খাইয়ে খানিক আগে একবুক শান্তি নিয়ে বাড়ি ফিরলাম। রোজ যারা খায় তারা তো ছিলই, এছাড়াও অগুনতি সারমেয়, যারা পথে পড়েছে, সবাইকে খেতে দিয়েছি।

আরও পড়ুনঃ শিল্পীর পাশে পরিচালক

সৌমেনও নিজের থেকে আমাদের হাতে হাত লাগিয়ে খাবার দিয়েছে। আমাদের সাধ অনেক, সাধ্য সীমিত। লোকবল কম। তবুও যতটুকু পারি করার চেষ্টা করি। আজকের ছবিগুলো দিলাম। কেউ যদি মনে করেন দেখনদারির জন্য দিলাম, ভাবতে পারেন। তাকে একটা কথা বলার, নিজেও না হয় দেখনদারি করেই কখনও কোনও অভুক্ত পশুর মুখে খাবার তুলে দেবেন।”

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here