শ্যামল রায়,পূর্বস্থলীঃ
পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলীতে অধিকাংশ অধিবাসী তাঁত শিল্পের সাথে যুক্ত। কালনা ও কাটোয়া মহকুমা কয়েক লক্ষ মানুষ তাঁতের উপর নির্ভর করে সংসার চালান।
তাঁতিদের উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সোমবার হস্তচালিত তাঁত ও সরঞ্জাম তুলে দিলেন রাজ্যের বস্ত্র ও ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্পের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। পূর্বস্থলী এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির নজরুল মঞ্চে ও শ্রীরামপুর গ্রামে তন্তুজ ভবনে তাঁত শিল্পীদের হাতে তাঁত ও সরঞ্জাম তুলে দেওয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি দিলীপ মল্লিক অফিসার পলাশ পাল পরিমল দেবনাথসহ এলাকার অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিরা।
সমিতির বিদায়ী সভাপতি দিলীপ মল্লিক জানিয়েছেন যে তাঁতবিহীন তাঁত শিল্পীদের স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে ও আর্থিক উন্নয়নে পূর্বস্থলী এক ব্লকের একশো জনকে হস্তচালিত তাঁত ও সরঞ্জাম তুলে দেওয়া হয়েছে। পুজো শুরুর আগেই এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করায় এলাকার তাঁতিদের মুখে হাসি ফুটল।কালনা মহকুমার সমুদ্রগড় ধাত্রীগ্রাম শ্রীরামপুর প্রভৃতি গ্রামে তাঁতিদের বসবাসের সংখ্যা বেশি।
অভিযোগ যে বাম আমলে তাঁত শিল্পের মন্দা ঘটছিল। প্রকৃত তাঁতশিল্পীরা তাঁত শিল্পের মন্দার কারণে অনীহা তৈরি হয়েছিল এবং তাঁতশিল্পের পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গিয়েছিল। বহু মানুষ বেঁচে থাকার তাগিদে ভিনদেশে কাজের জন্য পাড়ি দিয়েছিল। সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁত শিল্পকে চাঙ্গা করতে বিনামূল্যে তাঁত বিলি সহ নানান প্রকল্প গ্রহণ করে তাঁতিদের জন্য। পাশাপাশি তাঁত শিল্পীদের বসবাসকারী সমস্ত জায়গায় রাস্তাঘাট পানীয় জলসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। তাই ফের তাঁতিরা এই শিল্পের সাথে যুক্ত হচ্ছেন।
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানিয়েছেন যে বাম আমলে ধুঁকতে থাকা তাঁতশিল্প আজ অনেকটাই লাভের মুখ দেখেছে। তাঁতবিহীন তাঁতিরা আজ নিজেরাই মালিক হয়ে গিয়েছেন। এছাড়াও তাঁতশিল্পীদের কাছ থেকে সরকারের তরফ থেকে সরাসরি শাড়ি কেনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে এই কাজকে সফলতা দিয়েছে তন্তুজ।
তাঁতিরা ও অধিক মুনাফা পাচ্ছে। গত বছরের মতো এ বছরেও তন্তুজ শিবির করে সারা রাজ্যে তাঁতিদের কাছ থেকে শাড়ি কেনা শুরু করবে।
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ আরও জানিয়েছেন যে তাঁতবিহীন তন্তুবায়দের স্বনির্ভর লক্ষ্যে প্রায় ২৫০০জনকে বিনামূল্যে তাঁত ও সরঞ্জাম দেওয়া হবে।
এছাড়াও বাকি যারা থাকবেন তাদের ও ধাপে যাবে তাঁত ও তাঁতের সরঞ্জাম বিলি করা হবে এর উদ্দেশ্য একটাই তাঁত শিল্পের পুনরুজ্জীবন ঘটানো।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে তাঁতশিল্পীদের উন্নয়নের জন্য তাঁতশ্রী প্রকল্পে কালনা মহকুমা জুড়ে প্রায় তিন হাজার তাঁত ও তার সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়ে গিয়েছে।
আরো জানা গিয়েছে যে পুজো শুরুর আগেই তাঁতিদের বসবাসকারী সব থেকে বড় জায়গা সমুদ্রগড় গনেশ চন্দ্র তাঁত কাপড় হাটে ইতিমধ্যেই জোরকদমে বেচাকেনা শুরু হয়ে গিয়েছে জানালেন হাটের অন্যতম কর্ণধার সুবীর কুমার কর্মকার। সুবিরবাবু আরও জানিয়েছেন যে প্রতি সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন হাট বসে এছাড়াও প্রতিদিন এই হাট থেকে প্রচুর তাঁতিদের উৎপাদিত বস্ত্র কেনাবেচা হয় পুজোর মুখেই কেনাবেচা অনেকটাই বেড়ে যায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে এবং ভিন রাজ্য থেকেও এখানে তাঁত কাপড় কিনতে আসেন ক্রেতারা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584