চাকরির অনিশ্চয়তায় বেলেঘাটা আইডি’র ‘উৎকর্ষ কেন্দ্র’-এ কাজে যোগ দিতে নারাজ চিকিৎসকরা

0
72

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

যেহেতু বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল থেকেই করোনার বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছিল পশ্চিমবঙ্গ, সেই কারণে
রাজ্যের চিকিৎসা পরিকাঠামো আরও উন্নত করার স্বার্থে সংক্রামক রোগের চিকিৎসায় বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালকে ‘উৎকর্ষ কেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

emergency center | newsfront.co
ফাইল চিত্র

কিন্তু তার জন্য অস্থায়ীভাবে চিকিৎসকদের নিয়োগের জন্য প্রকাশিত হয় বিজ্ঞপ্তি। সূত্রের খবর, ভিন রাজ্যের তিন চিকিৎসকের সঙ্গে এই বিষয়ে প্রাথমিক কথা হলেও তারা কাজে যোগ দিতে নারাজ। স্থায়ী চাকরি ছেড়ে অনিশ্চিত ভাবে কাজ করতে তারা রাজি হননি। ফলে শুরুতেই হোঁচট খেল মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত এই পরিকল্পনা।

নিয়োগের তালিকায় থাকা দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সায়ন্তন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নীতীন গুপ্ত শুক্রবার জানিয়েছেন, “রাজ্য সরকারের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে তাদের পক্ষে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে কাজে যোগ দেওয়া সম্ভব নয়। বিভিন্নরকম কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছি। সে সব ছেড়ে কলকাতায় আসা সম্ভব হচ্ছে না।’” নীতীন গুপ্ত আরও বলেন, “এখন একটি স্থায়ী চাকরির সঙ্গে যুক্ত। এতে অধ্যাপনার সুযোগও রয়েছে। বেলেঘাটা আইডি–র কাজটি স্থায়ী নয়। তাও যদি অধ্যাপনার সুযোগ থাকত, তবে কলকাতায় ফিরে কাজ শুরু করার চেষ্টা করতাম। কিন্তু অনিশ্চিত চাকরির ভবিষ্যৎ কি?”

আরও পড়ুনঃ আলু-পিঁয়াজের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব অধীর চৌধুরী

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জুলাই মাসে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালকে ‘উৎকর্ষ কেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি একই বিষয়ে গবেষণা এবং পড়াশোনার জন্য স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে ‘অ্যাডভান্সড মাইক্রোবায়োলজি’ বিভাগ তৈরির কথা বলেন তিনি।

পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির পরামর্শে সেপ্টেম্বর মাসে সংক্রামক রোগের দু’‌জন সিনিয়র কনসালট্যান্ট এবং একজন জুনিয়র কনসালট্যান্ট নিয়োগের কথা ঘোষণা করা হয়। রাজ্যপালের অনুমোদন মিললে ১৪ অক্টোবর সেই তিন পদে তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নাম বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ করে স্বাস্থ্য দফতর।

ওই তিন বিশেষজ্ঞের মধ্যে সায়ন্তন বন্দ্যোপাধ্যায় ও নীতীন গুপ্ত এইমস থেকে সংক্রামক রোগে ডিএম করেছেন। এই দু’‌জনকে সিনিয়ার কনসালট্যান্ট পদে নিয়োগ করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় কর্মরত চিকিৎসক সায়ন্তন বন্দ্যোপাধ্যায় এখন ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা করছেন।

আর কর্নাটকের কস্তুরবা মেডিক্যাল কলেজে সংক্রামক রোগে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর চিকিৎসক নীতীন গুপ্ত। জুনিয়র কনসালট্যান্ট পদে মনোনীত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনুপ আগরওয়াল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চে (‌আইসিএমআর)‌ কনসালট্যান্ট ছিলেন।

আরও পড়ুনঃ মহামারীর আবহেই সম্পন্ন হল কোলাঘাট থানায় বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান

কিন্তু এত সুন্দর পরিকল্পনা সত্ত্বেও কেন রাজ্যে আসতে নারাজ চিকিৎসকরা? বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, দু’বছরের চুক্তির ভিত্তিতে এই কনসালট্যান্ট পদে নিয়োগ করা হবে। আর তাতে অধ্যাপনার পাশাপাশি গবেষণার সুযোগ তেমন পাওয়া যাবে না।

কাজেই রাজ্যের প্রয়োজনে আসলেও এতে চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত ক্ষতি হবে। সেই কারণেই চিকিৎসকদের পক্ষে এতে সম্মতি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। শনিবারে বিজ্ঞপ্তি শেষ দিন হওয়ায় এবার নতুনভাবে নিয়োগ করার ভাবনা চিন্তা করতে হবে রাজ্যকে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here