চিকিৎসকের রক্তে প্রাণ ফিরে পেল থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত দুই শিশু

0
81

পিয়া গুপ্তা,উত্তর দিনাজপুরঃ

Doctors save life of two Thalassemia affected child
নিজস্ব চিত্র

নিজের শরীরের রক্ত দিয়ে ডাক্তার প্রান বাঁচালেন দুই শিশুর।রায়গঞ্জের ডাক্তারের এই মহান ও মানবিক কাজে শয়ে শয়ে মানুষ সোস্যাল মিডিয়ায় প্রশংসার ঝড় বইয়ে দিলেন।

Doctors save life of two Thalassemia affected child
নিজস্ব চিত্র

উল্লেখ্য,একদিকে কর্ম বিরতির জেরে
রাজ্যের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যখন জুনিয়র ডাক্তারদের অনড় ও অনমনীয় মনোভাবের জন্য ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা পরিষেবা,বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ উঠছে।কিছু ক্ষেত্রে যখন এমনভাব প্রকাশ পাচ্ছে যে,চিকিৎসক রোগী যেন পরস্পর বিরোধী তখন
রায়গঞ্জ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ নীলাঞ্জন মুখার্জি নিজের শরীরের রক্ত দিয়ে প্রমাণ করলেন চিকিৎসক রোগী আসলে একে অপরের পরিপূরক।

Doctors save life of two Thalassemia affected child
নাজিমা খাতুন,থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর ঠাকুমা।নিজস্ব চিত্র

রবিবার রায়গঞ্জ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে শিশু বিভাগে রাউন্ড দিতে যান শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ নীলাঞ্জন মুখার্জি।হাসপাতালে শিশু বিভাগে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত দুই শিশু ভর্তি হয়েছে।পার্শ্ববর্তী রাজ্য বিহারের কাটিহার জেলার আনাদপুর থানার বেলুয়া গ্রামের বাসিন্দা পেশায় রঙ মিস্ত্রী মহম্মদ আরজুর পাঁচ বছরের ছেলে মহম্মদ জিসান ও দুই বছরের কন্যা সন্তান আরজান ঋতু থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রক্তের অভাবে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।

সেসময় তিনি দুই দুস্থ শিশুকে দেখে জানতে পারেন তাদের শরীরে রক্তের প্রচন্ড অভাব। রক্তের অভাবে তাদের মৃত্যুও হতে পারে। তিনি শিশু দুটির রক্তের গ্রুপ দেখে বুঝতে পারেন তাঁর রক্তের গ্রুপের সাথে মিল রয়েছে। কালবিলম্ব না করে ডাঃ নীলাঞ্জন মুখার্জি রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে রক্ত দান করে সেই রক্ত শিশু দুটির শরীরে দিয়ে তাদের প্রান বাঁচান।

কোনও জাত বা ধর্ম না দেখে তাঁর দেওয়া রক্তে প্রান ফিরে পায় দুই দুঃস্থ শিশু।

Doctors save life of two Thalassemia affected child
মহম্মদ আরজু,থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর বাবা।নিজস্ব চিত্র

থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশু দুটির বাবা মহম্মদ আরজু জানিয়েছেন,তিনদিন ধরে রায়গঞ্জ হাসপাতালে শিশুদের ভর্তি করেছি।রক্ত পাচ্ছিলাম না।রক্তের অভাবে তাদের প্রান সংশয় হয়ে উঠেছিল।ডাক্তার নীলাঞ্জন মুখার্জি নিজের শরীরের রক্ত দিয়ে তাদের প্রান বাঁচিয়েছেন।তাঁর এই মহান কাজ আমরা কোনওদিন ভুলবনা।

একই অনুভূতি শিশুদুটির ঠাকুমা নাজিমা খাতুনের।

এদিন চিকিৎসক ডাঃ নীলাঞ্জন মুখার্জি বলেন, শিশুদুটিকে দেখে বুঝতে পারি তাদের শরীরে দ্রত রক্তের প্রয়োজন।এদিকে হাসপাতালেও রক্তের অভাব চলছে।আমার রক্তের গ্রুপের সাথে শিশু দুটির রক্তের গ্রুপের মিল থাকায় শিশুদুটিকে বাঁচাতে আমি নিজের রক্ত দিয়েছি।

Doctors save life of two Thalassemia affected child
ডাঃ নীলাঞ্জন মুখার্জি শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ,রায়গঞ্জ হাসপাতাল।নিজস্ব চিত্র

এমন মহৎ একটি কাজ করার পর ডাঃ নীলাঞ্জন মুখার্জি এনআরএস কান্ড নিয়ে বলেন,আমি জুনিয়র ডাক্তারদের সাথে সহমত পোষন করেই বলছি আমাদের চিকিৎসকদের প্রাথমিক কাজ রোগীদের চিকিৎসা করা।

আরও পড়ুনঃ সাক্ষী সংবাদমাধ্যম,মুখ্যমন্ত্রীর সাথে আলোচনায় বসতে রাজি জুনিয়র ডাক্তাররা

আর সমাজের মানুষের কাছে তাঁর বার্তা আমাদের চিকিৎকেরাও মানুষ, সুস্থভাবে রোগীদের চিকিৎসা করার মানসিকতা ফিরিয়ে দেওয়া হোক আমাদের।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here