নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝাড়গ্রামঃ
পুজোর কটা দিন আপামর বাঙালি পরিবার সদস্যদের সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠলেও বিপরীত ছবি দেখতে পাওয়া যায় ঢাকিদের পরিবারে। মেঘাচ্ছন্ন আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘমালা ইতস্তত ভেসে বেড়ানো আর কাশফুলের সারির ওপর উড়ে যাওয়া বলাকা শ্রেণি যেমন দুর্গাপুজোর বার্তার জানান দিচ্ছে, তেমনই ঢাকিদের পাড়ায় ঢ্যাং কুর কুর ঢাকের বাদ্যির বোলেও ধ্বনিত হচ্ছে বার্তা, মা আসছেন। পুজোর গন্ধ ছড়িয়ে পড়তেই ব্যস্ততা তুঙ্গে এখন ঢাকিদের পাড়ায়। দুই কাঠির তাল বাদ্য এক করতে ব্যস্ত বেলপাহাড়ি ব্লকের জয়পুর কুচলাপাহাড়ি ও সাহরির ঢাকিরা। বদলে যাওয়া সময়ের অত্যাধুনিক বৈদ্যুতিন যন্ত্রের সঙ্গে পাল্লা দিতে ঢাকে নতুন ধরনের বোল তুলতে যারপরনাই ব্যস্ত শিল্পীরা।
কারণ পুজোর সময় কাজকর্ম সেরে ছুটি নিয়ে আর পাঁচজন বাঙালি বাড়ি ফিরে পরিবার পরিজনদের সাথে পুজোর দিনগুলি আনন্দে কাটানো। সেই সময় ঢাকার পরিবার-পরিজনের ছেড়ে একটু বেশি উপার্জনের আশায় ঢাক বাজাতে যেতে হয় বাইরে। কারণ ঢাকিদের মূল রোজগার বলতে এই দুর্গাপুজো। পুজোর ক’দিন মণ্ডপে মণ্ডপে ঢাক বাজিয়ে যা রোজগার হয় তাতে কিছুদিন সংসার চলে যায়। তাই বছরের এই কটা দিনের জন্য অধীর আগ্রহে তাকিয়ে থাকে ঢাকিরা। অন্যান্য বাঙ্গালিরা যখন পরিবারের সঙ্গে আনন্দে মেতে থাকবেন তখন ঢাকিরা তাদের পরিবার পরিজনদের ছেড়ে দূর দূরান্তের পূজামণ্ডপে ঢাকে ঢ্যাং কুরা কুর বালু তোলায় ব্যস্ত থাকব। ভাঙ্গা মন নিয়ে বাড়ির লোকেরাও থাকবেন তেমনি এক উদাসীনতা ও একাকিত্বকে আঁকড়ে ধরে।
আরও পড়ুনঃ কৃত্রিম উপায়ে পাখি প্রজননের সস্তার মেশিন উদ্ভাবন
বেলপাহাড়ি ব্লকের জঙ্গলমহলের অন্যান্য ঢাকিরা জানান, দেশের সমগ্র উৎসবপ্রেমী মানুষদের মত তাদের এবং তাদের পরিবারের লোকজনদের সেভাবে পুজো দেখা হয় না। দুটো পয়সার টানে তাদের বাইরে চলে যেতে হয়। তাই কি করে এত বড় পুজোয় হাসি ফুটবে তাদের পরিবারে। পুজোর প্রাক মুহূর্তে ঢাকের প্রস্তুতি বলে সেই শূন্যতায় ঘুরপাক খাচ্ছে বেল পাহাড়ি গ্রামের সমগ্র ঢাকিদের পরিবারে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584