সুদীপ পাল, বর্ধমানঃ
দুর্গাপুজো শুরু হয়ে গেছে। সাবেকিয়ানা না থিম এই নিয়ে যখন বাঙালি চায়ের কাপে বিতর্ক তুলছে তখন ভিন্ন ধরনের পুজো দেখা গেল বর্ধমান রাজবাড়িতে।
রাজবাড়ীতে পটের পূজো হয়। পটচিত্র যেন কথা বলে রাজপরিবারের ইতিহাসের সাথে। বর্ধমানের মহারাজা ছিলেন ত্রিলোকচন্দ। পরাধীন ভারতে মারাঠাদের সঙ্গে যুদ্ধ চলছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানীর।
যুদ্ধচলাকালীনই রাজা ত্রিলোকচন্দের অকালমৃত্যু হয়। রানি বিষণকুমারী রাজ্যে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে দুর্গাপুজো করবেন বলে ঠিক করলেন। সাড়ে সাত ফুট বাই সাড়ে পাঁচ ফুট লম্বা কাঠের ফ্রেমে ক্যানভাসে আঁকা হয় দেবী দুর্গার ছবি। প্রায় ৩০০ বছর বৈষ্ণবমতে পুজো চলে আসছে রাজবাড়িতে।
আরও পড়ুনঃ মুর্শিদাবাদের ভট্টাচার্য পাড়ার পুজোর থিম “পদ্মাবত”
উদয়চাঁদের আমলে মৃত্যুঞ্জয় দে যে পটের দুর্গা এঁকেছিলেন তা রাজপরিবারের দার্জিলিংয়ের বাড়ির সংগ্রহশালায় রয়েছে। ওই পট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দেখে পটের দুর্গা এঁকেছিলেন তাঁর ছেলে হরিশংকর দে।
তবে প্রশ্ন ওঠে, মূর্তি পুজো না করে পটের পুজো কেন প্রচলন করা হল? এ সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে। অনেকে মনে করেন, রাজা মহাতাবচাঁদ ছিলেন একজন উদার সংস্কৃতিমনস্ক মানুষ। দাঁইহাট থেকে প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের নিয়ে এই পট পূজোর শুরু করেন। অনেকে মনে করেন, সেই সময় মৃন্ময়ী মূর্তি পূজা শুরু হয়নি।
অতীতের মতন বিশাল জৌলুস বর্তমান রাজবাড়ির পুজোয় না থাকলেও প্রতি বছরই আয়োজন করা হয় গুজরাটি নাচের।
রাজপরিবারের পুজোয় বর্ধমানবাসীদের উন্মাদনা সব সময় চোখে পড়ে। বর্ধমানের বাসিন্দা অমিতাভ ঘোষ বলেন, এখন বর্ধমানে বেশ কয়েকটি বিখ্যাত পুজো রয়েছে। মানুষের ভিড়ও হয়। তবে বর্ধমান রাজবাড়ির পুজোর যে প্রাচীনত্ব তা দেখতেই মানুষ বর্ধমানের রাজবাড়ীতে ভিড় জমান।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584