শ্যামল রায়,কাটোয়াঃ
কেতুগ্রামের খাটুনডি গ্রামের কৃষ্ণ মন্দির ঘিরে রয়েছে পরপর ছয়টি দুর্গা মন্দির।বাড়ির উঠোনে কৃষ্ণের পাশেই শাক্ত মতে ষোড়শ উপাচার এ পূজিত হন দেবী দুর্গা।কৃষ্ণের পুজোর পর শুরু হয় দেবীর পুজো।এরকম এক কাহিনী নিয়ে কেতুগ্রামের ছয় প্রতি মাই আকর্ষণ বাড়ায় সাত বাড়ির দুর্গা পুজো ঘিরে।কেতুগ্রামের কাটুনডি গ্রামের ভট্টাচার্য্য পরিবারের,এই পুজো সাত বাড়ির পুজো নামে পরিচিত।শতাধিক বছরের প্রাচীন পুজোটিতে এই ভাবেই শাক্ত ও বৈষ্ণবের মেলবন্ধন পুজো হয়ে থাকে।
ভট্টাচার্য্য বাড়ির উঠোনে মাত্র কুড়ি মিটার এর মধ্যে রয়েছে ছয়টি দুর্গা প্রতিমা।পাকা মন্দির রয়েছে দুটি প্রতিমার জন্য বরাদ্দ দুর্গা মন্দির।
বাকি চারটি কে টিনের চাল ও মাটির দেওয়াল রয়েছে।নবমীর দিন হয় ঘট পূজা।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন যে শ্রীকৃষ্ণের মন্দিরে ঘাট দেখে প্রতিপদ থেকে শুরু হয় দুর্গাপুজো।
প্রায় ৬৬০ বছর আগে কাটুনডি ও কুলাই গ্রামের মাঝে একটি জায়গায় বর্তমান কদমতলা নামে পরিচিতি এই পুজো শুরু করেছিলেন রাম গোপাল ভট্টাচার্য নামে এক পন্ডিত ব্যাক্তি।
কথিত আছে যে শ্রী চৈতন্যের দীক্ষাগুরু কেশব ভারতীর বাবা ছিলেন এই রাম গোপাল ভট্টাচার্য।কেশব ভারতী এক ছেলে পতিত সম্প্রদায়কে দীক্ষা দেওয়ায় অপর ছেলে নিশাপতি ওই জায়গা ছেড়ে কাটুনডি গ্রামের বিদ্যাভূষণ কৃষ্ণ মন্দির তৈরি করেছিলেন।
তার পাশেই দুর্গা পুজো শুরু করেন নিশাপতি ভট্টাচার্য।পরিবারের সদস্য দেব নারায়ন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন যে নিশা পতির ৩ নাতি তিনটি পুজো শুরু করেন।পরের প্রজন্মে প্রতিমা বেড়ে যাওয়ায় ৪ টি তে এসে দাড়ায়। তারপরে দৌহিত্র সূত্রে আরও তিনটি পুজো শুরু হয়।প্রায় শতাধিক বছরেরও বেশি সময় ধরে সাতটি পুজো হচ্ছে।তবে এর মধ্যে একটি পুজোর প্রতিমা পুজো হয় না,ঘট বসিয়ে পুজো হয় বলে জানা গিয়েছে।শ্রীকৃষ্ণ কে ভোগ দেওয়ার পরেই ভোগ পান দেবী দুর্গা।সপ্তমী অষ্টমী নবমী এই তিনদিনই দেবীকে দেওয়া হয় মাছ মাংস।
পুজো মন্ডপে বসে কৃষ্ণানন্দ ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন যে শাস্ত্র মতে দুর্গা পুজো না করলে শ্রীকৃষ্ণকে সম্পূর্ণ তুষ্ট করা যায় না।তাই এখানে ষোড়শোপচারে দেবীর পুজো করা হয়ে থাকে।
বিসর্জন এর আগে ৬ প্রতিমাকে নিয়ে আসা হয় শ্রীকৃষ্ণের মন্দিরের সামনে।
আরতী শেষ হলে হরিনাম সংকীর্তন এরপর স্থানীয় পুকুরে প্রতিমা নিরঞ্জন হয়।
তবে এই পুজো ঘিরে ইতিমধ্যেই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে প্রবল উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা গিয়েছে।তবে ভট্টাচার্য্য পরিবারের সূত্রে খবর যে শিশুদের সাহায্য নিয়েই এই পুজো হয়ে আসছে।
একধারে শাক্ত মতে অন্যধারে বৈষ্ণব মতে উভয়ের মেলবন্ধনে পুজো দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ও দর্শনার্থীরা ভিড় করেন কেতুগ্রামের সাতবাড়ির পুজো দেখতে।
আরও পড়ুনঃ পুজোর আগেই জনসাধারকে বড় উপহার দিল বালুরঘাট পৌরসভা
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584