সুদীপ পাল,বর্ধমানঃ
বর্ধমানের গলসি থেকে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে কয়েক কিলোমিটার এগিয়ে গেলেই ছোট জনপদ বাবলা গ্রাম৷ গলসির এই বাবলা গ্রাম তেমনই এক গ্রাম যেখানে দুর্গাপুজো ‘নিষিদ্ধ’৷ না কোন সাম্প্রদায়িক কারণ নয়। তবে কি কারণে শারদোৎসব থেকে নিজেদের সরিয়ে রেখেছে বাবলা? গ্রামবাসীরা বলছেন, পর পর দু’বছর অষ্টমীর দিন দু’টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় দুইজনের। এরপর পুজো বন্ধ হয়ে যায়৷ বছর ১৫ আগেও গ্রামের যুবকরা উদ্যোগী হয়ে দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছিলেন৷ সেবারও অষ্টমীর দিন একই রকম দুর্ঘটনা ঘটে৷ তার পর থেকে পুজো বন্ধ বাবলা গ্রামে৷
বাবলা গ্রামে উঠে এসেছিলেন গলসির আদরাহাটি গ্রামের সেন পরিবার৷ আদরাহাটিতে তাঁরা ঘটা করে দুর্গাপুজো করতেন৷ বাবলা গ্রামে আসার পর সেখানেও তাঁরা দুর্গাপুজো শুরু করেন। কিন্তু দেখা যায় বছর ঘুরতে না ঘুরতেই মৃত্যু হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের।দুর্গাপুজো যেন ‘অশুভ’ হয়ে উঠছিল গ্রামে৷ এই সেন পরিবারের সাগর সেন কুসংস্কারে আমল না দিয়ে নতুন উদ্যোগে পুজো শুরু করেন। কিন্তু তিনিও হয়ত জানতেন না কি মর্মান্তিক পরিনতি তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে। অষ্টমীর দিন পাশের ইরকোনা গ্রামে পদ্মফুল তুলতে গিয়েছিলেন তিনি।সেখানেই পদ্মপুকুরে ডুবে মারা যান৷ গ্রামবাসীরা বলছেন,যে পুকুরে ডুবে সাগরের মৃত্যু হয় তাতে হাঁটুজল থাকে৷ অথচ সাগর ভালো সাঁতারু ছিল এবং দামোদর পারাপার করত। সেই শেষ৷ আর দুর্গাপ্রতিমা আসেনি গ্রামে।পুজো এলেই তাই মন খারাপ হয়ে যায় বাবলা গ্রামের।গ্রাস করে উদাসীনতা আর ভার হয়ে থাকা স্মৃতি।ফাঁকা পড়ে থাকে দুর্গা মন্ডপ আর ছেলে হারানো মায়ের কোল। বাবলা গ্রামের কাশের বনটিও নিথর।দুর্গা পুজোয় মৃত্যু শোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি সে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584