মনিরুল হক,কোচবিহারঃ
ভোটের ফল ঘোষণার আগেই রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত দিনহাটার সিতাই ব্লক।দফায় দফায় তৃণমূল-বিজেপি কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিজেপি দলের পক্ষ থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠে। দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে জখম হয় ৩-৪ জন বিজেপি কর্মী। আহতরা কোচবিহারে একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে ভর্তি রয়েছে।ভোটের ফলের ঘোষণার আগেই বিজেপি কর্মী জয়দেব বর্মন গুলিবিদ্ধ হয়,এ ছাড়াও আহত আরও ৪ বিজেপি কর্মী৷ গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের অভিযোগ,সিতাই কেন্দ্রের তৃণমূলের বিধায়ক জগদীশ বর্মা বসুনিয়ার সহযোগীর বিরুদ্ধে।তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলীরা এলোপাথাড়ি গুলি চালায়।বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী আহত হন।এখনও একজন বিজেপি কর্মী নিখোঁজ। এক বিজেপি কর্মীর দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ।ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনীর টহল চলছে।বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি মালতি রাভা,সহ সভাপতি ব্রজগোবিন্দ বর্মণ অভিযোগ করে বলেন সোমবার সন্ধ্যায় সীতাইয়ের ব্রহ্মোত্তর চাত্রা কালীরহাট বাজারে দলীয় কর্মীদের সাথে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা ইচ্ছাকৃত ভাবে বচসায় জড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুনঃ বাইক-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত পুলিশ কর্মী
এই ঘটনার পরই এলাকারই এক দলীয় কর্মীর দোকানে ভাংচুর করা হয়। সেই ঘটনার পর রাতে নেতাজি বাজারের চার চৌপতি এলাকায় বিজেপির ৬/২৭ নম্বর বুথ সভাপতি জয় দেব বর্মন,মিঠুন বর্মন প্রমূখ দের মারধর করা ছাড়াও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়।এরপর তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হলে জয়দেব বর্মন নামে বিজেপি বুথ সভাপতি শরীরে সেই গুলি এসে লাগে।বর্তমানে এই দুই কর্মী কোচবিহারের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন বলে দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি মালতি রাভা জানান।
বিজেপির জেলা সভাপতি মালতি রাভা বলেন, “লোকসভা নির্বাচনে হেরে যাচ্ছে বলে বুঝতে পেরে ওরা ইচ্ছাকরে এসব ঘটাচ্ছে।আমাদের কয়েকজন কর্মী চায়ের দোকানে গিয়ে চা খাচ্ছিলেন।ওই সময় তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা এসে তাঁদের চায়ের কাপে থুঃথুঃ ছিটিয়ে দেয়। এই নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।এই গণ্ডগোলের সৃষ্টি করেছে।” স্থানীয় বিজেপি নেতা প্রশান্ত বর্মণ বলেন, “দিনভর সন্ত্রাসে আতঙ্কিত হয়ে আমাদের কর্মীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন।সন্ধ্যার পর তিন কর্মী বাইকে চেপে পালিয়ে যাওয়ার সময় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা প্রথমে গুলি চালায়।পরে ধারালো অস্ত্র ও লোহার রড দিয়ে জখম করে ফেলে রাখে।
অনেকটা সময় পেরিয়ে যাওয়ার আমাদের কর্মীরা তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।তৃণমূল কংগ্রেসের সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ চন্দ্র বসুনিয়া বলেন, “সিতাইয়ে কোন রাজনৈতিক গণ্ডগোল হয় নি। শুনেছি রাতের দিকে কিছু গরু পাচারকারীদের মধ্যে টাকার ভাগ বাটোয়ারানিয়ে গণ্ডগোল হয়েছে।তাঁদের মধ্যে যদি কেউ বিজেপির কর্মী থাকতে পারেন।কিন্তু ওই গণ্ডগোলে তৃণমূল কংগ্রেসের কেউ ছিল না।”
বিষয়টি নিয়ে দিনহাটার এসডিপিও মানবেন্দ্র দাস বলেন, “ঘটনায় কোন রকম গুলি চলেনি। বল্লম দিয়ে আঘাত করার ঘটনা ঘটতে পারে।
ওই ঘটনা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায় নি।বিষয়টি জানার পরে রাতেই সিতাই থানার আইসি নেতৃত্বে পেট্রলিং শুরু হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।”
২৩ মে গোটা দেশের সাথে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রেও ভোট গণনা হবে।তার মাত্র দুদিন আগে সিতাইয়ে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে ওই সংঘর্ষের ঘটনায় সাধারণ বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে।অনেকেই আশঙ্কা করেছেন, প্রশাসন সক্রিয় না হলে ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরেই সিতাই তো বটেই কোচবিহার জেলার বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়বে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584