মনিরুল হক,কোচবিহারঃ
ফের উত্তপ্ত শীতলখুচি।সন্দেশখালির ঘটনার প্রতিবাদে এদিন বিজেপির পথ অবরোধ কর্মসূচি থেকে বাড়ি ফেরার পথে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়াল মাথাভাঙ্গার শীতলখুচিতে।ওই ঘটনায় আহত হয়েছে ৬ জন। তাঁদের মধ্যে পায়ে গুলি লেগে আহত হয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি হেমচন্দ্র বর্মণের ছেলে জনক বর্মন(৪৫)।
অন্যদিকে তরণী বর্মণ(৩৮)নামে আর এক যুবককের বুকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপা মারা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।এছাড়াও আহত হয়েছে আরও ৪ জন। তাঁরা হলেন শ্যামল বর্মণ(৩০), লিপু বর্মণ(২৭), নগেন্দ্র বর্মণ(৪৫), মদন মোহন বর্মণ(৫৫)। আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ দুষ্কৃতী হামলায় জখম পুলিশ অফিসার,চলছে সার্চ অপারেশন
আহতদের মাথাভাঙ্গা হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে।আতঙ্কিত শীতলখুচি বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকান পাট বন্ধ করে দিয়ে কার্যত পালিয়ে গিয়েছে। মাথাভাঙা-শীতলখুঁচি ও সিতাই রোডের যানবাহন চলাচলও কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে গিয়েছেন কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহ জেলা পুলিশের পদস্থ আধিকারিকরা।তবে এখনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি বলে জানা গিয়েছে।
কোচবিহার বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি হেম চন্দ্র বর্মন বলেন, “সন্দেশখালিতে বিজেপি কর্মীদের খুনের প্রতিবাদে সারা রাজ্যের সাথে শীতলখুচিতেও পথ অবরোধ হয়।ওই পথ অবরোধ সেরে আমাদের কর্মীরা বাড়ি ফিরছিল সে সময় বাগমারা এলাকায় কিছু লোক আমাদের কর্মীদের উপর হামলা চালায়।
এরপর শীতলখুঁচির বিভিন্ন এলাকা বারোমাসিয়া, গোলেনাহাটি, পূর্ব শীতলখুঁচি, পাগড়ি মারি, লালবাজার এলাকায় গোষ্ঠী সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর দলে দলে কিছু লোক শীতলখুঁচির দিকে আসতে শুরু করে।আমার বাড়ির পাশে কৃষি ফার্মের কাছে আমার ছেলে দাঁড়িয়ে ছিল।তার পায়ে গুলি করা হয়। তাকে এখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।এই ঘটনার পিছনে তৃনমূলের মদত রয়েছে।”
যদিও তৃনমূল কংগ্রেস নেতা তথা শীতলখুঁচির বিধায়ক হিতেন বর্মন বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “বিজেপির মিছিল থেকে হামলা চালানো হয়। সাধারন মানুষ সেই হামলার প্রতিবাদ করে।এই ঘটনার সাথে তৃনমূলের কোন যোগ নেই।খবর পাচ্ছি শীতলখুঁচির বিভিন্ন এলাকায় বিজেপির লোকজন উস্কানি দিয়ে গণ্ডগোলের সৃষ্টি করছে।
পুলিশকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।”
তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি বিনয় বর্মণ বলেন, “শীতলখুচিতে বেশ কিছু প্রবীন মানুষকে মারধোর করে বিজেপির দুষ্কৃতীরা। হাসপাতাল মোড় এলাকায় তাঁরা দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করে।গুজরাট কান্ড ঘটিয়ে এরা বাংলার আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার চক্রান্ত করছে বিজেপি।
আমরা তা প্রতিহত করবো।”বিজেপির অভিযোগের কথা অস্বীকার করে বিনয় বাবু বলেন, “এখন তো তৃণমূল কর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছে না। সেখানে হামলা করবে কি করে? এটা ওদের অশান্তি তৈরি করে অন্যের উপড়ে দায় চাপিয়ে দেওয়া আরেকটা চক্রান্ত।”
কোচবিহারের জেলা পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্তা বলেন, “ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত এক জনকে আটক করা হয়েছে।পুলিশি টহল চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা চলছে।” চাপা উত্তেজনা রয়েছে এলাকায়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584