তিন দিনব্যাপী শাস্ত্রীয় নৃত্য অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি

0
202

তপন চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুরঃ

গত ২০শে ডিসেম্বর থেকে ২২শে ডিসেম্বর তিন দিন ব্যাপী নৃতি নৃত্য বিদ্যালয়ের উদ্যোগে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ শহরের বিধান মঞ্চে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শেষ হল তিন দিনের শাস্ত্রীয় নৃত্যের উপর ওয়ার্কশপ, কর্মশালা ও শাস্ত্রীয় নৃত্য উৎসব।

dance programme | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

প্রথম দিন সন্ধ্যায় ছিল আলোচনা সভা। বিষয় – “নৃত্যে অভিনয়ের ভূমিকা”। বক্তা ছিলেন মমতা মহারাজ, ডক্টর জয়ন্ত ভট্টাচার্য, পাপিয়া ভৌমিক ও কাজী আলী আফতাব।  বিষয়টি বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রাঞ্চল ভাবে উপস্থাপন করেন বক্তারা।

dance | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান শুরু হয় প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন সুশ্রী মমতা মহারাজ , ড: জয়ন্ত ভট্টাচার্য্য, অরিন্দম সরকার মহাশয়রা । অনুষ্ঠান শুরু হয় নৃতি কত্থক কেন্দ্রের শিক্ষার্থীদের “বন্দনা”-র মাধ্যমে।  এরপর মঞ্চে আসেন সুদূর ব্যাঙ্গালোর থেকে আগত শ্রীমতি পাপিয়া ভৌমিক, গণেশ বন্দনা দিয়ে শুরু করেন পাপিয়া । টুকরা, আমোদ, পরন, তৎকার পরিবেশন করেন। পাপিয়ার পায়ের কাজ ও অভিনয় অসাধারণ। একটি ঠুমরী গানের সঙ্গে খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলেন নববিবাহিতা বধুর শিকড় ছেড়ে শ্বশুরালয়ে যাওয়ার যন্ত্রণা। কুচিপুড়ি নৃত্যের ডালি নিয়ে আসেন বহরমপুর থেকে আগত কাজী আলী আফতাব। নিপুন ভঙ্গিমায় পরিবেশিত হয় নৃত্য। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কাজী থালার  উপরে দাঁড়িয়ে কুচিপুরি নৃত্যের বলবানি দর্শকদের উপহার দেন। নৃতি কত্থক কেন্দ্রের শিক্ষার্থীরা মঞ্চে নিয়ে আসে  “তালিম “। তিন ভাগে ভাগ করা হয় তালিম কে – ছোটরা নাচে ত্রিতাল, মাঝের শিক্ষার্থীরা উপস্থাপন করেন  ঝাঁপতাল আর জয়নী ভট্টাচার্য, রঞ্জিনি সরকার ও রত্নশ্রী ঘোষ উপস্থাপন করেন ধামার। এই বিভাগের প্রত্যেকের নাচ দর্শকের উচ্চ প্রশংসা লাভ করে। জয়নীর  অভিব্যক্তি ও নৃত্য ভঙ্গিমা এক কথায় অসাধারণ। রঞ্জিনির  নাচের মুদ্রা, হস্ত চালনা উচ্চ প্রশংসার দাবি রাখে। রত্নশ্রী বয়সে ছোট হলেও নৃত্যে যথেষ্ট পরিণত। এদিনের অনুষ্ঠানের শেষে আসেন নৃতি কত্থক কেন্দ্রের অধ্যক্ষা শ্রীমতি শর্মিষ্ঠা সাহা। “সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে” রবীন্দ্র সংগীতের সঙ্গে কত্থকের  মেলবন্ধন ঘটান শর্মিষ্ঠা নৈপুণ্যের সঙ্গে।

আরও পড়ুনঃবড়দিন উপলক্ষে গিরিশ পার্কে ক্রিসমাস কার্নিভাল

বাইশে ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মঞ্চে আসে “অধরা প্রেম” নামক নৃত্যনাট্য নিয়ে বহরমপুরের কলাক্ষেত্র। কত্থক কেন্দ্রের কচিকাঁচা ইংরেজি ছড়ার মাধ্যমে তেহাই দেখায় “খেলার ছলে” শীর্ষক উপস্থাপনায়। নৃতি  কত্থক কেন্দ্রের নিজস্ব পরিবেশনা “নারী” উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে। সমাজে নারীর অবস্থান, বাল্যবিবাহ, ধর্ষণ, কন্যা ভ্রুণ হত্যা এবং এসবের বিরুদ্ধে নারীর প্রতিবাদ দক্ষতার সাথে তুলে ধরা হয়। প্রধান ভূমিকায় শর্মিষ্ঠা সাহা। অসাধারণ অনুষ্ঠান শেষ হয় সুশ্রী মমতা মহারাজের নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে। কত্থকের  বিভিন্ন আঙ্গিক অন্যমাত্রা সাবলীলতা ও শৈলী নিয়ে উপস্থিত করেন তার “গান্ধারী” নামক নৃত্যনাট্যে। তিনি একই সঙ্গে চারটে চরিত্রের অভিনয় করে দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করেন। এই তিন দিনের অনুষ্ঠানে সংগৎকার হিসেবে ছিলেন কলকাতা থেকে আগত সেতার চন্দ্রচূড় ভট্টাচার্য, তবলায় প্রতীক মুখার্জি, কন্ঠে শুভাশিস ভট্টাচার্য।  এদের সঙ্গত এককথায় তিন দিনব্যাপী শাস্ত্রীয় নৃত্যের অনুষ্ঠানটিকে অন্য মাত্রা এনে দেয় ।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here