পরিযায়ী পাখিদের নিরাপত্তা ব্যতীত কেন্দুয়া আকর্ষণ হারাবে

0
225

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝাড়গ্রামঃ

শহর ঝাড়গ্রাম থেকে জাম্বনির জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র চিল্কিগড় কনক দূর্গা মন্দির যাওয়ার পথে ৯ কিমি দূরে ‘পাখিদের গ্রাম’ কেন্দুয়া৷কেন্দুয়া গ্রামের জনৈক বিধান মাহাতোর বাড়ি লাগোয়া বহু প্রাচীন দুটি তেঁতুল গাছের মগডালে প্রায় ২০০-৩০০ টি পরিযায়ী এশিয় শামুকখোল পাখির রোজনামচা দেখা যায়৷ বর্ষায় ক্রান্তিয় অঞ্চলের ভ্যাপসা গরম আর স্যাঁৎসেঁতে পরিবেশ শামুকখোলের প্রজননের জন্য আদর্শ৷

নিজস্ব চিত্র

তাই শামুকখোল প্রতি বছর বর্ষার আগে বহু পথ পাড়ি দিয়ে সম্ভবত সুদূর সাইবেরিয়া থেকে কেন্দুয়া আসে৷ বাসাবাঁধে,ডিম পাড়ে, বাচ্চার জন্মদেয়, আর বাচ্চারা উড়তে শিখলেই হেমন্তের শুরুতে দল বেঁধে ফিরে যায় নিজেদের স্থায়ী ঠিকানায়৷ফলে এই ছয় মাস দক্ষিন বঙ্গের বিভিন্ন জেলা এবং সংলগ্ন ওড়িশা, ঝাড়খন্ড থেকেও কয়েক হাজার পর্যটক বিপন্ন প্রজাতির শামুকখোল দেখতে ভিড় করেন৷শহরাঞ্চল তো দূরঅস্ত,এখন প্রত্যন্ত এলাকাতেও পাখির দেখামেলা ভার৷ হারিয়ে যেতে বসেছে কাক, চড়ুই, বকের মতো নানা প্রজাতির দেশীয় পাখি৷সে রকম আবহে কেন্দুয়া এখনও পাখির ডাকে ঘুমোয়, পাখির ডাকেই জাগে৷ সারাদিন পাখির কিচিরমিচির যেন এ গ্রামের আবহসংঙ্গীত৷ ছবি তুলতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান তারা এই পাখিদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন৷ চোরাশিকারিরা রোজ রাতে গাছে উঠে পাখির ছানা চুরি করে৷ সব জেনেও তারা ঝুটঝামেলায় আর যেতে চাননা৷কেননা কয়েক পুরুষ ধরে পাখিদের দেখভাল করে,আগলে রেখেও কোনরকম সরকারি সাহায্য সহযোগিতা না পেয়ে তারাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে৷ পাখিদের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশাসনও উদাসিন৷বছর আঠার আগে ঝাড়গ্রাম বনবিভাগ চোরাশিকারিদের হামলা ঠেকাতে কয়েক জন পাহারাদার নিয়োগ করেছিল,তাও বছর পাঁচেক পরেই তুলে নেওয়া হয়৷ কয়েকশ বছরের পুরন তেঁতুল গাছ গুলিও আগের মতো মজবুত নেই৷ যেকোন সময় অল্প ঝড়েই ভেঙে পড়তে পারে৷ চাষের কাজে রাসায়নিকসার, কীটনাশক ব্যবহারের ফলে শামুকখোলের খাওয়ার ঝিনুক, শামুক, ছোট ছোট ব্যাঙ ও কাঁকড়াও কমছে দিন দিন৷

নিজস্ব চিত্র

পাখিদের নিরাপত্তার জন্য গ্রামের কোন অনুষ্ঠানে তারস্বরে মাইক বাজানোয় লাগাম, শব্দবাজি রোধ, সংলগ্ন এলাকা সাইলেন্স জোন হিসেবে ঘোষনা করা ইত্যাদি কোন প্রশাসনিক উদ্যোগই নেই৷এভাবে চলতে থাকলে পরিযায়ী পাখিরা সাঁতরাগাছি ঝিলের মতো আর কেন্দুয়ার পথ মাড়াবেনা৷তখন কমবে জীববৈচিত্র,ভেঙে পড়বে খাদ্যশৃঙ্খল, ফলে প্রভাব পড়বে বাস্তুতন্ত্রের উপর৷আর কেন্দুয়া গ্রামকে নিয়ে পর্যটন দফতরের পরিবেশ পর্যটনের চিন্তাভাবনা বাধা পাবে৷ হয়তো বা ঝড়গ্রামের পর্যটন মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে পাখি গ্রাম কেন্দুয়া

আরও পড়ুনঃ এন আর সি নিয়ে সঠিক আইনি তথ্য দিতে আলোচনা সভা কোচবিহারে

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here