সপ্তর্ষি সিংহ, স্পোর্টস ডেস্কঃ
“সব খেলার সেরা বাঙালীর তুমি ফুটবল।” ডার্বি শব্দটা উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে এক লহমায় মনে পড়ে ঘটি বনাম বাঙালের লড়াই। সেই দামামার উত্তেজনার রেশ ময়দান থেকে গ্যালারি পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। ঘটি বনাম বাঙালের যে আদি অনন্তকালের লড়াই, তার অপেক্ষায় থাকে রাজনৈতিক ক্রীড়াপ্রেমী থেকে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা।
চলতি মরশুমের প্রথম ডার্বিতে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটতে চলেছে আর কয়েক ঘন্টার পর। কিন্তু ডার্বির সেই আঁচ এখন যেন কিছুটা ফিকে হয়ে পড়েছে। দলে বাঙালি খেলোয়াড়দের উপস্থিতি ক্রমশ তলানিতে নেমে আসছে। ভিন্ন রাজ্যের খেলোয়াড়দের পাশাপাশি ভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দের উপর ভরসা করে জয়ের আশায় বুক বাঁধে সমর্থক থেকে কর্মকর্তারা। সময়ের দ্রুততার সঙ্গে গঙ্গাপাড়ের ক্লাবগুলিকে ক্রমশ গ্রাস করছে আর্থিক সংকট। বিষফোঁড়ার মতো কর্পোরেট মোড়কে আইএসএল খেলা অন্যতম চ্যালেঞ্জ হয়েছে। এই চ্যালেঞ্জকে কামওভার করতে ক্লাবগুলি শরণাপন্ন হয়েছে কর্পোরেট সংস্হাগুলির।
ইতিমধ্যে এটিকে ও মোহনবাগান সংযোগকরণে আইএসএল খেলা নিশ্চিত হয়েছে। কিন্তু এই চুক্তি নিয়ে তৈরি হয়েছে আশঙ্কার দোলাচল। ইষ্ট-মোহন নিয়ে ডার্বির যে উত্তাপ তা আইএসএল-এ কতটা টিকে থাকবে তা নিয়েও রয়েছে সন্দিহান। কিন্তু মোহনবাগান কর্তৃপক্ষ আশাবাদী যে আগামী দিনে মোহনবাগানের অস্তিত্ব বজায় থাকবে। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী ও বাগান সমর্থক সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, এই চুক্তি নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা করার কোনও কারণ নেই। এই চুক্তি অবশ্যাম্ভাবী ছিল। আগামী দিনে ক্লাব চালাতে হলে পুঁজিপতি গোষ্ঠির সঙ্গে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে।
তবে এসবের বাইরে গিয়েও লাল-হলুদ নিয়ে নিজের আবেগ প্রসঙ্গে মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম বলেন, “ক্লাস সেভেন-এইটে পড়াকালীন ইষ্টবেঙ্গলের প্রতি আমার ভালোবাসা তৈরি হয় যা আজও অটুট। সেই তখন থেকে দীর্ঘ সময় নিয়মিত মাঠে। খেলা দেখতে যেতাম। একসময় পল্টু দা ক্রিকেটের দায়িত্ব দেয় কিন্তু এখন কাজের চাপে সময় আর সুযোগ হয় না। তবে খেলার খবর রাখি।”
ভারতীয় ফুটবলের নিয়ামক সংস্হা নির্ধারিত দেশের একটা টুর্নামেট আইএসএল খেলা নিয়ে তীব্র বিরোধিতা করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী ও লাল হলুদ সমর্থক ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, শতবর্ষ প্রাচীন একটি ক্লাব যেভাবে কর্পোরেট সংস্হার সঙ্গে মিশে যাচ্ছে, তাতে বঙ্গ ফুটবলের নেতিবাচক দিকটি ফুটে উঠছে। একসময় যে লিগগুলি চলত তা আজ বন্ধ হয়ে গেছে। তাই আগামী দিনে ক্লাব নিজেদের ঐতিহ্য কতটা ধরে রাখতে পারবে তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন ব্রাত্য বসু।
আরও পড়ুনঃ খেলার মাঠে বঙ্গভঙ্গ আজ, ডার্বিতে মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান
তবে এই প্রসঙ্গে লাল হলুদের কর্মকর্তাদের দাবি সমর্থকদের আবেগ গুরুত্বপূর্ণ। ময়দানে নিয়ে রাজ্যের নেতিবাচক দিকগুলি যেমন প্রকটভাবে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে তার মধ্যে ইতিবাচক দিক উঠে আসছে।
দুইদলের একঝাঁক প্রমিলা ব্রিগেডের সমর্থন ইতিমধ্যে নজর কেড়েছে। প্রমা, বর্ষা অথবা অদিতি-র মহিলারা মাঠে এসে যেভাবে দলকে উজ্জীবিত করছে তা বঙ্গ ফুটবলে এখনও কিছুটা আশার আলো সঞ্চার করছে। এখন দেখার আজ যুবভারতীর রণক্ষেত্রে দুই স্প্যানিশ কোচের মহারণে কে বাজিমাত করে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584