এক্সক্লুসিভ ইন্টারভিউঃ কিছু কন্ডিশন আসায় চান্স পেয়েও বড়পর্দার কাজ ছেড়েছেন ইন্দ্রাক্ষী দে

0
1207

নবনীতা দত্তগুপ্ত

এই মুহূর্তে বাংলা টেলিভিশনে ভিলেনদের মধ্যে একজন ইন্দ্রাক্ষী দে। ‘যমুনা ঢাকি’ ধারাবাহিকে তাঁর দুষ্টু, ষড়যন্ত্রী ইমেজ দেখছে দর্শক। তাঁর সঙ্গে দূরভাষে আড্ডা দিলেন নবনীতা দত্তগুপ্ত।

Indrakshi Dey | newsfront.co

নবনীতাঃ আজকাল আর্যা নামেই তোমাকে বেশি লোকে চেনে। আসলে একটা চরিত্র যখন প্রতিষ্ঠা পেয়ে যায় তখন তাকে সেই চরিত্রের নামেই লোকে চিনতে শুরু করে। কেউ আজকাল এই নামে ডাক দেয়?

ইন্দ্রাক্ষীঃ ঠিক বলেছো। এখন বেশি এই নামেই পরিচিত আমি। ডাকেও অনেকে ওই নামে। খুব ভাল লাগে। মনে হয় দর্শকের মনের কোথাও না কোথাও হয়ত জায়গা তৈরি করতে পেরেছি। খারাপ কথাও শুনেছি এই চরিত্রের জন্য। কিন্তু এটাই সাফল্য। লোক আমাকে মন দিয়ে না দেখলে আমায় খারাপ কথা শোনাত না। আমি এনজয় করি।

নবনীতাঃ এবার বলো নেগেটিভ রোলে মজাটা ঠিক কোথায়?

ইন্দ্রাক্ষীঃ নেগেটিভ রোলে অনেক শেডস আছে। তুমি খেয়াল করলে দেখবে আমি কিন্তু ‘হৃদয়হরণ বি.এ পাশ’- এ পজিটিভ ও নেগেটিভ দুই রোলই করেছি। আবার ‘যমুনা ঢাকি’তেও আমি প্রথমে শান্তশিষ্ট, শিক্ষিতা, রুচিশীলা একটি মেয়ে ছিলাম। যার সঙ্গে সঙ্গীতের বিয়ে হওয়ার কথা। এবং সে সঙ্গীতকে ভালোবাসে।

Indrakshi Dey | newsfront.co
‘যমুনা ঢাকি’তে ইন্দ্রাক্ষী দে

এরপর সঙ্গীত যখন যমুনাকে পছন্দ করতে শুরু করল তখনই বিগড়ে গেল আর্যা। মানে আমি। নেগেটিভ রোলে নিজেকে অনেকরকম ভাবে তুলে ধরা যায়। এক্সপ্রেস করা যায় অনেককিছু। পজিটিভ রোল সোজা পথে চলে। সে ভাল, ভাল এবং ভাল। কিন্তু নেগেটিভ রোলের পিছনে কারণ থাকে সে কেন পজিটিভের প্রতিপক্ষ। ভাল হওয়ার তো কোনও কারণ থাকে না। একটা মানুষের চুড়ান্ত খারাপ হওয়ার পিছনে কোনও না কোনও কারণ অবশ্যই থাকে।

নবনীতাঃ এমন অনেক সময়েই হয়েছে একবার নেগেটিভ রোলে ভাল সাড়া ফেলতে পারলে নেগেটিভ রোলই আসতে থাকে। এমনটা তোমার ক্ষেত্রে হলে খুশি হবে?

ইন্দ্রাক্ষীঃ একদম ঠিক বলেছো কথাটা। এটা আমার সঙ্গেই হয়েছে। প্রথম সিরিয়ালে নেগেটিভ রোলই করেছি। এরপর একের পর এক নেগেটিভ রোলই আসছে। পজিটিভ দিয়ে শুরু হলেও পরে সেটা হয়ে যাচ্ছে নেগেটিভ। হ্যাঁ খুশি হই ঠিকই। নিশ্চয়ই নেগেটিভ রোলে একটু হলেও নজর কাড়তে পেরেছি। তাই সেরকম চরিত্রের জন্য ডাক পাই বারবার। তবে, হিরোইন হওয়ার ইচ্ছে আছে। সিরিয়ালে লিড করার ইচ্ছাও আছে।

আরও পড়ুনঃ শীঘ্রই ক্যানসারকে হারিয়ে ফিরছি, জানালেন সঞ্জয়

নবনীতাঃ অভিনয়ের জন্য বিজ্ঞাপন কি আজকাল কম করা হচ্ছে?

ইন্দ্রাক্ষীঃ হ্যাঁ, তা তো একটু হচ্ছেই৷ সময় কম পাচ্ছি। মেগা সিরিয়াল মানেই টাইট শিড্যুল। পুজোয় ছুটি থাকবে বলে ব্যাংকিং বাড়ানো হচ্ছে। তবে সেকেন্ড রবিবার ছুটি থাকলে বা অন্য কখনও সময় পেলে মডেলিং করি। অভিনয় আমার ফার্স্ট প্রায়োরিটি। তবে, মডেলিং-ও আমার কাছে কম আদরের নয়। আমি দুটোকেই ভালোবাসি৷

Indrakshi Dey | newsfront.co

নবনীতাঃ এই লকডাউনে কী করলে?

ইন্দ্রাক্ষীঃ এই লকডাউনে কিছুই করার ছিল না। জুন থেকে কাজ শুরু করেছি। লকডাউনের সময় বাড়িতেই সময় কাটিয়েছি। রান্না করেছি। অনেক নতুন রান্না নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করেছি। ওয়ার্ক আউট করেছি। ঘুমিয়েছি। এই করেই কেটে গেছে।

নবনীতাঃ তোমার লুক বড়পর্দার জন্য মানানসই। ডাক পেয়েছো কখনও?

ইন্দ্রাক্ষীঃ থ্যাঙ্কস দিদি, এই কমপ্লিমেন্টের জন্য। অনেকেই বলে মুভিতে ট্রাই করার জন্য। আমি একটা বড় হাউজে সিলেক্টও হই একবার। হিরোইন নিউ ডেবিউ সিলেকশন চলছিল। অডিশন দিই। সিলেক্ট হই। কিন্তু সবশেষে এমন কিছু কন্ডিশন্স এল যেসব কাজটা করতে পারলাম না আমি।

Indrakshi Dey | newsfront.co

নবনীতাঃ ঝুমুর, হৃদয়হরণ বি.এ পাশ, জয় কানহাইয়া লাল কি ধারাবাহিকে তোমায় দেখেছে দর্শক। যমুনা ঢাকি এই সবগুলোর থেকে কি বেশি জনপ্রিয়তা দিল?

ইন্দ্রাক্ষীঃ অবশ্যই দিল। তবে, হৃদয়হরণেও আমার ক্যারেক্টারটা ভাল ছিল। কিন্তু সময়টার এমন ছিল অনেকেই হয়ত দেখত না। ফলে মানুষের কাছে কম পৌঁছেছে বলে আমার মনে হয়। কিন্তু স্টোরিটা দারুণ ছিল৷ সেদিক থেকে দেখতে গেলে ‘যমুনা ঢাকি’ খুব ভাল সময়ে সম্প্রচারিত হয়। গল্পও ভাল। জনপ্রিয় তো হবেই। অনেক লোকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে ধারাবাহিকটা। ফলে চরিত্রগুলোও দর্শকের কাছে চেনা পরিচিত হয়ে গেছে। আমিও সেভাবেই পরিচিত বা জনপ্রিয় যাই বলো সেটা হয়ে উঠছি হয়ত দর্শকের কাছে।

Indrakshi Dey | newsfront.co

নবনীতাঃ সেদিক থেকে দেখতে গেলে ‘ঝুমুর’ ছাড়া সবকটি ধারাবাহিকই ব্লু’জ-এর মানে স্নেহাশিস চক্রবর্তীর। মানুষটিকে অভিনেতা বানানোর কারিগর বলা হয়। তুমি কী বলবে এই ব্যাপারে?

ইন্দ্রাক্ষীঃ তোমার এই কথার সঙ্গে আমি লক্ষাধিকবার একমত। স্নেহাশিস দা’কে সত্যিই অভিনেতা বানানোর কারিগর বলা হয়। নতুনদের চান্স দেন দাদা। কেউ ভাল অভিনয় পারুক বা না পারুক, হেল্প করেন সকলকে। শেখান নিজের হাতে ধরে। ‘ঝুমুর’ ছিল যিশু সেনগুপ্ত’র প্রোডাকশন। ওটা আমার প্রথম কাজ টেলিভিশনে। তার পর থেকে আজ অবধি যতগুলো কাজ করেছি তা দাদার হাউজেই। আজ আমি যতটুকু তার পিছনে উনি। প্রত্যেকটা চরিত্র সম্বন্ধে একটা পরিষ্কার ধারণা থাকে দাদার কাছে। অসুবিধা হলেই দাদাকে ফোন করে জানতে চাইলে জেনে ফেলা যায়। খুব সুন্দর করে একটা চরিত্রকে বুঝিয়ে দিতে পারেন স্নেহাশিস দা।

Indrakshi Dey | newsfront.co

নবনীতাঃ শুটিং সেরে বাড়ি ফিরে কী শুধুই রেস্ট নাকি অন্যকিছুও করা হয়?

ইন্দ্রাক্ষীঃ না গো, বাড়ি ফিরে রেস্ট হয় না৷ একা থাকি এখানে। ঘর পরিষ্কার, বাসন মাজা, জামা কাচা, স্নান, পুজো, রান্না সব করে তারপর বসি। সকালে কলটাইম থাকলে কিছুই করে বেরোতে পারি না। ফলে রাতে ফিরে সবই করতে হয়। তারপর খাওয়া-শোওয়া। খুবই হেকটিক লাইফ আমার। তবু, কাজের জন্যই তো করছি সব। এনজয় করি।

আরও পড়ুনঃ সৌমিত্রর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ! শারীরিক অবস্থাও উন্নতির দিকে

নবনীতাঃ এই পুজোয় কী প্ল্যানিং?

ইন্দ্রাক্ষীঃ কোনও প্ল্যানিং নেই গো। পুরো মাটি হয়ে গেল সব। কত ব্যস্ত থাকি এই সময়। শো থাকে, পুজো ওপেনিং থাকে। আর এবার দেখো কী রকম অবস্থা। আশাকরি মা দুর্গা সামনের বছরটা রঙিন করে দেবেন৷ ঘরেই থাকব।

Indrakshi | newsfront.co

নবনীতাঃ পার্লারে যাওয়া হচ্ছে নাকি ঘরেই সেরে নিচ্ছ রূপচর্চা?

ইন্দ্রাক্ষীঃ পার্লারে যেতেই হবে এমনভাবে আমি অভ্যস্ত নই। খুব কমই যাই। বাড়িতেই নিজের মতো করে একটু যত্ন নিই নিজের।

নবনীতাঃ শীত আসছে। নিজে কীভাবে ত্বকের, চুলের যত্ন নাও যদি বলো পাঠককে

ইন্দ্রাক্ষীঃ খুব বেশি কিছু করি না আমি। চুলে অয়েল মাসাজ, শ্যাম্পু, কন্ডিশনিং করি। মাঝে মধ্যে একটু স্পা। আর ত্বকে বেশি বডি লোশন আমার স্যুট করে না। তাই তেলই মাখি। একটা কথা এই প্রসঙ্গে এই মুহূর্তে না বললেই নয়, এতদিন গরমে আমরা অনেকবার স্নান বা কাচাকুচি করে পরিষ্কার জামাকাপড় পরতে পেরেছি। শীত আসছে। এত কিছু তো করা যাবে না। ঠাণ্ডা লেগে যাবে। তাই খুব সাবধানে থাকতে হবে এই সময় আমাদের।

ছবিঃ ইন্দ্রাক্ষীর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here