নিজস্ব সংবাদদাতা,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
করোনার কোপে পড়লো ৯০ বছরের পুরোনো ফলহারিণী আদি কালীপূজা আয়োজন। কলেরার প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুকের আস্তাড়া গ্রামে বাংলা ১৩৩৭ সাল থেকে জৈষ্ঠ্য মাসে ফলহারিণী অমাবস্যা তিথিতে কালীপুজো শুরু হয়েছিল। পূজা শুরুর পাশাপাশি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রফুল্ল কুমার মজুমদার ও শশী ভূষণ চৌধুরী।
৯০ বছর ধরে চলে আসছে এই কালীপুজো। সময়ের সাথে সাথে বেড়েছে পূজা জাঁকজমক। পূজাকে কেন্দ্র করে বসতো পাঁচদিনের মেলা। আস্তাড়ার প্রতিটি বাড়িতে আসতেন আত্মীয় স্বজনরা। প্রতিবছর মায়ের পূজায় প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ টি ছাগ বলিদান হতো।
আরও পড়ুনঃ শিলচরে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন
এখানে মন্দিরে সারা বছর দেবীমূর্তি রাখা হয় না, পূজার পাঁচ থেকে সাত দিন পর প্রতিমা নিরঞ্জন দেওয়া হয়। মানুষের বিশ্বাস, এখানকার দেবী খুব জাগ্রত।তাই বলিদানের পাশাপাশি মানত হিসেবে দেবীর অর্ঘ্য হিসেবে ফলমূল, মাখাসন্দেশ, টাকার মালা,বাতাসার মালা, শাড়ি, চাঁদমালা,রূপার মুকুট, বেলপাতা, সোনার টিপ ইত্যাদি দিতেন অনেকেই।
শুধু আস্তাড়া বা তমলুকের আশেপাশের এলাকা থেকে নয় ভক্তরা সমেবেত হতেন বালিচক, কাঁথি, হলদিয়া, ডেবরা সহ দূরদূরান্ত থেকেও। কিন্তু এবার করোনা বদলে দিয়েছে গোটা চিত্রনাট্যকে। সরকারি নির্দেশে মেনেই এবার সর্বসম্মতিক্রমে পূজা কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিমা পূজা হবে না। তাই এবার ফলহারিণী অমাবস্যার দিন বৃহস্পতিবার শুধু ঘট পূজা হবে মাত্র।
আরও পড়ুনঃ করোনা যুদ্ধে জয়ী রায়গঞ্জের ৩ জন
পুজো হবে কয়েকজনকে নিয়ে সামাজিক দুরত্ব মেনেই। পূরো পূজা চত্বরে সৃজন নামক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে স্যানিটাইজেশন করা হবে পূজার দিন। কোন ব্রতী বা ভক্ত মন্দিরে পূজা দিতে পারবেন না। এবারে কোনো বলিদানও হবে না। এভাবে পুজো হওয়ায় গ্রামের আট থেকে আশি সবার মন খারাপ। এবারে আসবে না কোনো আত্মীয়স্বজনরাও। গ্রামের বয়োঃজ্যেষ্ঠরা মনে করতে পারছেন না আগে কখনও এভাবে পূজা হয়েছে কিনা।
পূজা কমিটির সম্পাদক তপন মজুমদার ও সদস্য সাধন মজুমদার জানান, মহামারীর কারণে তাঁরা এবারে ঘটে পূজা করতে বাধ্য হচ্ছেন। পাশাপাশি এও জানান, তাঁরা কমিটির পক্ষ থেকে মাইক প্রচার করে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আশেপাশের সব এলাকায় জানিয়ে দিয়েছেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584