দিল্লির আক্রান্তের সঙ্গে দেখা করেও ট্রেনে ফিরে আসে নদিয়ার পরিবার

0
334

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও বেপরোয়া মনোভাব দেখানোর মাসুল দিতে হল নদিয়ার তেহট্টের পরিবারকে। শুধু নিজেদের পরিবারকেই নন, চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়ে তারা আতঙ্কিত করেছেন তাদের সঙ্গে সফরকারী যাত্রীদের। আর সামগ্রিক বিষয়টি সামনে আসার পর চূড়ান্ত হতাশ স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। তাঁদের দাবি, মানুষ যদি ন্যূনতম সাবধানবাণীকেও গুরুত্ব না দেন, তাহলে ফলাফল এখন থেকে আরও খারাপ হলেও কিছু করার থাকবে না।

family of noida back to home after visit corona patient in delhi | newsfront.co
প্রতীকী চিত্র। চিত্র সৌজন্যঃ হিন্দুস্তান টাইমস

সংক্রামিত সকলকেই বেলেঘাটা আইডিতে নিয়ে আসা হয়েছে। রবিবার তাঁদের রাজারহাটের চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট সেকেন্ড ক্যাম্পাসে ভর্তি করানো হতে পারে। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, ১৬ই মার্চ পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দিল্লি গিয়েছিল ওই পরিবার। ২৭ বছরের তরুণীর সম্পর্কে ভাই ওই যুবক লন্ডন থেকে ফিরে ওই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। দিল্লিতেও নদিয়ার পরিবারের আত্মীয়দের বাড়ি রয়েছে। দিল্লিতে অনুষ্ঠানেরই পর অসুস্থ হয়ে পড়েন লন্ডন ফেরত ওই যুবক। তাঁকে রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁর নমুনা পরীক্ষায় মেলে নভেল করোনা ভাইরাস। গোটা পরিবারকে গৃহ পর্যবেক্ষণে থাকার নির্দেশ দেয় দিল্লির স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু পরিস্থিতি বাড়াবাড়ি হয়ে গেলে আর ফিরতে পারবেন না বুঝতে পেরে ওই নির্দেশ না মেনেই তারা দিল্লি থেকে বেরিয়ে আসেন।

ওই তরুণী তখনও জানতেন না, তার শরীরেও বাসা বেঁধেছে মারণ করোনা ভাইরাস। ১৯শে মার্চ সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে নিউ দিল্লি-শিয়ালদহ রাজধানী এক্সপ্রেসে ওঠেন সকলে। ২০ মার্চ সাড়ে ১০ টা নাগাদ শিয়ালদহ পৌঁছান। সেখান থেকে লালগোলা প্যাসেঞ্জার করে পৌঁছে যান নদিয়ার তেহট্টে। সেখান থেকে অটোয় করে বাড়ি এসে নামেন। শুধু তাই নয়, কাউকে কিছু না জানিয়ে পরের দিন তেহট্টেও একটি অনুষ্ঠানে সামিল হন সকলে। আর এর ফলেই ওই দুই ট্রেন যাত্রীরা সহ প্রচুর স্থানীয় মানুষও আক্রান্ত হতে পারেন বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তারা।

আরও পড়ুনঃ যাদবপুরবাসীদের পাশে সাংসদ মিমি

জানা গিয়েছে, ২৩শে মার্চ সকালে আচমকা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন ২৭ বছরের এক মহিলা। স্থানীয় হাসপাতালে গেলে সন্দেহ হওয়ায় সেখানকার চিকিৎসকরা যোগাযোগ করেন স্বাস্থ্য ভবন ও বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। সেখানে তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তার পরেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই সমস্ত তথ্য জানা যায়। শুক্রবার নভেল করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হদিশ মেলে রিপোর্টে। একজন ছাড়া বাকিদের উপসর্গও দেখা যায়নি।

অর্থাৎ সংক্রমিত ব্যাক্তির সংস্পর্শে আসার পর রাজধানী, লালগোলা এমনকী অটোতেও ওঠেন তাঁরা। আর এতেই প্রচুর মানুষের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন। ইতিমধ্যেই তেহট্টের ২০ জনকে পর্যবেক্ষণে রাখলেও রাজধানী এক্সপ্রেস ও লালগোলার বহু যাত্রী সংক্রমিত হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

নিজেদের অজান্তেই তাঁদের মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারেন অন্যরাও। স্বাস্থ্য অধিকর্তা প্রশাসন অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘দিল্লি থেকে বিষয়টা আমাদের একবার জানানো হলে খুব ভালো হতো। এদের আটকে নজরদারি করতে পারতাম।পরিবারটিকে আমাদের আর বলার কিছু নেই।’

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here