ছেলের চিকিৎসায় বিক্রি হয়ে গেছে বসত বাড়ির একাংশ, সাহায্য প্রত্যাশী পিতা

0
95

নিজস্ব সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ারঃ

ranjit | newsfront.co
রঞ্জিত সরকার।নিজস্ব চিত্র

ফালাকাটা ব্লকের জটেশ্বর ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত পূর্ব হেদায়েত নগর গ্রামের বছর ২৪-শের যুবক রঞ্জিত সরকার গত এক মাস ধরে শয্যাশায়ী। পরিবারের হাল ধরতে তাকে পড়াশুনা পাট চুকিয়ে অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে ছুটতে হয় অনেক আগেই।আর সেই অর্থের অভাবে বর্তমানে ছেলের চিকিৎসার জন্য পেশায় কৃষক বাবা রুপেশ সরকার একমাত্র সম্বল ভিটেমাটির একাংশও বিক্রি করে দিয়েছেন। কিন্তু এতেও কিছু হয়নি। চিকিৎসকরা ছেলেকে পাটনা নিয়ে যেতে বলেছেন। এজন্য দরকার প্রচুর টাকা । কিন্তু এতগুলি টাকা কিভাবে জোগাড় হবে তা ভেবেই নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন অসহায় দম্পতি রুপেশ সরকার ও উষা সরকার।

father and mother of ranjit | newsfront.co
রঞ্জিতের বাবা-মা।নিজস্ব চিত্র

বর্তমানে অর্থের অভাবে তাঁরা কার্যত বিনা চিকিৎসায় ছেলেকে বাড়িতে ফেলে রাখতে বাধ্য হয়েছেন। ফলে দিনে দিনে রোগটি আরও জটিল আকার নিচ্ছে। দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে রঞ্জিত। তা দেখে নিরুপায় বাবা রুপেশ সরকার এখন ছেলের চিকিৎসার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে সাহায্যের আবেদন করছেন তিনি ।

ranjit 2 | newsfront.co
অসহায়ভাবে যাপিত হচ্ছে জীবন।নিজস্ব চিত্র

রুপেশ সরকার বলেন, “আমি যতটা পেরেছি ছেলের চিকিৎসার জন্য করেছি। ছেলেকে নিয়ে প্ৰথমে শিলিগুড়ি সহ বহু জায়গায় গিয়েছি। চিকিৎসাও করিয়েছি। নিজের শেষ সম্বল ভিটের একাংশও বিক্রি করে দিয়েছি। কিন্তু ছেলে সুস্থ হয়নি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ছেলেকে নিয়ে পাটনা যেতে। তার জন্য প্রচুর টাকা খরচ হতে পারে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। আমি খুব সাধারণ কৃষক কোন ভাবে কোনওমতে সংসার চালাই। তাও দু’বেলা খাবার সবসময় জোটে না। এই অবস্থায় আমি কীভাবে এতটাকা জোগাড় করব। তাই সাহায্যের জন্য সব জায়গাতেই ঘুরছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কিছুই পাইনি। এখন কীভাবে ছেলেকে বাঁচাব তা ভেবেই আমাদের ঘুম উড়ে গিয়েছে।”

prescription of ranjit | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত একমাস আগে অর্থাৎ জুলাই মাসে রঞ্জিত জয়গাঁতে কাজ করতে গিয়ে চার তলা ছাদের উপর থেকে পড়ে যায়। তার পর থেকেই কোমরের নিচের অংশ পুরোপুরি অকেজো (Pralyse) হয়ে যায়। কোন অনুভূতি নেই পায়ে। তারপর পরিবারের লোকজন তাকে শিলিগুড়ি ও পাটনায় নিয়ে গিয়ে কিছু দিন চিকিৎসা করায় তবে আর্থিক দিক থেকে অসহায় হয়ে পড়ায় ফিরতে হয় তাদের।

reports of ranjit | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

বর্তমানে সরকার পরিবারের সদস্য সংখ্যা চার জন রঞ্জিতের এক দাদা বাবা মা বোন ছিল তবে দুবছর আগেই বিয়ে হয়ে গেছে।

আরও পড়ুনঃ স্বেচ্ছামৃত্যুর ইচ্ছা প্রকাশকারী গৃহবধূর স্বামীকে দেখতে হাসপাতালে তৃণমূল জেলা সভাপতি

এখন রঞ্জিত দ্রুত সুস্থ হয়ে ফের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চায় সে। কিন্তু পরিবারের যা অবস্থা তাতে কী তার স্বপ্ন আদৌ পুরণ হবে? এর উত্তর রঞ্জিত বা তার পরিবারের কাছে নেই। এখন রঞ্জিতের ঠিকানা ওই ঘরের বিছানা। প্রতিদিনই বাঁচার চেষ্টায় দরজার দিকে আকুল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে যদি কেউ এসে তাকে সুস্থ করে তোলে। তাহলে সে নতুন করে জীবন শুরু করতে পারত।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here