একুশের বাংলা নির্বাচনে মহিলা ভোট গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর

0
82

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতাঃ

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে একের পর এক চমক শাসক- বিরোধী দুই শিবিরের। সকলেই বদলাচ্ছে রণনীতি। দলবদল থেকে নীতিবদল অব্যাহত। রণকৌশল বদল এনে ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রাখতে তাই এবার ‘বাংলার মেয়ে’কে নিয়েই ছক সাজাল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। ধর্ম-বর্ণ-জাতপাত নয়, এবারের মেরুকরণে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মহিলারা।

Female voters | newsfront.co
প্রতীকী চিত্র

২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রীপদে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এলেন, মহিলা হিসেবে তাঁর জনপ্রিয়তা তখন তুঙ্গে ছিল, এখনও রয়েছে সেই ‘মমতা ম্যাজিক’। তবে এই বিষয়টিকে এর আগে কখনও আলাদা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়নি। কিন্তু একুশের রণনীতিতে কিন্তু অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছেন ‘মহিলারাই’।

সম্প্রতি তৃণমূলের নতুন স্লোগান উঠেছে ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চায়’। ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে শাসক-বিরোধী দুই শিবিরেই নতুনত্ব খোঁজা চলছে। বিজেপি ‘দুর্গা ও সীতার’ অবমাননা করেছে এই অভিযোগ তুলে বাংলার মা-বোনেদের মনস্তত্ত্বে ছাপ ফেলার চেষ্টা করছে তৃণমূল, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব জানাচ্ছে মহিলা ভোটাররাই কিন্তু এবারের রণনীতির মূল ঘুঁটি হতে চলেছেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই জনপ্রিয়তায় রাশ টানতে মরিয়া বিজেপি, তেমনই তৃণমূল সুপ্রিমো নিজেকে ‘বাংলার মেয়ে’ প্রতিষ্ঠিত করেই সেই জনপ্রিয়তায় কুর্সি দখলের পরিকল্পনা জারি রাখছেন। শাসক শিবিরের এক কুশলীর কথায়, “এটা অনস্বীকার্য যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মহিলাদের মধ্যে খুব জনপ্রিয়। মোদীও কিন্তু চেষ্টা করছেন যে নানা প্রকল্প দিয়ে মহিলা ভোটারদের দৃষ্টি অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার।“

আরও পড়ুনঃ বাংলায় আসা কোনও তীর্থক্ষেত্রের থেকে কম নয়- বাঘেল

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের ৭.৩২ কোটি ভোটারের মধ্যে ৪৯ শতাংশই মহিলা। বিগত দুটি বিধানসভা নির্বাচনে, মহিলাদের ভোটদানের হার পুরুষদের তুলনায় বেশি ছিল। বিজেপি ও তৃণমূল দুই দলটি যে মহিলা ভোটারদের ‘টার্গেট’ করে ছক সাজানোর পরিকল্পনা করছে তা তাঁদের রাজনৈতিক বক্তব্যে স্পষ্ট।

একদিকে যেমন নরেন্দ্র মোদী বাংলায় ভোট প্রচারে এসে বলেছিলেন যে বাংলার মহিলা ও বোনেরা আর নিরাপদ নেই, তারই পাল্টা যুক্তি দিয়ে মমতার মন্তব্য, “আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই যে বিজেপি দলের মহিলারা কি নিরাপদ? তারা উত্তরপ্রদেশে নিরাপদ? তারা কি বিহারে নিরাপদ? তারা কি রাজস্থানে নিরাপদ? তারা কি মধ্যপ্রদেশে নিরাপদ? “

আরও পড়ুনঃ কেশপুরে বিজেপি বুথ সভাপতির বাড়িতে আগুন, চাঞ্চল্য

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গত সপ্তাহে জলপাইগুড়িতে এক সমাবেশে বলেন, “যারা মা দুর্গার পিতৃ পরিচয় খোঁজেন, মহিলাদের অপমান করেন, যাদের রাজ্যে উন্নাও ও হাথরাসের মতো ঘৃণ্য ঘটনা ঘটে থাকে, আপনারা কি তাদের বাংলায় আনতে চান? আমরা বাঙালিরা শুনিনি জয় শ্রী রাম, আমরা শুনেছি জয় সিয়া রাম। তারা বলে জয় শ্রী রাম। মানে সীতা নেই। তাদের রাজ্যে নারীরা শোষিত, প্রান্তিক এবং হুমকির মুখোমুখি হন।“

অর্থাৎ দু’দলেরই মিটিং, মিছিলে ঘুরে ফিরে আসছে সেই ‘মহিলা’ প্রসঙ্গ। এরই মাঝে কয়লাকাণ্ডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরাকে সিবিআই জেরা নিয়েও বাংলার মেয়ের প্রসঙ্গই এনেছেন মমতা। মহিলা আবেগকে ধরেই তিনি আক্রমণাত্মক সুরে বলেছেন, “আমাদের মা-বোনেরা কয়লা চোর? আপনার গায়ে ময়লা লেগে আছে।“ দেখা যাচ্ছে ‘ধরণ’ আলাদা হলেও মহিলা ভোটের দিকে তাকিয়ে রয়েছে সব পক্ষই।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here