সুদীপ পাল,বর্ধমানঃ
অতিথি নাকি দেবতা, কিন্তু সেই দেবতা যদি চেয়ে বসেন এক গ্লাস জল তাহলেই বিড়ম্বনায় পড়তেন গলসি ১ লোয়া- রামগোপালপুর এলাকার বাসিন্দারা। নিজেদেরই থাকত না পর্যাপ্ত পানীয়জল, তার উপর আবার অতিথি। দীর্ঘ চৌত্রিশ বছর ধরে পানীয় জল পাওয়া যায় না, যেটুকু পাওয়া যায় তা কষ্ট করে আনতে হয় এটাই যেন অলিখিত নিয়ম হয়েছিল এই গ্রামে। এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, প্রতি বছরই গরম কালে পানীয় জলের সংকট শুরু হয়। নেমে যায় জলের লেয়ার ফলে সব কলে জল থাকে না। বাধ্য হয়ে প্রায় এক কিলোমিটার বা তার বেশি হেটে গিয়ে অন্য পাড়া কখনো পাশের গ্রাম থেকে জল আনতে হত। স্থানীয় গৃহবধূ বলেন, ‘এমনও হয়েছে জল আনতে যাবার কেউ নেই দেখে অনিচ্ছা সত্ত্বেও পুকুরের জল ফুটিয়ে রান্না করেছি। এর মধ্যে বাড়িতে আত্মীয় এলে বিড়ম্বনায় পড়তাম। নিজেদেরই খাওয়ার জল নেই তো অতিথিদের কি দেবো। যতটা কম জল খরচ করা যায় সেইটুকুই করতাম।’
অবশেষে সেই দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান, পরিস্রুত পানীয় জল পাচ্ছে গলসি ১ লোয়া- রামগোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্রুত জল বাসিন্দাদের মধ্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। লোয়া-রামগোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ফজিলা বেগম বলেন, রাইপুর এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি জানান,এই পানীয় জল সরবরাহের খরচ হয়েছে পাঁচ লাখ টাকা। জলের কল কোথায় বসবে? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, রাইপুর গ্রামে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোট তিরিশটি পয়েন্ট থাকছে এবং গ্রামের মানুষ এতে অনেক উপকৃত হচ্ছে বলে তাঁর মত। এলাকাবাসী এই জল প্রকল্পে খুশি। তাঁদের বক্তব্য, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের এই সমস্যার সমাধান করেছে পঞ্চায়েত। এখন বাড়ির সামনেই কল। আর দূরে গিয়ে জল সংগ্রহ করতে হবে না আর পুকুরের জলকে ফুটিয়ে রান্না বা খাওয়ার কাজ করতে হবে না। জল সংকট থেকে মুক্তি ঘটেছে। আমরা খুশি।’ বলাবাহুল্য, পঞ্চায়েতের বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের উদ্যোগ যে তৃণমূলের ভোটে জেতার অন্যতম হাতিয়ার তা এককথায় স্বীকার করছে শাসক-বিরোধী দুই শিবিরই।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584