সিমা পুরকাইত,দক্ষিন ২৪ পরগনাঃ
কেউ ব্যস্ত মাছের সরঞ্জাম গোছাতে,কেউবা খাবার দাবার নিতে।কেউ ব্যস্ত গঙ্গামায়ের পূজা দিতে। এই সময়টা আসলে বোঝা যায় দক্ষিন সুন্দরবন ও সুন্দরবন লাগোয়া এলাকার মৎসজীবিদের উল্লাস।
বছরের এই কটা মাস সুকনো মুখে থাকেন মৎসজীবীরা।এবছর সময়ে প্রবেশ করেছে না বর্ষা।বায়ু ঘূর্নিঝড় কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।অনুকুল আবহাওয়ার দিকে অপেক্ষা করে জালে রুপলি ফসল পেতে ব্যস্ত হয়েছেন মৎসজীবীরা।
নাওয়া খাওয়া ভুলে ট্রালার নিয়ে মাঝ সমুদ্রে পারি দিতে তোরজোর দক্ষিন সুন্দরবনের মৎসজীবি মহলে।সময়ে বর্ষা প্রবেশ করলে মিলবে ইলিশ।চলতি বছরে জামাই ষষ্টিতে ধরা হয়নি খোকা ইলিশের।সেই নিরাশা নিয়ে জলে নামতে হচ্ছে মৎসজীবিদের।
হতাশার মুখ নিয়ে বুক পেতেছেন খুচরা পাইকারী ব্যবসায়ী থেকে মৎসজীবিরা।সরকারি ঘোষনা অনুযায়ী ৭ ই এপ্রিল থেকে ১৪ ই জুন পর্যন্ত মাছের প্রজননের সময় কাল।সে কারনে বঙ্গোপসাগরে থেকে মৎসজীবিদের মাছধরা নিষিদ্ধ।
আরও পড়ুনঃ পাজরায় শ্মশান রক্ষা কালী পুজোয় ভক্তদের ঢল
এই সময় টুকু দক্ষিন সুন্দরবনের নব্বই শতাংশ মৎসজীবীরাই জ্বাল আর ট্রলার সারিয়ে রুটি রুজির পথ বেছে নেন।কেউবা অন্য কোন কাজে জীবিকা বেছে নেন।
কিন্তু বর্ষা আগমনে চলে আসেন বহু মৎসজীবি।বর্ষাকালে মাছ ধরে সারা বছর জীবিকা নির্বাহ করেন রবিন,বাদল,বিপ্লবেরা।কাকদ্বীপের অক্ষয়নগর, দাসপাড়া জেলে পাড়ার,সাগরদ্বীপ,পাথরপ্রতিমা,বকখালি,নামখানার অধিকাংশ মৎসজীবি রুপালি শস্য ইলিশ ধরতে গিয়ে অনায়াসে প্রান হারাতে হয়েছে।
তাতেও কোন সংসয় না দেখে সংসারে আয় বাড়াতে প্রতি বছরই অকুতোভয় করে বঙ্গোপসাগরে মরন ফাঁদে পাড়ি দেয় তারা।সময় বদলেছে,বদলেছে এরাজ্যর হালহাকিকত।কিন্তু বদলায়নি মৎসজীবিদের অভাব অনোটন।
সামান্য আয় নিয়ে এবারেও পাড়ি দিচ্ছে রুপালি শস্য জ্বালে ধরতে।খোকা ধরতে ট্রলারে করে শেষমেস জল খাবার, মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে হারবার ছেড়ে পাড়ি দিচ্ছে হাজার হাজার জেলেরা।দক্ষিন ২৪ পরগনা ক্যানিং ,কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবার মহকুমা এলাকার মৎসজীবিরা।
গত বছরের সময় মতো বর্ষা এসেছিল বঙ্গোপসাগরের।ফলে খোকা ইলিশের আমদানি মিলেছে অন্যান্য বছরের থেকে।ক্ষতির মুখ থেকে কিছুটা হলেও লাভ পেয়েছেন ট্রলার ব্যবসায়ী থেকে ছোট বড় আরবদাররা। কিন্তু এবছর বর্ষার বাঁধা হয়েছে বায়ু ঘূর্ণিঝড়।
৪৮ ঘন্টার মধ্য বৃষ্টি পাত হওয়ার সম্ভবনা থাকলেও।বর্ষা আসা নিয়ে সংশয় হয়েছে। মাছ ধরতে এক একবার ১৫ জুন মৎসজীবিদের নিয়ে ট্রলার প্রতি খরচ হয় দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা। ইলিশ ধরা না পরলে ক্ষতির মুখে পরেন ব্যবসায়ীরা।
যার ব্যতিক্রম বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে চলে আসছে। খোকা ইলিশের চাহিদা দেখা দিলেও যোগানের অভাবে দামের পরিমানে ইলিশ খাওয়া থেকে বঞ্চিত থেকেছেন ইলিশ প্রেমিরা।তাদের মতো ইলিশের স্বাদ ভুলতে বসেছে দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলার মানুষরা। খরচ ভুলে সামান্য আয়ে মরনকে বরন করে ইলিশ ধরতে ছুটে যেতে হয় মৎসজীবিদের ।
দিনের পর দিন ছোট ছোট ইলিশ ধরে বিক্রি করায় মাছের পরিমান অনেক কম হয়েছে বলে দাবি অনেকের।আজ প্রশাসন সক্রিয়।সক্রিয় অ্যাসোশিয়েসন গুলিও। বন্ধ হয়েছে ছোট ছোট ইলিশ ধরা।তার জেরে এবারে মাছে ভাতে বাঙালিদের পাতে পরবে বড় ইলিশ ।
বর্ষায় রুপলি শস্য ধরতে গঙ্গা দেবির পূজা অর্চনায় শাখে ফুঁ দিয়ে বেড়িয়ে পরছে হাজার হাজার মৎসজীবিরা।আর দেরি নয়।ট্রলারে ভর্তি খোকাকে ধরতে বুক ভরা আসা নিয়ে চলেছে সুন্দরবনের মৎসজীবীরা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584