নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতাঃ
প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত অবস্থা ছিলই তার মধ্যে বেশ কিছু ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার ফলে প্রায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণ বঙ্গের ছয় জেলায়। প্রায় ২.৫ লক্ষ মানুষকে সরানো হয়েছে প্লাবিত এলাকাগুলি থেকে, বায়ুসেনার হেলিকপ্টাররের সাহায্যে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে।

গত সপ্তাহের টানা বৃষ্টির ফলে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার নদীগুলোতে জলস্তর বাড়তে থাকে। তারমধ্যে ডিভিসি-সহ একাধিক ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া হয় ফলত পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে । ডিভিসির এক উচ্চ পদস্থ কর্তা জানান, গত শুক্রবার ও শনিবার ডিভিসি এলাকা এবং ঝাড়খণ্ডে অতি ভারী বৃষ্টির পরে তেনুঘাট বাঁধ থেকে প্রচুর জল ছেড়েছে ঝাড়খন্ড সরকার। তার জেরে শনিবার ১.১৪ লাখ কিউসেক জল ছাড়তে বাধ্য হয় ডিভিসি। পরে তা কমিয়ে ৮০,০০০ কিউসেকে করা হয়েছে।
খানাকুল, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল-সহ একাধিক জায়গায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দ্বারকেশ্বর নদের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে খানাকুল-১ ব্লকের ধান্যগোড়ি, ঠাকুরানিচকে। জলমগ্ন আরামবাগ মহকুমার কমপক্ষে ৯০ টি গ্রাম। পূর্ব বর্ধমানের রায়নার একাংশ প্লাবিত হয়েছে। খেজুরহাটি, খণ্ডঘোষের কয়েক কিলোমিটার চাষের জমি প্লাবিত। একই পরিস্থিতি পূর্ব মেদিনীপুরেও। কংসাবতী ব্যারেজের জল ছাড়ার ফলে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া, তমলুক, নন্দকুমার এবং ময়না ব্লকে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ, বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে সেখানে। ময়না এবং পাঁশকুড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হ কাঁসাই নদীর বাঁধ। একই অবস্থা হাওড়ার উদয়নারায়পুরেও, জলের তলায় চলে গিয়েছে প্রায় ৮০ টি গ্রাম।
আরও পড়ুনঃ ১০০ ফ্লেক্সে ত্রিপুরা সাজিয়ে দলনেতাকে স্বাগত হুগলির কুন্তল ঘোষের
সোমবার হুগলির খানাকুলে উদ্ধারকাজ চালিয়ে ১০১ বছরের এক বৃদ্ধা-সহ ৩১ জনকে উদ্ধার করেছে বায়ুসেনা। তাঁরা একটি একতলা বাড়ির ছাদে দু’দিন আটকে ছিলেন। উদ্ধারের পর ওই বৃদ্ধা জানান এত জল তিনি কখনো দেখেননি। গত ৪৮ ঘণ্টায় কিছু খাওয়াও হয়নি। আরামবাগে হেলিকপ্টার নামার পরেই তাঁদের খেতে দেওয়া হয়।
সোমবার ঘাটালের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে যান পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
আরও পড়ুনঃ বহরমপুর জজ কোর্ট চত্বরে বিক্ষোভ আসামিদের পরিবারের সদস্যদের
তিনি জানিয়েছেন, কয়েকটি এলাকা পুরোপুরি জলের তলায় চলে গিয়েছে। হাজার-হাজার মানুষ আটকে আছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছেন তিনি। এবং পরিদর্শনের পর মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট দেবেন তিনি। রাজ্য সরকারের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে হুগলি, হাওড়া, দুই বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে ২.৫ লাখ মানুষকে সুরক্ষিত স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এক লাখেরও বেশি ত্রিপল, ১,০০০ মেট্রিক টন চাল, পানীয় জল এবং পোশাক ইত্যাদি বিতরণ করা হয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584