ফণী’র বৃষ্টি আম চাষিদের কাছে আশীর্বাদ

0
81

শ্যামল রায়,কালনাঃ

foni strom is the Blessing of farmer
বাগানের আম । নিজস্ব চিত্র

ফণী’র জেরে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হলেও আম চাষিদের ক্ষতি হয়নি বলে জানা গেল কৃষি দপ্তর সূত্রে।এই বৃষ্টিতে আমের পক্ষে ভালো,এমনটাই জানা গেছে কালনা মহকুমার বিভিন্ন এলাকার আম চাষিদের থেকে।
সবুজ পাতার ফাঁক দিয়ে গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে আমের কড়ালি।

বৃষ্টির স্পর্শে সতেজ কড়ালি বেড়ে উঠছে দ্রুত।এখন পর্যন্ত রোগ-বালাইও তেমন দেখা যাচ্ছে না।তাই এবার আম নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছেন চাষিরা।ভয়ের আবহ নিয়েই ফাঁড়া কেটে ফণী’র দাপটে সেভাবে কোনও ক্ষয়ক্ষতি না হলেও,বরং লাভের মুখ দেখতে চলেছেন আম চাষিরা।বলছেন, গাছে যে পরিমাণ আম এসেছে,তার ২০ শতাংশও শেষ পর্যন্ত টিকলে উৎপাদনের নতুন রেকর্ড গড়ে ব্যাপক লাভবান হবেন তারা।আম পারার ঠিক কয়েক দিনে আগেই ফণী’র জল ধারা হাসি ফোটাবে আম চাষিদের মুখে।

আরও পড়ুনঃ বৃষ্টির জলের তলায় ক্ষেতের ধান,মাথায় হাত চাষির

এমনটাই জানাচ্ছে উদ্যান পালন দফতর।পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী সম্প্রতি উন্নত প্রজাতির আম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত হয়েছে।সেই এলাকাতেই শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত হালকা ঝড় ও বৃষ্টিপাত হয়েছে।তাতেই আমের রং ও গাছের বোটা মজবুত হবে বলে মনে করছে উদ্যান পালন দফতর।কমবে পোকার উপদ্রবও।ফলে অন্য বারের তুলনায় দেশ ও বিদেশের বাজারে পূর্বস্থলীর আম আরও ভালো নাম পাবে।

কালনা মহকুমা উদ্যান পালন দফতরে সূত্রে জানা গিয়েছে,কালনা ও পূর্বস্থলী মিলিয়ে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে।গত বছর দেশের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় গিয়ে পূর্বস্থলীর আম বিশেষ ভাবে প্রশংসা পেয়েছে।আমের রং ও স্বাদ দুই মুগ্ধ করেছে বিভিন্ন আম উৎসবের বিচারকদের।মিলেছে তার শংসাপত্রও।তারপর থেকেই ভাল বাজার পেয়েছে পূর্বস্থলীর আম।

ক্ষোদ উদ্যান পালন দফতরই সেই আমকে দেশের বাজারে তুলে ধরতে নানা প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।এমন সময় ফণী বর্ধমানের উপর দিয়ে যাওয়ার ফলে যে বৃষ্টিপাত হয়েছে তাঁতে সেই সমস্ত ফলন্ত আমের পক্ষে খুবই উপকার হবে বলে দাবি উদ্যান পালন দফতরের।

জানা গিয়েছে, আর পনেরো দিন পরেই গাছ থেকে আম পাড়া শুরু হবে।ঠিক সেই সময়ই আম গাছে বৃষ্টির দরকার হয়।যা দিয়েছে ফণী।বৃষ্টির ফলে, আমের বোটা মজবুত হবে যাতে সহজে ঝরে যাবে না আম।আবার জল পেয়ে আমের রং ও আরও আকৃষ্ট হবে।আর এরই মধ্যে আম গাছে ও আমে এক ধরণের সাদা পোকার
আক্রমণ হয় তা থেকেও বাঁচবে আমের ফলন।

ফলে সব দিক থেকে আমের লাভই দেখছেন চাষিরাও।কালনা মহকুমা উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিক পলাশ সাঁতরা বলেন,” আমের ক্ষেত্রে কোনও ক্ষয়খতির খবর নেই। যা বৃষ্টি হয়েছে তাঁতে সম্পূর্ণ টাই ভালো।” পূর্বস্থলী আম চাষিদের মধ্যে সুধীর দাস বলেন,” ফণী নিয়ে খুবই আতঙ্কে ছিলাম। ঝড়ে আম গাছের ডাল ভেঙ্গে ও আম পড়ে অনেক ক্ষতি হয়।তা হয়নি। আশা করছি এই বছর আমাদের আম আরও অনেক জায়গায় ভাল নাম পাবে।”

ব্যবসায়ীরা আরো জানান, বাগানের আম এখনো পুরোপুরি পাকেনি আরো কিছুদিন পরে সম্পূর্ণ আমা পাকা শুরু করবে। তবে এখন বাজারে আমের চাহিদা থাকায় আমের ভালো দামও পাওয়া যাচ্ছে। জেলার বড় ও ছোট মিলে বহু সংখ্যক আমবাগান গড়ে উঠেছে। এবার আম বাগানগুলোতে প্রচুর পরিমাণ মুকুল ধরেছিল।

আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবং আমবাগান গুলোর পরিচর্যা ঠিকমতো হওয়ায় আমের অধিক ফলন দেখা যাচ্ছে।আম পাকা পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আম চাষিরা এবার আম চাষ করে লাভবান হতে পারবে।বাগান মালিকরা জানালেন, আমের ফলন ভালো হওয়ায় আম ছোট থাকতেই ব্যবসায়ীরা আমবাগান কিনে নিয়েছে এবং এখনো অনেক ব্যবসায়ী আম পাকার আগেই বাগানগুলো কিনে নিচ্ছে লাভের আশায়।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here