শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
বিভিন্ন কারণে রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার আগে রাজ্যে সকলের কাছে ডিজিটাল রেশন কার্ড পৌঁছে দেওয়া যায়নি। কিন্তু জরুরি পরিস্থিতিতে তারা যাতে রেশন পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হন, তার জন্য ফুড কুপন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই ফুড কুপনেরও জালিয়াতি হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
তাই রাজ্যের সব মানুষকে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে খাদ্য দফতর রাজ্যের আরও অন্তত ৬৭ লক্ষ মানুষকে ডিজিটাল রেশন কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে কলকাতায় কত শতাংশ মানুষের সত্যিই বিনামূল্যে রেশনের প্রয়োজন রয়েছে, তা জানতে পুরসভার তরফে সমীক্ষা করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মত আগামী এক বছর রেশন গ্রাহকরা বিনামূল্যেই রেশনের চাল-গম পাবেন বলে জানানো হয়েছিল। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, অনেকের কাছে কাগজের পুরোনো রেশন কার্ড রয়ে যাওয়ায় আর ডিজিটাল কার্ড না-থাকায় রেশন পাচ্ছিলেন না।
আরও পড়ুনঃ ফেসবুক, ইউটিউবে ভরসা রেখেই ২১ জুলাই ‘ভার্চুয়াল সভা’ পার করার লক্ষ্য তৃণমূলের
করোনা পরিস্থিতিতে তাঁদের বিশেষ কুপন দেওয়া হয়েছিল। তবে তাঁদের অনেকেরই ডিজিটাল কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা রয়েছে। ওই সব গ্রাহকদের পাকাপাকি ভাবে ডিজিটাল কার্ড দেওয়া হবে। সে জন্য ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে নির্দিষ্ট আবেদনের ফর্ম পূরণ করে খাদ্য দফতরে পাঠাতে হবে ব্লক আধিকারিকদের। সমস্ত কাগজপত্র খতিয়ে দেখে ১৫ আগস্ট থেকে কার্ড বিলি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে বিনামূল্যে রেশন যাতে শহরের প্রকৃত গরিব মানুষের হাতেই পৌঁছয়, তার জন্য এবার প্রশাসনিক নির্দেশে সমীক্ষার সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা। এতে শহরের আর্থসামাজিক চিত্রের পাশাপাশি কার প্রয়োজন আছে এবং কার নেই, সে চিত্রও পরিষ্কার হয়ে যাবে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় অনেকে মৃত ব্যক্তির নাম করে রেশন তোলেন। সেই কারণে বাড়ির সদস্য সংখ্যার প্রকৃত তথ্য জোগাড় করে রাখবে পুরসভা আধিকারিকরা। এতে রেশন বন্টনেও স্বচ্ছতা বজায় থাকবে।
আরও পড়ুনঃ ভার্চুয়াল শুনানির জন্য উন্নতমানের ১০টি ভিস্যুয়াল ক্যামেরা কিনছে হাইকোর্ট
কারা এই সমীক্ষার কাজ করবেন? জানা গিয়েছে, পুরসভার অধীনে যে সব স্কুল রয়েছে, সেই সব স্কুলের প্রায় ৫০০ শিক্ষক ও শিক্ষিকারাই বাড়ি বাড়ি গিয়েই তাঁরা এই সমীক্ষার কাজ করবেন। তবে এই করোনার আবহে সেই কাজ আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে যেমন সন্দেহ রয়েছে ঠিক তেমনি পুর স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষিকারাও এই পরিস্থিতিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষার কাজ করা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। তবে পুরসভার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শহরের বাসিন্দাদের একাংশ।
আরও পড়ুনঃ কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে ইন্ডিগো, জানালেন সিইও রণজয় দত্ত
এই সমীক্ষার জন্য কলকাতা পুরসভা যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, তাতে সমীক্ষক হিসাবে শহরে পুরস্কুলগুলির মোট ৫৭৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার নাম রয়েছে। প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ১৫০টি করে বাড়িতে গিয়ে এই সমীক্ষার কাজ করতে হবে। স্কুল খুলে গেলে এই সমীক্ষা করার কাজে অসুবিধা হবে। এখনও পর্যন্ত স্কুল সব বন্ধ রয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারাও বাড়িতে বসে রয়েছেন। তাই এটাই সমীক্ষার কাজ করার উপযুক্ত সময়।
যদিও করোনার সময়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে এই সনীক্ষার বিপক্ষে অনেকেই। পুরসভা সূত্রে খবর, প্রয়োজনে ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সমীক্ষার কাজ নিরাপদে করানোর জন্য উপযুক্ত পোশাক, স্যানিটাইজার, গ্লাভস, মাস্ক, ফেসশিল্ড এই সব কিছু দেওয়া হতে পারে। কিন্তু সমীক্ষার কাজ অবশ্যই চালানো হবে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584