নিজস্ব সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ারঃ
এবার মানুষকে ছেড়ে দিয়ে কি পশুদের শরীরকেই বাঁচতে চলেছে করোনা। যদিও WHO-‘হু’ জানিয়েছে যে এই মারণ ভাইরাস কোন মতেই পশুদের শরীরে থাকতে পারে না। কিন্তু এমনই ঘটনার সাক্ষি থাকলো আমেরিকার নিউইয়ার্ক।
জানা গেছে, এবার নিউইয়ার্কে ডোরাকাটার শরীরে ধরা পড়েছে “করোনা”,আর যার জেরেই উদ্বেগে রয়েছেন উত্তরের বনকর্তারা। এদিন জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের দক্ষিন খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পূনর্বাসন কেন্দ্রে রয়েছে একমাত্র ডোরাকাটা বাঘ ‘রাজা’। এই অবস্থায় কেমন আছে ‘রাজা।’
আরও পড়ুনঃ করোনার মধ্যেও বাড়ছে ডেঙ্গি আতংক, চিন্তায় রায়গঞ্জবাসী
তবে বনকর্তারা জানিয়েছেন, ভালো আছে রাজা, শুধু তাই নয় এ যেন একেবারে অমরত্য লাভের পথে এগিয়ে যাওয়া! ২৫ বছর পার করে ফেললো জলদাপাড়ার দক্ষিন খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পূনর্বাসন কেন্দ্রের সবেধন নীলমনি রয়াল বেঙ্গল টাইগার এই ‘রাজা’।
২০০৫ সালে অলিম্পিক ও নটরাজ বিখ্যাত এই দুই সার্কাস থেকে ১৯ টি রয়াল বেঙ্গল টাইগারকে এই ব্যাঘ্র পূনর্বাসন কেন্দ্রে আনা হয়েছিল। তবে তাদের কেউ এখন আর এই পৃথিবীতে নেই। ২০০৮ সালে সুন্দরবনের ঝাড়খালি জঙ্গল থেকে বুনো বাঘ এই রাজাকে নিয়ে আসা হয়েছিল, দক্ষিন খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পূনর্বাসন কেন্দ্রে।
কিন্তু আজও এখানে, রাজা রয়েছে রাজার হালেই। রীতিমতো বেঁচে থাকার দিক থেকে রেকর্ড করতে চলেছে রাজা। যদিও বন্য প্রান বিশেষজ্ঞদের মতে, বুনো বাঘ সাধারনত ১৫ থেকে ১৬ বছর বেঁচে থাকে। কিন্তু রাজার ক্ষেত্রে এ পুরো ব্যতিক্রম । আর রাজার এই বেঁচে থাকা নিয়ে রাজ্য বন দফতরে রীতিমতো শোরগোল পরে গেছে।
আরও পড়ুনঃ সংক্রমণ এড়াতে আদালতে গভীর রাত পর্যন্ত চললো অভিযুক্তদের বিশেষ শুনানি
আসলে দক্ষিন খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পূনর্বাসন কেন্দ্রে এই রাজাকে রাখা হয় একেবারে অতিথি আপ্যায়নে।জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান সূত্রে জানা গেছে, রাজকীয় ভাবেই বেঁচে আছে রাজা। খাঁচার পাশাপাশি রাজার ঘোরাফেরা করার জন্য, তার খাঁচার পাশে তারের জালি দিয়ে ঘেরা জঙ্গল মেশানো বাগানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানেই রাজা, রাজার মতো রাজকীয় ভাবে ঘুরে বেড়ায়। বললে হবে, তিনি রয়্যাল বেঙ্গল বলে কথা।
খাবারের পাতে কিন্তু রাজা মুরগির মাংস মুখে তোলে না। দৈনিক তার জন্য চাই গবাদিপশুর কলিজার তাজা মাংস। তাই তার মেনুতে রোজের দশ কেজি তাজা মাংস চাই। এমনকি স্নান না করলে রাজার চলে না। প্রতিদিনই তাকে স্নান করতেই হবে।
তবে সপ্তাহে একটি দিন তথা বৃহস্পতিবার তাকে আমিষ খাবার দেওয়া হয় না । তাই সেদিন সে খালি গ্লুকোজের জল খেয়েই থাকে।এখানে শুধু খাবার আর জল খেয়েই থেমে থাকে না সে। নিয়ম করে চলে চিকিৎসকের কথা মত প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র।
তবে সব মিলিয়ে সকলের আদরের রাজা যথেষ্ট ভালোই আছে। তবে আজও রাজার হুঙ্কারে ফালাকাটার দক্ষিণ খয়েরবাড়ি গ্রামের আশপাশ থরথর করে কেঁপে উঠে। যদিও বনদফতরের বিশেষজ্ঞদের মতে, বন্য পরিবেশে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার সাধারণত ১৮-১৯ বছরের বেশি বাঁচে না। কিন্তু একটানা ২৫ বছর কোনও বাঘের বেঁচে থাকা বিরল ঘটনা”।
এর পাশাপাশি জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডি এফ ও কুমার বিমল বলেন, “ আমরা সব সময় স্প্রে করি। এই সময় করোনা সতর্কতার কারনে সতর্ক হয়েছি আমরাও। আর সেই কারণেই রাজাকে বার্তি নজরদারিতে রাখা হয়েছে।”তবে বলা যেতেই পারে দক্ষিন খয়েরবাড়ির গর্ব রাজা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584