হাতির আক্রমণ রুখতে তৎপর বনদফতর

0
49

নিজস্ব সংবাদদাতা,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
হাতির আক্রমণে যাতে কোনও প্রাণহানি বা ফসলের ক্ষয়ক্ষতি কম হয় তার জন্য হাতিকে জঙ্গলে আটকে রাখার কথা বলে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বনকর্মীদের এই ভাবে ধমক দেওয়ার পর কি ভাবে জঙ্গলের মধ্যে হাতি আটকে রাখা যায় তার জন্য বিভিন্ন কর্মসুচী গ্রহন করেছে বনদফতর। যদিও বনদফতরের দাবি অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর সব চেয়ে বেশি দিন জঙ্গলের মধ্যে আটকে রাখতে পেরেছে দলমার দলকে।

নিজস্ব চিত্র

যার ফলে গত বছরের তুলনায় এবছর প্রাণহানি বা ফসলের ক্ষয়ক্ষতি সেভাবে হয়নি ঝাড়গ্রাম বনবিভাগে কিন্তু মেদিনীপুর ডিভিশন এবং রুপনারায়ন ডিভিশনে চলতি বছরে দলমার দল খুব বেশি দিন থাকেনি।বছরের বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন অংশে। যার ফলে এবার দলমা দলের হানায় ঝাড়গ্রাম জেলায় প্রান হানির ঘটনা গত বছরের তুলনায় বেশি হয়েছে।তবে এবছর হাতি গ্রামে ঢুকে মানুষকে তাড়া করে মারেনি। যদিও বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে দলমা হাতি গ্রামে ঢুকে দিনে দুপুরে মানুষকে তাড়া করে মেরেছে এমন ঘটনা খুবেই কম রয়েছে।বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জঙ্গলে কাঠ,পাতা কুড়াতে গিয়ে বা অন্ধকারে হাতির সামনে পড়েই মৃত্যু গুলি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে বনদফতর সূত্রে।জানা গিয়েছে জেলা জুড়ে পনেরো জনের মধ্যে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে হাতির সামনে পড়ে।বনদফতরের পক্ষ থেকে হাতির উপর নজর রাখার জন্য ম্যাসেজ পদ্ধতি চালু হয়েছে।প্রতিদিন স্থানীয় বনসুরক্ষা কমিটির লোকজন ম্যাসেজের মাধ্যমে বনদফতরের সংশ্লিষ্ট ব্লকের বনাধিকারিকদের জানাচ্ছেন হাতির অবস্থান।আর তা জেনে বনকর্মীরা হাতি গুলির উপর নজরদারি করছেন।বনদফতের কাছে প্রতিদিন এইভাবে জেলার হাতিদের উপস্থিতি সম্পর্কে খুটি নাটি তথ্য পৌছে যাচ্ছে।

পাশাপাশি বনদফতরের পক্ষ থেকে টানা সচেতনতামূলক প্রচার কর্মসূচি চলছে। রাতে,সন্ধ্যার সময়,ভোরের সময় জঙ্গল এলাকার রাস্তায় না যাওয়া,হাতি দেখলে তাকে উত্যক্ত না করে কৌশলে সেখান থেকে চলে এসে খবর দেওয়া সহ বিভিন্ন রকম কর্মসূচি চলছে।বিভিন্ন সামজিক অনুষ্ঠানেও সচেতনতা মূলক ফ্ল্যেক্স,ব্যানার দিচ্ছে বনদফতর।বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে  গত কয়েক বছরের মধ্যে এ বছরই জঙ্গল এলাকায় সব থেকে বেশি দিন দলমা হাতির দলকে আটকে রাখতে পেরেছিল বনদফতর। বনদফর সূত্রে জানা গিয়েছে ২০১৬ তে জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত ২৫ দিন,২০১৭তে মার্চ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ২৮ দিন এবং ২০১৮তে এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ১২০ দিন দলমা দলের হাতিকে জঙ্গলে আটকে রেখে ছিল। এছাড়া হাতির করিডর হিসেবে পরিচিত রুট মযূরঝর্না এলাকায় প্রায় ৪৫ কিমি ট্রঞ্চ কেটে হাতিকে আটকানো গিয়েছিল কিন্তু বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলার অন্তঃরাজ্য বর্ডার রয়েছে একশো কিমির বেশি।অত্যন্ত চতুর হাতির দল ছোট দলে ভাগ হয়ে জঙ্গল ছেড়ে ঢুকে পড়ছে।যদিও বনদফতর স্থানীয় মানুষ জনের সাহায্যে যোগাযোগ রেখে হাতির গতিবিধির উপর নজর রাখছে। ঝাড়গ্রাম বনদফতরের ডিওফও বাসবরাজ হোলেইচ্ছি বলেন“ আমরা হাতির দলের উপর সর্বদা নজর রাখছি। কোথায় কখন হাতিরা রয়েছে খবর পাওয়া মাত্রই নজরদারি বাড়াচ্ছি। মানুষকে সচেতন করার প্রক্রিয়াও চলছে।” উল্লেখ্য গত নভেম্বর মাসের ২৬ তারিখ মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়গ্রামের জেলা শাসকের অফিস ঘরে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন। সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনদফতরকে কড়া ভাষায় ধমক দিয়ে বলছিলেন হাতিকে জঙ্গলের মধ্যে আটকে রাখতে হবে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here