নিজস্ব সংবাদদাতা, হুগলিঃ
কোভিড-১৯-এর দাপটে নাজেহাল গোটা বিশ্ব। ভারতেও থাবা বসিয়েছে এই ভাইরাস। করোনার তীক্ষ্ণ নজর পড়েছে হুগলিতেও। একের পর এক প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে এই মারণ ভাইরাস। গত সোমবার কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় চন্দননগরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দেবদত্তা রায়ের। এরপরই গতকাল করোনা সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হয় চন্দননগরের বাসিন্দা সৌমি সাহা’র। এবার করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল শ্রীরামপুর পুরসভার বিদায়ী বোর্ডের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা বর্তমান প্রশাসক বোর্ডের সদস্য পিনাকী ভট্টাচার্য-এর।
বুধবার বেলা ১১টা ৫ মিনিট নাগাদ বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় পিনাকীবাবুর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। জানা যায়, গত ১৭ জুন বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতার শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপরই তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে পিনাকীবাবুর স্ত্রী ও পুত্রও কোভিডে আক্রান্ত হন।
তাঁরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও পিনাকীবাবুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। দিন কয়েক আগে কলকাতার অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল পিনাকীবাবুকে। এরপরই বুধবার জীবনযুদ্ধে হেরে গেলেন শ্রীরামপুর পুরসভার বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর পিনাকী ভট্টাচার্য।
আরও পড়ুনঃ থানা ঘেরাও ঘিরে ফের উত্তেজনা কোচবিহারে
করোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে জারি হয়েছে লকডাউন। গৃহবন্দিই হল এই মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একমাত্র অস্ত্র। তাই সরকারি নির্দেশিকা মেনে ঘরের মধ্যেই নিজেদেরকে আবদ্ধ রেখেছিলেন সকলে। কিন্তু সেই সময় নিজেকে গৃহবন্দি রাখেননি পিনাকী ভট্টাচার্য। দুঃস্থদের পাশে দাঁড়াতে বারবার দৌড়ে গিয়েছেন। অসহায়দের হাতে পৌঁছে দিয়েছেন ত্রাণ। সেই সব ভাল কাজের ফাঁকে অজান্তেই তাঁর শরীরে থাবা বসায় করোনা ভাইরাস।
আরও পড়ুনঃ বিধায়ক হত্যায় ধৃত নিলয়কে আদালতে পেশ সিআইডি- র
একজন সৎ রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন। দু’বারের কাউন্সিলর পিনাকীবাবু ২০১৫ সালে পুর নির্বাচনে শ্রীরামপুর পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। এলাকার মানুষের কাছে তিনি গুন্ডাদা নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন। রাজা রামমোহন রায়ের মাতুল বংশের একজন ছিলেন তিনি। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
অন্যদিকে, করোনা আক্রান্ত হয়েছেন পুরসভার কর আদায় বিভাগের এক কর্মী। তাঁকে শ্রীরামপুরের শ্রমজীবী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই বিভাগের আরও বেশ কয়েকজনকে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। এই সংক্রমণ ধরা পড়তেই আজ ১৫ জুলাই থেকে আগামী ২১ জুলাই পর্যন্ত শ্রীরামপুর পুরসভা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুরসভা কর্তৃপক্ষ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584