সিমা পুরকাইত, দক্ষিণ ২৪ পরগণাঃ
কৃষ্ণেন্দু ঘোষ,অলকেশ গায়েন,সুপর্ণা কণ্ঠ, তরুণ হালদার– এই চার সহকর্মী এখন সুন্দরবন জুড়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে ছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে সবটাই বিনা পয়সায়। নিজেদের গাঁটের পয়সা খরচ করে প্রচার শুরু করেছেন প্রত্যন্ত এলাকায়।
ছাত্রীদের সুস্থ শরীরের পাশাপাশি রোগমুক্ত সমাজ, অশুচি, কুসংস্কার দুরীকরণেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা। সুন্দরবনের জয়নগর ,কুলতলি ব্লকে এমন অভিনব উদ্যোগ নিয়ে মানুষের পাশে রয়েছেন বিদ্যালয় পরিদর্শক কৃষ্ণেন্দু ঘোষ। তারই হাত ধরে চার সরকারি কর্মচারি পথ চলছেন স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার নিয়ে।
আরও পড়ুনঃ বাংলা গদ্য সাহিত্যচর্চার নবদিগন্তের স্বপ্নসাঝি ফেসবুক গ্রুপের ‘অণুবীক্ষণ’ গল্প সংকলন
প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক অলোকেশ গায়েন; সুপর্না কন্ঠা, কাউন্সিলর; এবং সরকারি কর্মচারী তরুণ হালদার। এরা সবাই এগিয়ে এসেছেন এই কাজে। পেশাগত দিক দিয়ে সরকারি কর্মচারী হলেও এদের জীবনের অন্যতম লক্ষ্য স্যানেটারি ন্যাপকিন ব্যবহার নিয়ে।
প্রত্যন্ত সুন্দরবনের ছাত্রীদের ঋতুস্রাবের কুসংস্কার থেকে মুক্ত করা এদের লক্ষ্য। জয়নগর, কুলতলি দুটি ব্লকের ৫০টি স্কুলে নিজেদের পয়সা খরচ করে স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রচার শুরু করেন কৃষ্ণেন্দু ঘোষ। কৃষ্ণেন্দু বাবু ৩৯ বছরে তাক লাগিয়ে দিয়েছে গোটা সুন্দরবন জুড়ে।
আরও পড়ুনঃ নথি ছাড়াই নাগরিকত্ব আগত বাংলাদেশী হিন্দুদের, প্রতিশ্রুতি সায়ন্তনের
প্রথম জীবনে কলকাতা পুলিশের এসআই ,পরে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে কর্মরত ছিলেন। আবার সেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে হাইস্কুল টিচার এবং ২০১১ সালের পর তিনি বিদ্যালয় পরিদর্শক হিসাবে কাজ করেছেন।
চাকরি জীবন শেষ হলে ৩৯ বছরের কৃষ্ণেন্দু ঘোষের সঙ্গে হাত মেলান ব্লক অ্যাকাউট্যান্ট অন্বেষা, সরকারি কর্মচারী তরুণ হালদার, প্রাইমারি শিক্ষক অলোকেশ গায়েন এবং কাউন্সিলর সুপর্ণা কন্ঠা। প্রতিদিনের চাকুরিজীবন বাদে যেটুকু সময় তারা পান, সেই আস্বাদ মেটান স্কুলে স্কুলে গিয়ে।
প্রতিটি স্কুলে ১০ থেকে ১৫ বছর ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে তাদেরকে বোঝান, যাতে তারা স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে পারে। বিস্তীর্ণ এলাকায় এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়ান বিদ্যালয় পরিদর্শক কৃষ্ণেন্দু বাবু।
স্যানিটারি ন্যাপকিনের উপর কাজ করার মূল লক্ষ্য তারই ছোট বোনের কাছ থেকে পাওয়া। পরিবারের ঋতুস্রাব ঘিরে যে কুসংস্কার, আজ অনেকটাই তদারকি করতে পেরেছেন সেটা। পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন সমাজ গড়তে এমন অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন সুন্দরবনের এই চার সরকারি কর্মচারী যা সুন্দরবনের প্রতিটি মানুষের কাছে এক নজির হয়ে উঠেছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584