নিজস্ব সংবাদদাতা, পূর্ব মেদিনীপুরঃ
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরাতে ট্রলিব্যাগের মধ্যে মহিলার মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায়, অবশেষে আট দিনের মাথায় কিনারা করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ।
গত নয় মার্চ, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা থানা এলাকার হোসেনপুরে ক্যালভাটের নীচ থেকে উদ্ধার হয়েছিল ট্রলিব্যাগ বন্দি এক মহিলার মৃতদেহ।পুলিশ সেই দেহ উদ্ধারের পর তদন্তে নেমে এক রিক্সাচালক ও মহিলা সহ মোট চারজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশ।
আরও পড়ুনঃ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আগ্নেয়াস্ত্র সহ পুলিশের জালে দুই ব্যক্তি
অন্যদিকে এই ঘটনায় আটক করা হয়েছে এক বারো বছরের কিশোরীকেও। জানা গেছে, ধৃতদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত সৌরভ দে কে দমদম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মৌসুমী সী সৌরভের দ্বিতীয় প্রেমিকা তাকেও দমদম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নারায়ন সী মৌসুমীর বাবা ও রিক্সা চালক রমাকান্ত দাস এদের সোমবার কাঁথি আদালতে তোলা হয়েছে। সেখানে বিচারক তাদেরকে দশ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
এই নিয়ে পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখার্জি এদিন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, “দমদমের বেদিয়া পাড়া নতুন বাজারে একটি ভাড়াবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সৌরভ ও তার দ্বিতীয় প্রেমিকা মৌমিতা সী কে। এরপর ওদের জেরা করে বাকি দুজনকে গ্রেফতার করে এগরার বড় নিহারী থেকে”।
এই খুনের পেছনে আরও দুজন জড়িত রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার পর তথ্য উৎঘাটন হবে আশাবাদী পুলিশ সুপার সহ পুলিশের তদন্তকারী দল।সূত্রের খবর, এই ঘটনার পেছনে চাঞ্চল্যকর তথ্য রয়েছে, যা ত্রিকোণ প্রেমের পাশাপাশি রোমহর্ষক ঘটনা বা বিকৃত মস্তিষ্কের ঘটনা রয়েছে বলে মনে করছেন এলাকার মানুষজন।
প্রেমিক সৌরভ এগরার দ্বিতীয় প্রেমিকা কে সম্প্রতি বিয়ে করতে চেয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় প্রেমিকা মৌমিতা ও তার বাবা মা দাবি করেছিল প্রথম প্রেমিকা অনিতাকে প্রানে মেরে দেখাতে হবে তাদের। তবেই মৌমিতাকে বিয়ে করতে পারবে সে।
সেইমতো করে গত আট মার্চ দমদমের বেদিয়া পাড়া নতুন বাজারে সৌরভের ভাড়াবাড়িতে আরও দুজন পেশাদার খুনীকে সঙ্গে নিয়ে সৌরভ নৃশংসভাবে খুন করে। তারপর ট্রলিব্যাগের মধ্যে পুরে মৌমিতার বাবাকে দেখানোর জন্য রাতে টাটা সুমো করে নিয়ে আসে এগরার বড় নিহারীতে।মৃতদেহটি মৌমিতার বাবা নারায়ণ সী, সহ মৌমিতাকে দেখানোর পর একটি রিক্সায় করে দু-কিমি দূরে ফেলে আসে ।
পরের দিন সেই দেহ পুলিশ উদ্ধার করে। তারপর তদন্তে নেমে এমন প্রাথমিক তথ্য উদঘাটন করে পুলিশ। অপরদিকে মৃতার স্বামীর পুলিশকে দাবী করেন, সৌরভ দমদমে অটোচালকের কাজ করার পাশাপাশি ছবি আঁকা শেখানোর টিউশন করত।
বাড়ীর পাশে এক আত্মীয়র বাড়ীতে যাতায়াত করে তার স্ত্রী অনিতাকে প্রেমের জালে আবদ্ধ করে। এমনকি দিঘা বেড়াতে এসে দ্বিতীয় প্রেমিকার সাথে পরিচয় ঘটে, আর সেখান থেকেই ত্রিকোণ প্রেমের সূত্রপাত হয় বলে অনুমান পুলিশের।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584