শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
ছট পুজো করার জন্য শহরজুড়ে একাধিক জলাশয়ে ব্যবস্থা করে দিয়েছে পুরসভা। কিন্তু গঙ্গাসাগর মেলা হয় একটি জায়গাতেই। তাই সেখানে জনসমাগম ঠেকাতে শেষ পর্যন্ত ভার্চুয়াল পদ্ধতির সাহায্য নিল রাজ্য প্রশাসন। এবার বাড়িতে বসে গঙ্গাস্নান করতে পারবেন পুণ্যার্থীরা।
বৃহস্পতিবার নবান্নের বৈঠকে জানা গেছে , এবার চালু করা হচ্ছে , ‘ ই – গঙ্গাসাগর মেলা ২০২১ ‘। এই মেলাতে এবার সশরীরে না পৌঁছেও করা যাবে ই – স্নান । এ জন্য একটি অ্যাপ চালু করতে চলেছে সরকার।
এই অ্যাপের মাধ্যমে বুক করলে , বাড়িতেই পৌঁছে যাবে গঙ্গাসাগরের পবিত্র জল। ওই অ্যাপের মাধ্যমে দেখাও যাবে মেলা। নবান্ন সূত্রের খবর , কোভিড পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগরে গেলে বিপুল সমাগমে করোনা সংক্রমণের ভয় বহুগুণ বেড়ে যাবে। তাই অ্যাপের মাধ্যমে অর্ডার করে একই জলে স্নান করে পুণ্যার্থীরা পুণ্য অর্জন করতে পারবেন। সেইসঙ্গে ভিড়ও অনেক কম হবে মেলায়।
আরও পড়ুনঃ ছটপুজোর শুভেচ্ছা জানিয়ে জোট বেঁধে গঙ্গায় না যাওয়ার জন্য ভিডিও মারফত আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর
গঙ্গাসাগর মেলার গাইড লাইন ঠিক করতে বৃহস্পতিবার নবান্নে আয়ােজিত হয়েছিল একটি ভার্চুয়াল বৈঠক। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় – সহ অন্যান্য শীর্ষ আধিকারিকরা । গঙ্গাসাগর মেলার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত দফতরের আধিকারিকরাও ছিলেন বৈঠকে।
উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রশাসনিক কর্তারা। এছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনা , হাওড়া – সহ বেশ কিছু জেলার আধিকারিকরা ছিলেন এদিনের বৈঠকে। দূরের পুণ্যার্থী কে ভার্চুয়াল পদ্ধতির সুবিধা দেয়া ছাড়াও কাছাকাছি যারা মেলায় আসবেন তাদের ক্ষেত্রে কি নিয়ম মানতে হবে তাও এদের বৈঠকে চূড়ান্ত করা হয়।
আরও পড়ুনঃ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য তিন শর্ত দিলেন শুভেন্দু অধিকারী
এবার মেলার বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে ৬১ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা। গত বছর ছিল ৩৯ কোটি ৩০ লক্ষ। বলা হয়েছে,৫ জানুয়ারি থেকেই ভলান্টিয়ার , এনডিআরএফ , পুলিশ , কোস্ট গার্ড- সব রকমের নিরাপত্তারক্ষীদের মােতায়েন করা শুরু হবে । ড্রোন – ক্যামেরার মাধ্যমে মনিটরিং করা হবে গােটা মেলা । নিরাপত্তার সঙ্গে কোনও আপস নয় ।
সেই সঙ্গে , কোনও পুণ্যার্থীর যদি মেলায় এসে কোভিডের উপসর্গ ধরা পড়ে , তার জন্য আইসােলেশন ও টেস্টের ব্যবস্থা রয়েছে। গঙ্গাসাগর মেলা চত্বরে যে অস্থায়ী ছাউনি দেওয়া ঘর ও থাকার জায়গা তৈরি হয় কর্মী ও সাংবাদিকদের জন্য, সেগুলি বানানাের সময়ে সােশ্যাল ডিসটেন্স মেনটেন করতে হবে । সেগুলি স্যানিটাইজ করতে হবে প্রতিনিয়ত। সকলকে মাস্ক পরতে হবে।
পাশাপাশি , মেলায় যােগাযােগে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, পরিবহণ দফতরকে তা দেখতে হবে । গঙ্গাসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত সমস্ত রাস্তাও দ্রুত সারাই করে ফেলতে হবে। এবারে মেলায় আরও বাড়তি তিনটি ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স ও দুটি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স রাখা হচ্ছে। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে নিয়ে পৌঁছে দেওয়া হবে হাসপাতালে।
এছাড়া কোনও পুণ্যার্থী গঙ্গাসাগর মেলায় কোনও দুর্ঘটনার জেরে মারা গেলে ৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাবে তার পরিবার। সমস্ত গাইড লাইন চূড়ান্ত করতে এবং কোথাও কোনো অসুবিধা হলে ফের বৈঠকে বসবেন নবান্ন প্রশাসনিক কর্তারা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584