নিজস্ব সংবাদদাতা,আরামবাগ,১১ জুলাইঃ
টিউশন পড়ে বাড়ি ফেরার সময় সাইকেলের পিছনে লরির ধাক্কায় ওই লরিরই পিছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় এক ছাত্রীর।
সঙ্গে থাকা দুই বান্ধবী পড়ে গিয়ে জখম হয়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে পাঠায়।
ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজিত জনতা ঘাতক লরিটিকে আটকে ভাঙচুর চালায়।পরে লরির চালক ও অপর এক কর্মীকে নামিয়ে বেধড়ক গণপিটুনি দেয়।
এর পরেই তারা পথ অবরোধে সামিল হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে।উত্তেজিত জনতা পুলিশকে ঘিরেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। এর পরেই ফের উত্তেজিত জনতা পুলিশের সামনেই লরিটিতে আগুন লাগিয়ে দেয়। ঘটনা টি ঘটেছে, গোঘাটের কামারপুকুর কলেজ মোড় বাঁকে ।
পুলিশ জানিয়েছে,মৃতা ঐ ছাত্রীর নাম অর্পিতা পাল(১৬)। তার বাড়ি ওই এলাকার আনুড়ে। সে আনুড় উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণীর কলা বিভাগের ছাত্রী। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিনকার মত ঐ ছাত্রী টিউশন পড়ার জন্য কামারপুকুর চটিতে যায়। এদিন দশটা নাগাদ অর্পিতা এবং তার দুই বান্ধবী বাড়ি ফেরার সময় কামারপুকুর কলেজ মোড়ের কাছে একটি দশ চাকা লরি দ্রুতগতিতে সাইকেলের পিছনে ধাক্কা মারে। ফলে তার দুই বান্ধবী ছিটকে পড়ে এবং সে লরির চাকার পিছনে পড়ে পিষ্ট হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। রক্তে ভিজে যায় রাস্তা।
তার দুই বান্ধবীকে কামারপুকুর প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে, ঘটনার পর পরিস্থিতি বেসামাল হওয়ায় এলাকা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। পুলিশের সামনেই উত্তেজিত জনতা লরিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ আগুন নেভানোর চেষ্টা করলে বাধা দেয় উত্তেজিত জনতা। অসহায় হয়ে পড়ে গোঘাট থানার পুলিশ। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে লরিটি। খবর পেয়ে দমকল এর একটি ইঞ্জিন আসে এবং দমকলের কর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ।প্রায় দু ঘন্টা অবরুদ্ধ হয়ে যায় কামারপুকুর- জয়রামবাটি রুট। পরিস্থিতি সামাল দিতে আরামবাগের এসডিপিও কৃশানু রায় বিশাল পুলিশ ও র্যাফ বাহিনী নিয়ে এলাকায় হাজির হন। চলে দফায় দফায় পথ অবরোধ। বিক্ষোভ দেখানো হয় কামারপুকুর কলেজ মোড়, কামারপুকুর চটি এবং কামারপুকুর হাসপাতালেও। পুলিশও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দফায়-দফায় নির্বিচারে লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করা হয়। ঘন্টা দুয়েক পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
তবে এই ঘটনায় উঠে এসেছে কিছু প্রশ্ন।রাস্তা সম্প্রসারনের পর রাস্তা বেড়েছে নিজের মতো করে কিন্তু সেই কামারপুকুর কলেজমোড়ের ব্রিজ রয়ে গেছে সেই আগের মতই । শুধু একটি করে গাড়ি যাতায়াত করতে পারে ওই সরু ব্রিজ দিয়ে । তার উপর উঠে এসেছে কিছু অবৈধ নির্মাণের কথাও।প্রশাসনকে এলাকার মানুষের প্রশ্ন এই ব্রিজের সম্প্রসারন কবে হবে ?
তার উপর আজকের ঘটনায় পুলিশ নাকি গ্রেফতার করে কিছু নিরীহ মানুষদের । এ ব্যাপারে আনুড় গ্রামের বাসিন্দা অয়ন কেওরা জানিয়েছেন, “কেন রাস্তা-আলো হবে না ?? কেন পরিবহন ব্যবস্থা সুনির্দিষ্ট হবে না ? কেন সিগন্যাল হবে না ? কেন সিভিক পুলিশের দায়িত্ব থাকবে না ? কেন সিভিক পুলিশ মোবাইল ফোনে ব্যস্ত থাকবে ? কেন সাধারণ মানুষের উপর লাঠি চার্জ হলো ? কেন সাধারণ মানুষ গ্রেপ্তার হলো ? প্রশাসনকে জবাব দিতে হবে ?” স্হানীয় দের মতে, কামারপুকুরের এই জায়গায় রয়েছে স্কুল কলেজ । তা সত্ত্বেও নেই কোনো সুরক্ষা ।আজকের জনরোষ ছিল এতদিন ধরে জমে থাকা মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584