শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
রাজ্যে ঊর্ধ্বগামী করোনা সংক্রমণ এবং সুস্থতার হাত দ্রুত নিচের দিকে নামতে থাকলেও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে নবান্নে দাবি করলেন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। গত ২ সপ্তাহ ধরে টানা সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন রাজ্যবাসী অনেকেই। কিন্তু তাদের তাঁদের অভয় দিয়ে মুখ্যসচিবের দাবি, করোনা টেস্ট বাড়ানোর কারণে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এ নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হবেন না।
একই সঙ্গে এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা দাবি করেন, দৈনিক টেস্ট ২৫ হাজারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা আছে রাজ্যের। যত দ্রুত সম্ভব তত দ্রুত বেশি পরিমাণ আক্রান্তকে চিহ্নিত করাই এখন প্রধান লক্ষ্য। করোনা মোকাবিলায় পরিকাঠামোর কোনও ঘাটতি নেই। হোম আইসোলেশনের রোগীদের জন্যও একটি হেল্পলাইনের ঘোষণা করেন তিনি। নম্বরটি হল ১৮০০৩১৩৪৪৪২২২ নম্বরে গোটা রাজ্যের মানুষ ২৪ ঘণ্টা ফোন করতে পারেন। তবে অন্যান্য রোগীরাও এতে ফোন করতে পারবেন।
মুখ্যসচিব দাবি করেন, সঠিক তথ্যের অভাব এবং ভুল তথ্য ছড়ানোর ফলে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। আনলক পর্ব শুরু হওয়ার পর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নতুন করে শুরু হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই সংক্রমণের হার বেড়েছে। তবে সংক্রমণ যে গতিতে ছড়াচ্ছে, তার থেকে অনেক দ্রুত গতিতে রাজ্য সরকার রোগ মোকাবিলার পরিকাঠামো তৈরি করছে।
আরও পড়ুনঃ লক্ষ্য বিধানসভা নির্বাচন! যুবশক্তির সদস্যদের ১০টি পরিবারের দায়িত্ব নিতে আহ্বান অভিষেকের
গ্রামের তুলনায় মূলত শহরাঞ্চলে মানুষের গতিবিধির ফলে বাড়ছে সংক্রমণ। তাই এবার কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিকে একটি ক্লাস্টার হিসাবে দেখা হবে এবং ওই সব জেলার মধ্যে পরিকাঠামোগত আদান-প্রদান চলবে। এ জন্য স্বরাষ্ট্র সচিব সহ পদস্থ আধিকারিকদের দায়িত্বে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
একই সঙ্গে কনটেনমেন্ট এলাকাগুলিতে বিধি-নিষেধের কড়াকড়ি থাকলেও এখনই গোটা রাজ্যে সার্বিক লকডাউন করা হচ্ছে না বলে মুখ্যসচিব জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, বর্তমানে রাজ্যের প্রায় ১৫ হাজার কোভিড বেড রয়েছে। এখনও যথেষ্ট সংখ্যক বেড খালি রয়েছে বলে তাঁর দাবি। প্রতিদিন গড়ে ১০০ রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। তাঁর দাবি, পশ্চিমবঙ্গে এখনো হাসপাতালে করোনা রোগীর জন্য শয্যার অভাব শুরু হয়নি। কলকাতাতেই ১,৫০০ শয্যা ফাঁকা রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
তবে মোট আক্রান্তের ১৫ শতাংশ মৃদু উপসর্গ এবং ৭০ শতাংশ উপসর্গহীন। তাই কোভিড বেডের ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ কমাতে উপসর্গহীন এবং মৃদু উপসর্গ যুক্ত রোগীদের জন্য রাজ্য সরকার হোম আইসোলেশনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
তথ্য দিয়ে মুখ্যসচিব বলেন, এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে যে ১৪,৭০৯ জন করোনা রোগী রয়েছেন তার মধ্যে ১০,৫০০ জনের চিকিৎসা চলছে বাড়িতে, এরা উপসর্গহীন। যা মোট আক্রান্তের ৭০ শতাংশ। বাকিদের মধ্যে ২,২০০ জনের মৃদু সংক্রমণ রয়েছে। সামান্য গুরুতর সমস্যা রয়েছে ১,২৫০ জনের। আর ৬৬০ জনের অবস্থা গুরুতর। অর্থাৎ সামান্য গুরুতর ও গুরুতর মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গে করোনা রোগীর সংখ্যা হবে ১,৯০০। ১০ কোটি জনসংখ্যার রাজ্যে এই সংখ্যা নগন্য। পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যু হারও এখন অনেক কম, মাত্র ২.৭৬ শতাংশ। যা জাতীয় গড়ের প্রায় সমান। করোনা মহামারী রুখতে সর্বতোভাবে সক্রিয় রয়েছে রাজ্য প্রশাসন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584