নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতাঃ
মহারণ ২০২১-এ। দিন যত এগোচ্ছে তরজায় উত্তপ্ত বাংলার রাজনৈতিক ময়দান। বৃহস্পতিবার আরামবাগের জনসভায় বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জীর। সে তালিকা থেকে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা, দিলীপ ঘোষ, কেউই বাদ যাননি।
মমতা সরকারের ‘দুয়ারে দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচী চালু হতেই বিজেপি নতুন কর্মসূচি, ‘আর নয় অন্যায়’। ‘স্বাস্থ্যসাথী’ র সুবিধা কতজন রাজ্যবাসী পেয়েছেন, সরকারের কাছে সেই হিসেবও চান বিজেপির রাজ্য সভাপরি দিলীপ ঘোষ। তার পরিপ্রেক্ষিতেই অভিষেকের পরামর্শ, “দিলীপ ঘোষেদের উচিত স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়ে রাখা।”
আরও পড়ুনঃ ‘বিজেপির নেতাদের গাড়ির উপর আক্রমণ সাজানো ঘটনা হতে পারে’, মন্তব্য ব্রাত্য বসুর
ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জীর কথায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার নির্বাচনে জিতে ফিরলে বিজেপির ছোট বড় মাঝারি নেতারা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়বেন। তাঁদের চিকিৎসার দায়িত্ব তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নিতে হবে। তাই আগেই এই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়ে রাখুন। তিনি এও বলেন, নির্বাচনের ফল বেরোলে কুকুর যেমন খ্যাঁক খ্যাঁক করে কামড়াতে আসে, বিজেপিরও সেই অবস্থা হবে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন আরামবাগের জনসভা থেকে যা যা বললেন তার সারমর্ম হলো। জনসভা ঘিরে মানুষের মধ্যে যে উৎসাহ, উদ্দীপনা, তাতে মনে হচ্ছে নির্বাচন শেষে বিজয় মিছিল শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বদের উপর হামলার প্রতিবাদে বহরমপুরে পথ অবরোধ দলীয় কর্মীদের
সিপিএমের হার্মাদরা মোদী-শাহ-দিলীপ ঘোষের সাহায্য নিয়ে যদি তৃণমূলকে রাজনৈতিকভাবে পরাস্ত করবে ভেবে থাকে তাহলে ভুল করবে। তিনি অভিযোগ তোলেন, দিলীপ ঘোষেরা অর্থাৎ বিজেপি চাইছে ‘দুয়ারে সরকার’ বন্ধ করতে। তিনি বলেন, জেপি নাড্ডা দাবি করছেন যে তাঁরা ২০০-এর বেশি আসন পাবেন, কিন্তু হুগলী জেলায় খাতাও খুলতে পারবে না বিজেপি।
মমতা সরকারের কাজের খতিয়ান দিতে গিয়ে সাংসদ বলেন, শিক্ষা-স্বাস্থ্য-খাদ্য একমাত্র বাংলাতেই সম্পূর্ণভাবে বিনামূল্যে। দেশের আর কোনো রাজ্য এই দৃষ্টান্ত তৈরি করতে পারেনি। অভিষেক বিজেপির উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, মমতা সরকার তো ১০ বছরের রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেছে, সাত বছরে মোদী কী করেছে সেই রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করুক বিজেপি।
আরও পড়ুনঃ গণতন্ত্রকে গুঁড়িয়ে মানুষের কণ্ঠস্বর চাপা দেওয়ার মারাত্মক প্রবণতা চলছে, টুইট মুখ্যমন্ত্রীর
তাঁর দাবি, বিজেপি লড়াই করে ধর্ম নিয়ে, জাত নিয়ে আর তৃণমূল কংগ্রেসের লড়াই ভাত নিয়ে, বস্ত্র নিয়ে, কর্মসংস্থান নিয়ে। এই কারণেই, নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফিরে আসা শুধু সময়ের অপেক্ষা।
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কটাক্ষ করে অভিষেক ব্যানার্জীর মন্তব্য,বিজেপি নেতারা সব ফ্লাইটে করে আসেন, পাঁচতারা হোটেলে থাকার পর দলিতদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের ভোলানোর চেষ্টা করে রাতে আবার হোটেলে ফিরে এসে আবার মোচ্ছব করে, সাধারণ মানুষ বোকা নয়, তাঁরা সবই দেখেন, বোঝেন।
ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ এদিনের জনসভায় বলে, সাধারণ মানুষের ভালো হয় এমন কোনো বিষয় নিয়ে কখনো কেন্দ্রকে কোনো চিঠি দেয় না দিলীপ ঘোষেরা। কিন্তু নাড্ডার গাড়ি কেন ট্রাফিক সিগনালে আটকাল তা নিয়ে দিলীপ ঘোষরা স্বরাষ্টমন্ত্রকে চিঠি লেখেন। মজার মেজাজে তৃণমূল সাংসদের এদিনের মন্তব্য, ” যতই নাড়ো কলকাঠি, নবান্নে আবার হাওয়াই চটি”।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584