শিবশঙ্কর চ্যাটার্জ্জী, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ
করোনা নিয়ে সব রকম পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সমস্ত কর্মীর ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি বাতিল করল দক্ষিন দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। পাশাপাশি করোনার বিষয়ে জেলাবাসির যাবতীয় সাহায্যের জন্য ৭৪৭৭৭৮৬৪৯৭ ফোন নম্বর সহ হেল্প লাইন সহ ২৪ ঘন্টার কন্ট্রোল রুম খুলল জেলা স্বাস্থ দফতর।
এছাড়াও আগামী কাল থেকে জেলার সমস্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও হাসপাতালের বর্হিবিভাগে সর্দি কাশি জ্বর নিয়ে চিকিৎসার জন্য আসা রোগীদের জন্য আলাদা লাইনের মধ্যমে দেখানোর ব্যবস্থ্যার নির্দেশ দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সুত্রে আরও জানা গেছে যেহেতু ভারতে করোনার প্রকোপ এই বার তিন সপ্তাহে পড়তে চলেছে এবং এই ভাইরাসের প্রকোপ এই তিন সপ্তাহেই পিক ফর্ম হয় বলে অনান্য দেশের ক্ষেত্রে দেখা গেছে।সেদিকে লক্ষ রেখেই এদেশে যাতে ব্যাপক আকারে না ছড়ায়। তার জন্য আগে থেকেই সাবধানতা অবলম্বনের জন্য এই ব্যবস্থ্যা নেওয়ার নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
অপরদিকে নোভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সক্রমন ছড়িয়ে পড়া রুখতে আগামীকাল থেকে রাজ্যের পাশাপাশি দক্ষিন দিনাজপুর জেলাতেও সিনেমা হল গুলি বন্ধের নির্দেশ জারি করা হয়েছে। শুধু তাই নয় যাবতীয় সোসাল জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এমনকি বিয়ে বা ধর্মীয় কোন অনুষ্ঠান যাতে সিমিত সংখ্যক মানুষজনকে নিয়ে করা হয় তার জন্যও জনসাধারনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি এই অনুরোধের বা সরকারি নির্দেশের ইচ্ছে বা অনিচ্ছাতে কেউ বা কোন সংগঠন বা কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান উপেক্ষা করার চেষ্টা চালায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ধারার আইন মোতাবেক মামলায় আটক করার নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক, মহকুমা শাসক ও জেলা শাসকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এক সরকারি নির্দেশিকায়।
এদিকে গতকাল কুমারগঞ্জ থানার বটুনের সোমনাথ মার্ডি ও তার স্ত্রী জ্বর সর্দী কাশি নিয়ে ওই এলাকার বরাহার হাসপাতালে ভর্তি হয়। তারা সদ্য পুনে থেকে আসায় এলাকার বাসিন্দা ও তাদের মধ্যেও করোনা আক্রান্ত সন্দেহ হওয়ায় ভয়ের চোটে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়।
আর এরপরেই নানা রকম গুজব ছড়াতে থাকে তাদের রোগ নিয়ে। কেননা সোমনাথ মার্ডিকে বরাহর হাসপাতাল থেকে মাস্ক পড়িয়ে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসার ছবি সোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় আতংক ছড়ায়।
যদিও বালুরঘাট হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে দেখে ওই রোগের বিষয় পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়ে তিনি টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত বলে জানিয়ে দেওয়ায় সবাই হাফ ছেড়ে বাঁচে। যদিও তার রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হয়েছে শুধু টাইফয়েডের জন্য বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে।
এদিকে গতকাল সোসাল মিডিয়ায় করোনা নিয়ে মিথ্যে খবর প্রচার করার দায়ে কুশুমন্ডি থানার পুলিশ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অভিযোগের ভিত্তিতে আটক করে থানায় নিয়ে আসে আবগারি দফতরের কর্মী কবিরাজ সরকারকে।
পরে বেকায়দায় পড়ে আর কোনদিন এরকম গুজব ছড়ানো থেকে তিনি বিরত থাকবেন বলে ব্যাক্তিগত মুচলেকা দেওয়ায় স্বাস্থ্য দফতর থেকে তাকে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ যায় জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584